'সব শিশুকে হত্যা করেছি, কী করব এখন'

‘অডিটোরিয়ামে থাকা সব শিশুকে আমরা হত্যা করেছি। আমরা কী করব এখন?’ মঙ্গলবার পাকিস্তানের পেশোয়ারে সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি স্কুলে এক হামলাকারী এভাবে ফোনে কথা বলেছেন। ফোনের ওপাশ থেকে আসা উত্তরটি ছিল, ‘সেনাবাহিনী না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করো। নিজেকে হত্যা করার আগে তাদেরকেও হত্যা কর।’
পাকিস্তানের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে দেশটির ডনের অনলাইনে আজ বৃহস্পতিবার এ খবর প্রকাশ করা হয়েছে। ওই নিরাপত্তা কর্মকর্তার ভাষ্য, এটা ছিল ওই স্কুলে হামলাকারীদের সঙ্গে হামলার নির্দেশদাতার শেষ ফোনালাপ।

গত মঙ্গলবার ওই স্কুলে পাকিস্তানি তালেবানের হামলায় ১৩২ শিশুসহ ১৪১ জন নিহত হয়। তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। টিটিপির মুখপাত্র খোরাসানি এ হামলাকে সম্প্রতি উত্তর ওয়াজিরিস্তানে তাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অভিযানের প্রতিশোধ বলে উল্লেখ করেছেন। এ নিয়ে সারা বিশ্বে নিন্দার ঝড় বইছে। পরদিন বুধবার থেকে পাকিস্তানে তিন দিনের শোক শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে এই ফোনালাপ প্রকাশ পেল।

গতকাল বুধবার এ কথোপকথনের রেকর্ড নিয়ে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান রাহিল শরিফ আফগানিস্তানের সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের দাবি, স্কুলে বর্বরোচিত হামলা চলার সময় হামলাকারী আবুজার ও তাঁর কমান্ডার ওমর আদিজাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। পেশোয়ার অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ জঙ্গি ওমর আদিজাই স্থানীয়ভাবে ওমর নারায়ে ওরফে ওমর খলিফা নামে পরিচিত।
রইল শুধু এক
নিরাপত্তা কর্মকরর্তারা জানান, গত মঙ্গলবারের ওই ফোন কলটি আফগানিস্তানের নানগ্রাহার প্রদেশের নাজিয়ান জেলা থেকে করা হয়েছে। তাই আফগান সরকারকেই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাঁরা আরও জানান, সাত সদস্যের একটি জঙ্গি দল স্কুলটিতে হামলা চালায়। এর মধ্যে পাঁচজন ছিলেন স্কুলের ভেতরে। বাকি দুজন বাইরে। হামলাকারীরা দেয়াল টপকে স্কুলের ভেতর ঢুকে অডিটারিয়ামে শিশুদের গুলি করে হত্যা করে। ওই সময় সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে শিশুদের পড়ানো হচ্ছিল।

এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, ‘হামলাকারীরা আগে থেকেই জানত কি না যে মঙ্গলবার অনেক শিশু ওই অডিটোরিয়ামে থাকবে। তবে এ ব্যাপারে আমরা এখনও কিছু জানি না। আমরা এ প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করছি।’