রূপকথার সেই তলোয়ার

এক দেশে ছিল এক রাজা। তার ছিল খুব প্রিয় এক তলোয়ার। এক যুদ্ধে রাজা হ্রদে ডুবে মারা গেল। রাজার এক বন্ধু শোকে-দুঃখে সেই তলোয়ার ছুড়ে মারল ওই হ্রদে। কী অবাক ব্যাপার, মৃত রাজার হাত বেরিয়ে এল হ্রদের তলদেশ থেকে, প্রিয় তলোয়ারটি হাতে নিয়ে আবার হারিয়ে গেল চিরতরে।
কী ভাবছ? রূপকথা লিখতে বসেছি? এই রূপকথাই কিন্তু বাস্তব রূপে ধরা দিয়েছে ছোট্ট মাতিলদার জীবনে!
সাত বছর বয়সী মাতিলদা তার বাবার কাছ থেকে শুনেছিল রাজা আর্থার ও তার প্রিয় তলোয়ার ‘এক্সক্যালিবার’–এর কাহিনি৷ তো এক প্রখর রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে মাতিলদা তার বাবার কাছে বায়না করল, হ্রদে নৌকা চালাতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। যেই ভাবা সেই কাজ। আদরের কন্যার আবদার রক্ষা করতে বাবা তাকে নিয়ে গেলেন ডজমেরি হ্রদে। কাকতালীয়ভাবে নর্থ আমেরিকার ওন্টারিওতে অবস্থিত এই হ্রদকেই রাজা আর্থারের সেই রূপকথার হ্রদ বলে ধারণা করা হয়।
তার পরের ঘটনা বেশ নাটকীয়। হ্রদে নৌকায় চড়ে কেবল প্যাডেল চাপা শুরু করেছে তারা, ঠিক তখন মাতিলদা কী যেন দেখে হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠল, বাবা দেখো দেখো, এটাই রাজা আর্থারের সেই তলোয়ার না? বাবা শুরুতে ভাবলেন, মাতিলদা ঠাট্টা করছে। কিন্তু পরে তাকিয়ে দেখলেন সত্যিই তো, কোমরসমান পানিতে একটা ধাতুর তৈরি পুরোনো তলোয়ার দেখা যাচ্ছে বৈকি। রূপকথার ‘এক্সক্যালিবার’–এর সঙ্গে তার হুবহু মিল। মাতিলদার উত্তেজনা তখন দেখে কে!
এরপর বেশ হুলুস্থুল পড়ে গেল৷ বিভিন্ন টিভি ক্যামেরা ও পত্রপত্রিকার সাংবাদিক এসে হাজির হলেন হ্রদের তীরে। সবাই চান ছোট্ট মাতিলদার সাক্ষাৎকার নিতে৷ রাতারাতি যেন তারকা বনে গেল সে। কী করে এখানে এই তলোয়ার এল, কেউ জানে না। বাবা পল জোনস অবশ্য ধারণা করতে চাইলেন, অন্তত দুই যুগ আগে কোনো নাটক বা সিনেমায় ব্যবহৃত পুরোনো তলোয়ার হতে পারে এটি। কিন্তু মাতিলদা সেসব মানতে নারাজ। মানবেই–বা কেন, এমন রূপকথা কি রোজ রোজ সবার জীবনে সত্যি হয়ে আসে, বলো?

তথ্যসূত্র: ম্যাশাবল