তিন বছরে জাকির নায়েকের কাছে আসে ৬০ কোটি রুপি

জাকির নায়েকের ব্যাংক হিসাবে গত তিন বছরে বিদেশ থেকে ৬০ কোটি রুপি জমা হয়েছে। তিনটি দেশ থেকে তাঁর ব্যাংক হিসাবে এই অর্থ পাঠানো হয়। পরে এই অর্থ জাকির নায়েকের পরিবারের সদস্যদের পাঁচটি ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। মুম্বাই পুলিশের তদন্তে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। খবর দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

খবরে বলা হয়, নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘তদন্তে জাকির নায়েকের ব্যাংক হিসাবের লেনদেনের সব তথ্য–প্রমাণ পাওয়া গেছে। কিন্তু আমরা এখনো জানি না কি কাজে এই অর্থ এসেছে। আমরা তদন্ত করেছি এবং অর্থ লেনদেনের এই তথ্য পেয়েছি। এই অর্থ পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা হয়েছিল।’

তবে ওই কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, ওই অর্থ জাকির নায়েকের এনজিও ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (আইআরএফ) জন্য আসেনি। ওটা তাঁর জন্য এসেছে। পুলিশ এখন জাকির নায়েক ও আইআরএফের আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। এ বিষয়ে আইআরএফের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবে পুলিশ।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘অর্থ আয়ের উৎস এবং অর্থ জমাদানকারীদের সঙ্গে জাকির নায়েকের সম্পর্ক কী, তা জানতে আমরা তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারি।’
খবরে বলা হয়, জাকির নায়েক প্রতিষ্ঠিত আইআরএফ এবং আইআরএফ এডুকেশনাল ট্রাস্ট—দুটি সংস্থাই ‘শিক্ষামূলক’ এনজিও হিসেবে ভারতে বিদেশি অনুদান প্রাপ্তির আইনের (এফসিআরএ) আওতায় নিবন্ধিত হয়েছে। কিন্তু দুটি সংস্থাই বিদেশি অনুদানের অর্থ ‘ধর্ম এবং ধর্ম সম্পর্কিত’ কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যয় করছে বলে জানা গেছে।

তবে জাকির নায়েকের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলেছে, ‘এখানে কোনো অবৈধ লেনদেন হয় না। সংস্থার ব্যাংক হিসাবে অর্থ আসে এবং আইআরএফ ২০১৫ সাল পর্যন্ত সব আয়কর পরিশোধ করেছে। যত অর্থ এসেছে, তার সবই ‘সাদা’ এবং এ বিষয়ে সব তথ্যই রাখা হয়েছে।’
সূত্র জানিয়েছে, জাকির নায়েক প্রতিষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক স্কুলের ব্যাংক হিসাবও খতিয়ে দেখছে মুম্বাই পুলিশ। ব্যাংকের হিসাব পর্যালোচনা ও অর্থ স্থানান্তরের তথ্যসহ একটি পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন সম্প্রতি কমিশনার ডি ডি পদসালগিকারের কাছে পেশ করা হয়েছে।

খবরে বলা হয়, গত ১ জুলাই ঢাকার গুলশানে একটি রেস্তোরাঁয় হামলাকারীদের দুজন জাকির নায়েকের বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন—এমন অভিযোগ ওঠার পর তাঁর কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখা শুরু করে ভারত। মহারাষ্ট্র সরকার মনে করে, জাকির নায়েক তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক উসকানি ছড়াচ্ছে।

এ ছাড়া জাকির নায়েক প্রতিষ্ঠিত আইআরএফ এবং আইআরএফ এডুকেশনাল ট্রাস্ট ভারতে বিদেশি অনুদান প্রাপ্তি আইন (এফসিআরএ) লঙ্ঘন করেছে কি না, তা তদন্তের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দেশটিতে জাকির নায়েকের প্রতিষ্ঠিত পিস টিভির সম্প্রচারও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।