আগডুম বাগডুম

প্রথম ডাকটিকিট

উনিশ শতকের ঘটনা। ইংল্যান্ডের ডাক বিভাগের প্রধান ছিলেন স্যার রোল্যান্ড হিল। একদিন ইংল্যান্ডের এক গ্রামে বেড়াতে গিয়ে তিনি এক ডাকপিয়নকে এক বাড়িতে চিঠি বিলি করতে দেখলেন। ওই বাড়ির এক কিশোর পিয়নের কাছ থেকে খামটা নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখল। তারপর

চিঠিটা পিয়নকে ফেরত দিয়ে চলে গেল। কৌতূহলী রোল্যান্ড সেই ছেলেকে জিজ্ঞেস করলেন, চিঠি কার ছিল? তারা চিঠিটা পিয়নকে ফেরত দিল কেন? উত্তরে হিল জানলেন, ছেলেটির বাবা অনেক দূরে কাজ করে। সেখান থেকে তিনি চিঠিটা পাঠিয়েছেন। ছেলেটি দেখেছিল, তার বাবা টাকা পাঠিয়েছেন কি না। কিন্তু টাকা পাঠাননি দেখে চিঠিটা পিয়নকে ফেরত দেয়। কারণ চিঠি তোলার মতো যথেষ্ট টাকা তাদের কাছে নেই। সে সময় ডাক বিভাগের নিয়ম অনুযায়ী, চিঠি তুলতে প্রাপককে অর্থ খরচ করতে হতো। তাই দরিদ্র অনেকেই চিঠি তুলত না। ফলে ডাক বিভাগে চিঠির স্তূপ জমে যেত।

এই ঘটনায় রোল্যান্ড ডাকব্যবস্থা পরিবর্তনের কথা ভাবলেন। তাঁর মাথায় এল, ডাকটিকিট প্রচলনের কথা। পরবর্তী সময়ে তাঁর চেষ্টায় প্রেরককে টাকা খরচ করে চিঠি পাঠানোর নিয়ম চালু হয়; যাতে প্রাপককে কোনো খরচ করতে না হয়। এরপর ১৮৪০ সালের ১ মে ইংল্যান্ডে প্রথম ডাকটিকিটের প্রচলন হয়, যা পেনিব্ল্যাক নামে বিখ্যাত। টিকেটটার দাম ছিল এক পেনি আর রংটা ছিল কালো। তাই এমন নাম। এতে ইংল্যান্ডের রানী ভিক্টোরিয়ার চেহারা মুদ্রিত ছিল।

ইঁদুরের বাড়ন্ত দাঁত

ইতিহাসের প্রথম থেকেই ইঁদুর মানুষের শত্রু বলে গণ্য। এমন কিছু নেই, যা ইঁদুর নষ্ট করে না। বইপত্র, কাপড়চোপড়, দলিল-দস্তাবেজ, বিছানা-বালিশ, খাদ্যশস্য সবকিছুই ইঁদুরের শিকার হয়। কিন্তু এসবের বেশির ভাগই ইঁদুরের খাদ্য নয়। খাওয়ার চেয়ে নষ্ট করাই যেন তার আনন্দ। কিন্তু কেন? প্রাণীবিজ্ঞানীরা এ জন্য ইঁদুরের দৈহিক এক বিশেষ বৈশিষ্ট্যকে দায়ী করেন।

ইঁদুরের চোয়ালের ওপর-নিচে দুই জোড়া বিশেষ ধরনের দাঁত থাকে, যাকে বলে কৃদন্ত। কৃদন্ত দিয়ে তারা যেকোনো জিনিস কেটে খাওয়ার উপযোগী করতে পারে। এ ছাড়া এই দাঁত দিয়েই তারা জিনিস কেটে নষ্ট করে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ইঁদুরের এ কৃদন্ত সব সময়ই বড় হয়। এমনকি তাদের দৈহিক বৃদ্ধি শেষ হলেও এ দাঁত বাড়তে থাকে। দাঁতগুলো বেশি বড় হলে সেগুলো ইঁদুরের সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই দাঁতকে ব্যবহারোপযোগী রাখতে তাদের বাধ্য হয়ে সেগুলো ছোট রাখতে হয়। এ জন্য তারা সব সময় কিছু না কিছু কাটাকুটি করে। নিয়মিত কাটার ফলে সেই বস্ত্তর ঘষায় দাঁতের দৈর্ঘ্য ছোট হয় এবং ধারালো থাকে। তাই সুযোগ পেলেই ইঁদুর কাটাকুটিতে মেতে ওঠে।