ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা সহ্য করা হবে না: মোদি

নরেন্দ্র মোদি
নরেন্দ্র মোদি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা সহ্য করা হবে না। সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। গতকাল সোমবার ভারতীয় বার্তা সংস্থা ইউএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন মোদি।
সাক্ষাৎকারে মোদি বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, এখনো বলছি—কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি বঞ্চনা এবং সহিংসতা একেবারেই সহ্য করবে না আমার সরকার।’ যারা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ায়, তাদের নিয়ন্ত্রণ করবেন কীভাবে, এ প্রশ্নের জবাবে মোদি বলেন, ভারতের সংবিধান প্রতিটি নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিয়েছে। তাই যারা সাম্প্রদায়িকতার ঘৃণা ছড়ায় তাদের সঙ্গে কোনো আপস করা হবে না।
নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার এক বছর পূর্তিতে এই সাক্ষাৎকার দিলেন। সাক্ষাৎকারে মোদিকে প্রশ্ন করা হয়, গত এক বছরে ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং তাদের প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা হলে সংঘ পরিবার এবং আপনার সরকারকে দায়ী করা হয়েছে। এমনকি কখনো কখনো আপনাকেও দায়ী করা হয়েছে। এর বিষয়ে কী বলবেন? জবাবে মোদি বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হলে তা নিন্দনীয়। আইন অনুযায়ী অবশ্যই সেসব অপরাধীকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। এ বিষয়ে আমার অবস্থান বেশ পরিষ্কার—সবার সঙ্গে, সবার উন্নয়ন (সব কা সাথ, সব কা বিকাশ)। জাতিধর্ম-নির্বিশেষে ভারতের ১২৫ কোটি মানুষের সবার পাশে আছি আমরা। সবার উন্নয়নের জন্যই আমরা কাজ করছি।’ বার্তা সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া অপর এক সাক্ষাৎকারেও মোদি এসব কথা বলেন।
সাক্ষাৎকারে ধর্ম, সাম্প্রদায়িকতা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি সহিংসতার মতো বিষয়ের পাশাপাশি মোদিকে দেশটিতে বহু বিতর্কিত ভূমি অধিগ্রহণ বিল নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। কংগ্রেসসহ ভারতের বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, ধনী শিল্পপতিদের স্বার্থ রক্ষার জন্যই এই বিল পাস করতে উঠেপড়ে লেগেছেন মোদি। এ বিলটি পাস হলে গরিব কৃষক সম্প্রদায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও তাদের অভিযোগ। সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে মোদি বলেন, ‘১২০ বছরের পুরোনো ভূমি অধিগ্রহণ বিল মাত্র ১২০ মিনিট আলোচনার পর গত সরকারের সময় সংশোধন করা হয়েছে। জনকল্যাণের কথা ভেবে আমরাও সেই সংশোধনীতে সম্মতি দিয়েছিলাম। পরে কিছু রাজ্যের আপত্তির কারণে সংশোধনী আনা হচ্ছে। ক্ষুদ্র রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে থেকে যে দেখবে সে-ই আমাদের এই সংশোধনীতে সম্মতি দেবে।’
কংগ্রেস মোদির সরকারকে ‘সুট-বুটে সরকার’ বলে আখ্যায়িত করেছে। এ বিষয়ে মোদি বলেন, ‘গত নির্বাচনে কংগ্রেস চরমভাবে হেরেছে। তারা ৫০টি আসনও পায়নি। সেই ক্ষোভ তারা এখনো ভুলতে পারেনি। তাদের পাপের জন্য জনগণ তাদের শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু তাদের কোনো শিক্ষা হয়নি। কংগ্রেস আসলে উন্নয়নের ঠিক উল্টো।’
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর মোদি বেশ কয়েকটি দেশ সফর করেন। তাঁর এই বিদেশ সফর নিয়েও বিরোধীরা সমালোচনায় মুখর হয়েছে। সেই সমালোচনা প্রসঙ্গে মোদি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক দেশে সবাই-ই সরকারের সমালোচনা করার অধিকার রাখে। আমরা এমন একটি বিশ্বে বাস করি, যেখানে একটি দেশ আরেকটির ওপর নির্ভরশীল। একক, বিচ্ছিন্ন ভারত টিকে থাকতে পারে না। ১৭ বছর ধরে ভারতের কোনো প্রধানমন্ত্রী নেপালে যাননি। এটা নিশ্চয়ই ভালো কোনো চিত্র নয়।’