প্রেসিডেন্ট হতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আপসে সু চি!

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) নতুন সরকারের কাঠামো কেমন হবে তা নিয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। সু চি যাতে প্রেসিডেন্ট হতে পারেন সে বিষয় নিয়েও তাঁরা চেষ্টা করছেন বলে এনএলডির দুই নেতা জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস-এ শুক্রবার এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
সেনাবাহিনীর সঙ্গে এনএলডির চলমান আলোচনার বিষয় এখনো অস্পষ্ট। এনএলডির নেতারাও এ নিয়ে যতটুকু বলছেন, তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে। তাঁদের ভাষায়, ‘এখন সময়টা খুব স্পর্শকাতর’। তবে মিয়ানমারের সরকারি সূত্র বলছে, আলোচনায় সু চিকে প্রেসিডেন্ট করার বিনিময়ে এনএলডি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদের জন্য সেনাবাহিনীকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে এনএলডি এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে আলোচনা চলছে বলে জানান মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের সাবেক পরিচালক উ জা তে। দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের সাবেক স্পিকার থুরা শোয়ে ম এই মধ্যস্থতাকারীদের একজন বলে জানা গেছে।
গত বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে এনএলডি বিপুল বিজয় পায়। এর ফলে দেশটির প্রায় ৫০ বছরের সেনাশাসনের অবসান ঘটে। তবে সেনাবাহিনীর তৈরি করা সংবিধান অনুযায়ী কারও সন্তান বিদেশি হলে তিনি মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। সু চির দুই ছেলে এবং স্বামী বিদেশি নাগরিক। সংবিধান সংশোধন করতে গেলে অবশ্যই সেনাবাহিনীর মত নিতে হবে।
নতুন সরকারের সাফল্য অনেকটাই নির্ভর করছে সু চির সঙ্গে সেনাবাহিনীর সুসম্পর্কের ওপর। পার্লামেন্টের এক-চতুর্থাংশ আসনও সেনাবাহিনীর কবজায়। সু চি দীর্ঘকাল ধরে প্রেসিডেন্ট হওয়ার বিষয়ে তাঁর ইচ্ছার কথা বলে আসছেন। এ জন্য সংবিধান সংশোধনের দাবিও করেছেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি এ-ও বলেছেন যে নির্বাচিত হলে তিনি প্রেসিডেন্টের ওপরেই থাকবেন। তবে এখন তাঁর দলের শীর্ষ নেতারা আশাবাদী, সু চি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন।
এনএলডির এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেছেন, এ জন্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনায় তাঁরা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ইয়াঙ্গুন, রাখাইন ও শান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদ সেনাবাহিনীকে দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন। ইয়াঙ্গুন দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী।
সাবেক জেনারেল এবং এনএলডির সহপ্রতিষ্ঠাতা উ তে উ গত সপ্তাহে বলেছেন, সু চিই প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। যদিও সেনাবাহিনী-নিয়ন্ত্রিত মিয়াবতী পত্রিকায় সম্প্রতি প্রকাশিত এক মন্তব্য প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবিধান সংশোধন ‘জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী’।