করোনা সর্দি-কাশির মতো ছড়াতে পারে শিশুরা

কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত শিশুদের ঘন ঘন জ্বর বা কাশি না-ও থাকতে পারে। ছবি: রয়টার্স
কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত শিশুদের ঘন ঘন জ্বর বা কাশি না-ও থাকতে পারে। ছবি: রয়টার্স

সাধারণ সর্দি-কাশির মতো শিশুরা সহজেই করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দিতে পারে। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের সাবেক অধ্যাপক উইলিয়াম হাসেলটিন এ কথা বলেছেন।

গতকাল সোমবার সিএনএনকে হাসেলটিন বলেন, যেকোনো ব্যক্তিকে এই ভাইরাসবাহী হিসেবে সন্দেহ করা যেতে পারে। এই ভাইরাসের কারণে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে। এই ভাইরাসে সংক্রমিত হলে সাধারণ সর্দি-কাশির মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এক শিশু থেকে অন্য শিশুর মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়তে পারে।

হাসেলটিন বলেন, কোভিড-১৯, সর্দি-কাশি ও শ্বাসতন্ত্রজনিত সব ধরনের রোগের ক্ষেত্রেই এভাবে সংক্রমণ হতে পারে। তিনি বলেন, নাসারন্ধ্রের মাধ্যমে এ ধরনের ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। তিনি সতর্ক করেছেন, শিশুরা অন্য কারও কাছ থেকে এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে অন্যদের সংক্রমিত করতে পারে। তাই শিশুদের অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে।

হাইসেলটিন বলেন, পাঁচ বছরের বেশি বয়সের শিশুরা অন্যদের উচ্চহারে সংক্রমিত করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এর আগে শিশুদের মধ্যে করোনার উপসর্গ নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই গবেষণায় চীন থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, শিশু রোগীদের (১৮ বছরের নিচে) ৭৩ শতাংশের জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টের লক্ষণ ছিল। অন্যদিকে প্রাপ্তবয়স্ক (১৮ থেকে ৬৪ বছর) রোগীদের ৯৩ শতাংশের এ লক্ষণ ছিল। আক্রান্ত রোগীদের ৫ দশমিক ৭ শতাংশ বা ১৪৭টি শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হয়, যা প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের তুলনায় কম। এই গবেষণার অন্তর্ভুক্ত শিশু রোগীর তিনজন মারা যায়। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১৪৭টি শিশুর মধ্যে ১৫টি শিশুকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়ার প্রয়োজন হয়।

চীনে ১৬ বছরের নিচে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ৪১ দশমিক ৫ শতাংশের ক্ষেত্রে জ্বর হয়েছে, ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশের কাশি ছিল এবং ১ দশমিক ৮ শতাংশকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য নিয়ে করা গবেষণায় দেখা গেছে, ১৮ বছরের নিচে শিশুদের মধ্যে কোভিড-১৯-এর প্রকোপ কম। তবে এই বয়সের মধ্যে অপেক্ষাকৃত বেশি ঝুঁকিতে একদম ছোট শিশুরা।

জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, এ পর্যন্ত বিশ্বে করোনার সংক্রমণের শিকার দুই কোটি পার হয়ে গেছে। বিশ্বের প্রায় সব জায়গাতেই এ ভাইরাসের বিস্তার ঘটেছে। এ পর্যন্ত করোনায় মৃত্যুবরণ করেছে ৭ লাখ ৩৩ হাজার ৮৪২ জন। আর কয়েক দিনের মধ্যেই মৃত মানুষের সংখ্যা সাড়ে ৭ লাখ পার হয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।