এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী

কাহিনি: লেখক এরিক কাস্টনার

চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: বাদল রহমান

প্রথম প্রকাশ: ১৯৮০

ভাষা: বাংলা

কাহিনি: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের খলনায়ক হিটলারের জার্মানিতে শুধু তাঁর মতো যুদ্ধবাজই জন্ম নেননি, অনেক বিখ্যাত মানুষও জন্ম নিয়েছেন। এদের মধ্যে একজন বিজ্ঞানী আইনস্টাইন। তবে আজ আইনস্টাইনকে পাত্তা দেওয়ার সময় নেই। আমরা বলব লেখক এরিখ কাস্টনারের কথা। এই জার্মান লেখক একাধারে ছিলেন কবি, সাংবাদিক, ঔপন্যাসিক ও নাট্যকার। তবে এত গুণের ভিড়ে তিনি বেশি পরিচিত হয়েছিলেন শিশু-কিশোরদের জন্য লেখার কারণে। তাঁর হাত দিয়েই ১৯২৮ সালে জার্মান ভাষায় বেরিয়েছিল  এমিল আন্ড ডি ডিটেকটিভ  উপন্যাসটি। যারা জার্মান ভাষা বোঝ না তাদের বলছি, বইটির ইংরেজি নাম:  এমিল অ্যান্ড দ্য ডিটেকটিভ । বাংলায় করলে দাঁড়ায়  এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী । ছোটদের জন্য লেখা এ বইটি রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যায়। কিছুদিনের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলচ্চিত্রে রূপ দেওয়া হয় কাহিনিটিকে। বইটির মতো এই চলচ্চিত্রগুলোও দেশে দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।

এই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের পরিচালক বাদল রহমান মূল কাহিনি ঠিক করে প্রেক্ষাপট পরিবর্তন করে বানিয়েছিলেন  এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী । সে সময়ই তিনি সদ্যই ভারতের বিখ্যাত পুনে ফিল্ম ইনস্টিটিউট থেকে চলচ্চিত্র বিষয়ে উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশে ফিরেছেন। সালটি ছিল ১৯৮০। ছবিটি সে বছর দেশে রীতিমতো হইচই ফেলে দেয়। বাদল রহমানের নির্মিত ছবিটি শুধু জনপ্রিয়ই হয়নি, সে বছর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, সম্পাদনা, শিশুশিল্পী, রঙিন চিত্রগ্রহণ এবং পার্শ্ব-অভিনেতা ক্যাটাগরিতে পাঁচটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার হাতিয়ে নেয়।

আরে সর্বনাশ! এত কথার ভিড়ে ছবিটির কাহিনিটিই তো তোমাদের বলা হয়নি। হয়েছে কী: খেলাঘর নামের ঢাকার এক সংগঠন ছোটদের জন্য রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় খুলনার ছোট্ট ছেলে এমিল। আর কী আশ্চর্য, সে জিতে যায় প্রথম পুরস্কার। পুরস্কার নিতে একা একা ঢাকার পথে রওনা হয় এমিল। তাতেই ঘটে বিপত্তি। আসার আগে ওর হাতে কিছু টাকা দিয়েছিলেন মা। কিন্তু ট্রেনের মধ্যেই এমিল হঠাৎ খেয়াল করে তার পকেটে টাকা নেই। নেই তো নেই! আঁতিপাঁতি করে এ পকেট, সে পকেট খুঁজেও কোনো লাভ হয় না। একেবারে হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে যেন।

এমিল খেয়াল করে দেখে, ট্রেনেই তার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল এক লোকের। লোকটার আচরণ কেমন যেন সন্দেহজনক ছিল। টাকাটা উনি নিয়েছিলেন বলে নিশ্চিত হয় এমিল। এখন কী করবে সে? না, কান্নাকাটি নয়, নাছোড়বান্দা এমিল নিজের টাকা উদ্ধারে অভিযানে নামে। তার সাহাযে্য এগিয়ে আসে নতুন পরিচয় হওয়া ঢাকার একদল ছেলে। তারা এমিলের পক্ষে স্বেচ্ছায় গোয়েন্দাগিরি শুরু করে। কিন্তু টাকা চোরও কিন্তু কম সেয়ানা নয়। এমিলের জন্য তিনিও ফাঁদ পাতেন। শুরু হয় রুদ্ধশ্বাস এক উত্তেজনা। তারপর? সেটাও কি আমি বলব নাকি! ছবিটি নিজেই দেখে উত্তরটা জেনে নাও। সহজ হিসাব!

আরেকটি কথা, যারা বইটি পড়তে চাও তারা সেবা প্রকাশনীতে একবার খোঁজ নিতে পারো। অনেক আগেই এরিখ কাস্টনারের বইটির অনুবাদ  এমিলের গোয়েন্দা দল  নামে প্রকাশিত হয়েছে।