জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সেই অনুভূতি কেন হয়

জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণ
জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণ

মৃত্যুর কাছাকাছি থেকে ফিরে আসা মানুষের অভিজ্ঞতা থেকে জানা গেছে, সেই বিশেষ মুহূর্তে জীবনের অনেক স্মৃতি মনে পড়া, উজ্জ্বল সাদা আলো দেখা ও শরীরের বাইরে কিছু বোধ করার মতো অনুভূতি হয়। বিজ্ঞানীরা অনেক দিন ধরেই বলছেন, মস্তিষ্ক অস্বাভাবিক রকম উত্তেজিত হওয়ার কারণেই তা হয়। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা এটি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন বলে দাবি করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ওই গবেষকেরা দাবি করছেন, মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছালে মানুষের মস্তিষ্কের মধ্যে বিদ্যুৎ তরঙ্গায়িত হয়। মস্তিষ্ক উত্তেজিত হয়ে পড়ে। আর এ কারণে মানুষের সচেতনতা বেড়ে গিয়ে তারা অতিবাস্তব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়। এ গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশ করেছে বিজ্ঞান সাময়িকী প্রসিডিংস অব ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের জিমো বোরঝিজিনের নেতৃত্বে একদল গবেষক মৃত্যুর সম্মুখীন নয়টি ইঁদুরের ওপর গবেষণা করেন। ওই ইঁদুরগুলোর হূৎস্পন্দন বন্ধ হওয়ার ৩০ সেকেন্ড পর এদের মস্তিষ্কে গামা অসিলেশন দেখা যায়। গামা অসিলেশন হচ্ছে ২৫ থেকে ১০০ পর্যন্ত কম্পাঙ্কের তরঙ্গ, যা মস্তিষ্ককে উত্তেজিত করে এবং সচেতনতা বাড়িয়ে দেয়। ধারণা করা হয়, মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করতে এটি কাজ করে। গবেষণাগারের ইঁদুরগুলোর ক্ষেত্রে হূৎকম্পন বন্ধ হওয়ার পরপর মস্তিষ্কে বৈদ্যুতিক তরঙ্গের হার জীবিত অবস্থার চেয়ে বেশি দেখা যায়। বোরঝিজিন বলেন, অনেকে মনে করেন, ক্লিনিক্যালি মৃত্যু হলেই মানুষের মস্তিষ্কের কর্মকাণ্ড বন্ধ বা সীমিত হয়ে পড়ে, এটি ঠিক নয়; বরং সাময়িকভাবে জাগ্রত অবস্থার থেকে অনেক বেশি কার্যক্ষম হয়ে ওঠে মস্তিষ্ক। এই বাড়তি কার্যক্ষমতাই মনের চোখে অতীত স্মৃতি ফুটিয়ে তোলে। আর আলো দেখার বিষয়টি মানুষের উত্তেজিত মস্তিষ্কের দৃষ্টিসংশ্লিষ্ট অংশে সৃষ্টি হয়। বিবিসি।