মামার বিয়ের বরযাত্রী - খান মোহাম্মদ ফারাবী

মামার বিয়ের বরযাত্রী

 লেখক: খান মোহাম্মদ ফারাবী

প্রথম প্রকাশ: ১৯৭০

ধরন: অ্যাডভেঞ্চার, হাসির

প্রকাশক: মোহনা প্রকাশনী (১৯৯৯)

পৃষ্ঠা: ৮০

 কাহিনি মামার বিয়ের বরযাত্রী র গল্পগুলো লেখা হয়েছিলো ১৯৬৪ সাল থেকে ১৯৬৬ সালের মধ্যে। তবে গল্পগুলো সম্পর্কে তোমাদের বলার আগে লেখক খান মোহাম্মদ ফারাবী সম্পর্কে দু-চার কথা বলা প্রয়োজন।

১৯৫২ সালের ২৮ জুলাই খান মোহাম্মদ ফারাবী জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি মেধাবী ছাত্র ছিলেন; সঙ্গে ছিলেন বইয়ের পোকা। খুব ছোটবেলা থেকেই তিনি শিশুসাহিত্যের বিখ্যাত বইগুলো পড়ে ফেলেছিলেন। একসময় নিজেই লিখতে শুরু করেছিলেন ছোটদের জন্য। মজার ব্যাপার হচ্ছে, তিনি তখন সবে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। অষ্টম শ্রেণী পার হতে না-হতেই তিনি বেশ কিছু গল্প লিখে ফেলেন। এই বইয়ের গল্পগুলোও এই সময়ে লেখা। কিন্তু দুর্ভাগ্যের ব্যাপার হচ্ছে, তিনি অল্প বয়েসে মারা যান। সেটা হলো ১৯৭৪ সালের ১৫ মে। কিন্তু ছোটদের জন্য তাঁর লেখা এসব গল্প এখনো জনপ্রিয়। তিনি বেঁচে আছেন এসব গল্পের মধ্যে দিয়ে।

মামার বিয়ের বরযাত্রী  বইটিতে আছে ছয় কিশোরের দুরন্তপনার গল্প। একই পাড়ার বাসিন্দা ঝন্টু, ফোকলা, খালেদ, সিরাজ, নুরুল ও খুরশীদ। সারা দিন দুষ্টুমি আর খেলাধুলা করে ভালোই কাটছিল তাদের সময়। হঠাৎ তাদের পাড়ায় নতুন এক বড় ভাইয়ের আবির্ভাব হয়। নাম তাঁর কামাল। বয়সে তাদের চেয়ে দু-তিন বছরের বড় হওয়ার কারণে তিনি হয়ে যান গণহারে সবার কামাল ভাই। একইভাবে তিনি অলিখিতভাবে তাদের লিডার বনে যান।

কিন্তু অচিরেই ঝন্টু-ফোকলাদের দল বুঝতে পারে কাকে লিডার বানিয়েছে! কারণ, প্রথম দিকে কামাল ভাইকে ভালো মানুষ মনে হলেও ধীরে ধীরে তাঁর আসল চেহারা প্রকাশ পেতে থাকে। তিনি ঝন্টু-ফোকলাদের চেয়েও বেশি ডানপিটে। কামাল ভাই নানাভাবে তাদের জব্দ করতে শুরু করেন। ঝন্টু-ফোকলাদের দলও বসে থাকে না। তারও কামাল ভাইকে পাল্টা হেনস্তা করতে চেষ্টা করে। কিন্তু ফলাফল যোগ করে দেখা যায় কামাল ভাই-ই শেষ পর্যন্ত জিতেছেন। টম আর জেরির মতো তাদের এই ইঁদুর-বিড়াল খেলায় ঘটতে থাকে নানা মজার ঘটনা। তাতে হাসতে হাসতে পেটে খিল পড়ে যায় পাঠকের।

বইয়ের ১২টি গল্পের বেশির ভাগই লেখা হয়েছে পালের গোদা কামাল ভাইকে নিয়ে। গল্পগুলো হচ্ছে ‘লিডার বটে’, ‘কেমন জব্দ’, ‘কামাল ভাইয়ের প্লুটো যাত্রা’, ‘কামাল ভাইয়ের স্বদেশপ্রেম’, ‘মঙ্গল গ্রহের মানুষ’, ‘কামাল ভাইয়ের নাটক পরিচালনা’, ‘গুপ্তধন’, ‘তিতুমীরের প্রপৌত্র’, ‘নতুন মাস্টার’, ‘বাঘ বাঘ’, ‘ছাত্রণাং অধ্যয়নং তপঃ’ ও ‘মামার বিয়ের বরযাত্রী’। বইটি একবার হাতে নিলে শেষ না করে উঠতে পারবে না। যারা এখনো এই বইটি পড়োনি, তারা আজই সংগ্রহ করে পড়ে নাও।