সবচেয়ে বেশি ইচ্ছা বিজ্ঞানী হওয়ার

 সাইক আনাম জোয়াদ্দার

অষ্টম শ্রেণী, নাটোর গভর্নমেন্ট বয়েজ হাইস্কুল (স্কুলের তারকা, ফেব্রুয়ারি - ২০১৪)

ছেলেটার বয়স তখন ১২। গিয়েছে এয়ারটেল রাইজিং স্টার্সের রেজিস্ট্রেশন করতে। কারও চোখ কপালে, কেউ হেসেই অস্থির—এইটুকুন পুঁচকে ছেলের বার্সেলোনা যাওয়ার শখ! শেষ পর্যন্ত অবশ্য বার্সেলোনা অবধি যাওয়া হয়নি তার, তবে নিন্দুকের মুখে ছাই দিয়ে বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে ঠিকই স্টার কার্ড বাগিয়ে নিয়েছিল ‘পুঁচকে’ ছেলেটা।

স্কুল ফুটবল টিমের গোলকিপার সাইক আনামকে সিয়াম নামেই চেনে সবাই। খেলেছে নাটোর অনূর্ধ্ব ১৪ ও অনূর্ধ্ব ১৬ দলে। এবারের প্রাইম ব্যাংক টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তার দল। তবে কেবল ফুটবল নয়, ক্রিকেট আর ব্যাডমিন্টন খেলতেও সে ওস্তাদ। এ ছাড়া খেলে দাবা, জাতীয় পর্যায়ের টুর্নামেন্টে অনূর্ধ্ব ১৮ বিভাগে তৃতীয় স্থানটি তার। স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় দৌড় কিংবা লংজাম্পের সেরা পুরস্কারটাও বাঁধা থাকে তার জন্য।

এ তো গেল কেবল খেলাধুলার কথা, গল্পের বই পড়ারও প্রচুর নেশা তার। শেলফে সাজিয়ে রাখা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া উৎসবের পুরস্কারপ্রাপ্ত বইগুলো তারই জানান দেয়। স্কুলের বিজ্ঞান ক্লাবের সক্রিয় সদস্য সে, বিজ্ঞান মেলায় প্রথম পুরস্কারসহ বিজ্ঞানভিত্তিক অলিম্পিয়াডে চ্যাম্পিয়নও হয়েছে। এ ছাড়া ২০১১ সালে গণিত অলিম্পিয়াডে হয়েছিল বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন।

কম্পিউটারের সামনে বসে সিয়াম কেবল গেমস খেলেই না, বানায়ও! নানা রকম কুইজ আর পাজল গেমস থেকে শুরু করে জিটিএ ভাইস সিটির বাংলা ভার্সন পর্যন্ত বানিয়েছে সে। জানে ওয়েব প্রেগ্রামিং, সময় পেলেই মেতে ওঠে ভিজ্যুয়াল ব্যাসিক, সি ++, পাইথন কিংবা নানা ওপেনসোর্স সফটওয়্যার নিয়ে। কখনো আবার বেরিয়ে পড়ে সাইকেলে চেপে, বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে আসে শহরের বাইরে থেকে। ছোটবেলা থেকে পেয়ে আসছে বিভিন্ন বেসরকারি মেধাবৃত্তি। এ ছাড়া ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায়। স্কুলের মেধাতালিকায়ও বরাবর স্থান থাকে প্রথম সারিতে, তাই শিক্ষকেরা তার জ্বালাতন সহ্য করেন বেশ হাসিমুখেই!

সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি...

সারা দিন যেন সবাইকে একটু কম জ্বালাতন করি!

কার লেখা পড়তে ভালোবাসো?

অবশ্যই জাফর ইকবাল স্যার!

যারা তোমাকে অনুপ্রেরণা দেয়...

স্কুলের বন্ধুরা

প্রিয় খাবার

আলু ভর্তা

প্রিয় খেলোয়াড়

মেসি আর রোনালদোর ভক্তরা নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করলেও আমার কিন্তু দুজনকেই পছন্দ!

তোমার জীবনের আদর্শ কে?

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ, যিনি এখনো একটি মুক্ত পৃথিবীতে বিশ্বাস করেন।

বড় হয়ে কী হতে চাও?

অনেক কিছু! তবে সবচেয়ে বেশি ইচ্ছা বিজ্ঞানী হওয়ার, নাসায় কাজ করার।

কিশোর আলোর বন্ধুদের উদ্দেশে কিছু বলবে?

‘প্রতিভা’ একটা আপেক্ষিক শব্দ। ইচ্ছাশক্তি আর একাগ্রতা থাকলে সবকিছুই করা সম্ভব।