ভারতে আলোচিত জিএসটি বিল রাজ্যসভায় পাস

ভারতে অভিন্ন কর ও পণ্য পরিষেবা (জিএসটি) চালু করার জন্য আলোচিত সংবিধান সংশোধন বিলটি গতকাল বুধবার সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় পাস হয়েছে। এর ফলে সারা দেশে করকাঠামোয় অভিন্নতা চালু হবে।
অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি গতকাল রাজ্যসভায় বিলটি পেশ করে বলেন, দেশের অর্থনৈতিক সংস্কারের লক্ষ্যে বিলটি এক বিরাট পদক্ষেপ। ভারতের সংবিধান অনুযায়ী কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়েরই বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর বসানোর অধিকার রয়েছে। জিএসটি চালু করতে সে জন্য সংবিধান সংশোধন করা প্রয়োজন। সেই বিলই রাজ্যসভায় কয়েক ঘণ্টা আলোচনার পর সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। এর আগে সরকারি দল কংগ্রেস ও অন্য বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে মতৈক্যে পৌঁছায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিল পাস হওয়াকে ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলে আখ্যায়িত করেন।
এর আগে বিরোধী দলের বাধার কারণে সংসদে অচলাবস্থার জন্য অন্যান্য বিলের পাশাপাশি জিএসটি বিলের আলোচনা ও উত্থাপনও বিলম্বিত হয়।
এর আগে লোকসভায় যে জিএসটি বিল পাস হয়েছিল, বর্তমান বিলে তার কিছু কিছু বদল ঘটায় রাজ্যসভায় পাস হওয়া বিলটি আবার লোকসভায় পাস হতে হবে। তারপর এই বিল দেশের অন্তত ১৫টি রাজ্যের বিধানসভায়ও অনুমোদিত হতে হবে। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব এই অভিন্ন করকাঠামো চালু করাই সরকারের লক্ষ্য। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ধারণা, জিএসটি চালু হলে ভারতের প্রবৃদ্ধি অন্তত ২ শতাংশ বেড়ে যাবে।
সংবিধান সংশোধন বিল পাস হলেই যে জিএসটি ঐকমত্যের ভিত্তিতে চালু হবে, তা কিন্তু নয়। কারণ, এখনো কয়েকটি বিষয়ে মতানৈক্য চলছে। কংগ্রেস সদস্য সাবেক অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম বিলটি উত্থাপিত হওয়ার আগে বলেন, ‘এটা ঠিক, কোনো বিলই ত্রুটিমুক্ত হয় না। এই বিলেও এখনো অনেক ত্রুটি রয়েছে। আশা করি, সরকার যুক্তির ভিত্তিতে ত্রুটি দূর করে বিলটি পাস করবে, স্রেফ সংখ্যার জোরে নয়।’
অভিন্ন কর ও পণ্য পরিষেবা কত শতাংশ পর্যন্ত বসানো যাবে, জিএসটি বিলে তা নির্ধারণ করা নেই। কংগ্রেসের বক্তব্য, গরিবদের স্বার্থে সেই হার কখনোই ১৮ শতাংশের বেশি করা ঠিক হবে না। এবং তা জিএসটি বিলে উল্লেখ রাখতে হবে। এই নিয়ে টানাপোড়েন এখনো অব্যাহত। সিপিএম এবং তামিলনাড়ুর সদস্যরা বলেন, জিএসটি পাস হলে রাজ্যগুলোর হাতে ভিক্ষাপাত্র ছাড়া আর কিছুই থাকবে না। কেন্দ্রের কাছে হাত পাতা ছাড়া আর কোনো উপায়ও থাকবে না। বিভিন্ন সময়ে রাজ্য সরকার বাড়তি অর্থ আদায় করে। সেই অধিকারও থাকা দরকার।
লোকসভায় এর আগে যে বিল বিজেপি সরকার পাস করিয়েছিল, রাজ্যসভায় তার বদল ঘটেছে। আগের বিলে রাজ্যগুলোকে অতিরিক্ত ১ শতাংশ কর বসানোর অধিকার দেওয়া হয়েছিল। কংগ্রেস বলে, তাহলে করকাঠামো অভিন্ন হবে না।