পশ্চিমবঙ্গে ৩২০০ বুথে ফের ভোট চায় বিরোধীরা

শাড়িতেও বিজেপির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নরেন্দ্র মোদি৷ মুম্বাইয়ে একটি দোকানে বিক্রয়কর্মী মোদির ছবিসংবলিত শাড়ি দেখাচ্ছেন ক্রেতাদের৷ গতকাল তোলা ছবি l রয়টার্স
শাড়িতেও বিজেপির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নরেন্দ্র মোদি৷ মুম্বাইয়ে একটি দোকানে বিক্রয়কর্মী মোদির ছবিসংবলিত শাড়ি দেখাচ্ছেন ক্রেতাদের৷ গতকাল তোলা ছবি l রয়টার্স

পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনের ভোটপর্ব শেষ হওয়ার দুদিন পরও বামফ্রন্ট, কংগ্রেস ও বিজেপি শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে হাজার হাজার বুথ দখল ও ভোট ডাকাতির অভিযোগে সোচ্চার৷ তাদের আরও ক্ষোভ নির্বাচন কমিশনের ওপর৷ তারা সব দেখেও নাদেখার ভান করেছে৷
ইতিমধ্যে বিরোধী দলগুলো নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে প্রায় তিন হাজার ২০০ বুথে আবার ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছে৷ পাশাপাশি বিরোধী দলগুলো রাজ্যে ও রাজ্যের বাইরে পশ্চিমবঙ্গে ‘ভোট প্রহসন’-এর অভিযোগে প্রচারে সোচ্চার হয়েছে৷ রাজধানী দিল্লির যন্তরমন্তরে বামপন্থীরা গতকাল বুধবার এক সমাবেশে পশ্চিমবঙ্গে ভোটে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলে৷
সমাবেশে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাত বলেন, রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসনের সক্রিয় সহযোগিতায় শাসক তৃণমূল কংগ্রেস তিন হাজারের বেশি বুথ দখল করে ছাপ্পা ভোট দিয়েছে, অথচ নির্বাচন কমিশন সব দেখেও নীরব৷ কলকাতায় প্রদেশ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, কমিশনের কাছে নির্দিষ্ট তথ্য ও সাক্ষ্যপ্রমাণ দিয়ে বলা হয়েছিল, ভোটে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে৷ নিয়মানুযায়ী সব তথ্যপ্রমাণ খুঁটিয়ে দেখার কথা স্ক্রুটিনি কমিটির৷ সেই কমিটির সুপারিশও নির্বাচন কমিশন অগ্রাহ্য করেছে৷
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দলীয় প্রার্থী রাহুল সিংহ বলেন, সব অভিযোগ কমিশনকে জানানোর পরেও সাড়া মেলেনি৷
এদিন নির্বাচন কমিশন জয়নগর, বসিরহাট ও বারাসতে দুটি করে মোট ছয়টি বুথে আবার ভোট গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে৷ অথচ গত সোমবার শেষ পর্বের ভোটে পশ্চিমবঙ্গের যে ১৭টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট হয়েছে, তার বেশির ভাগ জায়গাতেই ব্যাপক সন্ত্রাস, হিংসাত্মক কার্যকলাপ ও বুথ দখলের খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে৷ একাধিক টিভি চ্যালেনেই ধরা পড়েছে, বুথের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের লোক ঢুকে ভোটদাতারা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে কোন দলের প্রতীকের পাশে বোতাম টিপছেন, সেদিকে নজর রাখছেন৷ অনেক ক্ষেত্রে এমনও দেখা গিয়েছে যে তৃণমূলের কর্মীরা বুথে ভোটদাতাদের নির্দিষ্ট বোতাম টিপতে নির্দেশ দিচ্ছেন৷ গোটা ব্যাপারটাই চলছে নির্বাচন কমিশন নিযুক্ত প্রিসাইডিং কর্মকর্তার উপস্থিতিতেই৷ যে ছয়টি বুথে আগের ভোট বাতিল করে আবার ভোট গ্রহণের জন্য কমিশন নির্দেশ দিয়েছে, সেসব বুথেও এই কাণ্ড ঘটেছিল৷ কিন্তু দলগুলো প্রশ্ন তুলছে, যেখানে তিন হাজারের বেশি বুথে একই কাণ্ড ঘটানো হয়েছে, সে ক্ষেত্রে মাত্র ছয়টি বুথের ভোট বাতিলের নির্দেশ কেন?
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, সিপিএম নেতা ও যাদবপুরের দলীয় প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী প্রমুখ অনেকেই নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন৷ ভোটপর্বের শুরুতে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে এসে সুধীর কুমার রাকেশ দাবি করেছিলেন, ভোট নিয়ে কারচুপি ও বুথ দখল ঠেকাতে তাঁর বিশেষ দাওয়াই জানা আছে এবং তা তিনি প্রয়োগ করবেন৷ কিন্তু ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পরদিন মঙ্গলবার তিনি স্বীকার করেন, পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা তিনি আগে বুঝতে পারেননি৷