৪ ফুট লম্বা গিরগিটি

ধরো, ঘুম থেকে উঠে দেখলে তোমার পাশে শুয়ে আছে বিশাল এক গিরগিটি। তোমাকে দেখেই লকলকে জিব বের করে যেন অভিবাদন জানাল গিরগিটিটা। ভারী শরীরটা টেনে উঠে বসল তোমার পিঠে। গাবদা দুটো হাত (নাকি পা?) জড়িয়ে ধরল তোমার গলা! কেমন লাগবে?

ভেবেই গা শিউরে উঠছে। অথচ এমনই এক গিরগিটি পোষেন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের অধিবাসী সারাহ ক্রো! ১৫ পাউন্ড ওজনের এই সরীসৃপের নাম উইনস্টন। ৪ ফুট লম্বা শরীর নিয়ে দিব্যি মালিকের সঙ্গে ঘুরে বেড়ায় সে। কখনো পিঠে, কখনোবা কাঁধে।

খসখসে চামড়ার সরীসৃপটা খুব প্রিয় ক্রোর কাছে। উইনস্টনও সুখেই আছে। এমন মালিক পেলে কে না সুখী হয়?

জীবনের শুরুতে মোটেও সুখে ছিল না উইনস্টন। প্রথম মালিক বাক্সে ভরে ফেলে গিয়েছিল তাকে। তার জীবন বাঁচায় দ্য গ্রেট লেকস জুয়োলজি সোসাইটি। কিন্তু কিছুদিন পর বন্ধ হয়ে যায় মিশিগানের সেই সংস্থাটি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত গৃহহীন নিঃসঙ্গ অবস্থায় ছিল উইনস্টন। তারপর তাকে খুঁজে পান ক্রো। তিনি বলেন, ‘ও বেশ ধ্বংসাত্মক ছিল শুরুতে। নতুন পরিবেশ সম্পর্কেও ছিল উদাসীন। পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত হতে তার প্রায় তিন মাস সময় লেগেছিল। এই সময়ে তার পছন্দ-অপছন্দের কথা জেনেছি। ওর পছন্দ ডিম, মাংস এবং পোকামাকড়।‌'

অনেকে গিরগিটি ভয় পেলেও ব্যতিক্রম ক্রো। উল্টো বেশ উপভোগ করেন। কুকুর বা বিড়ালের মতো ৯ বছরের উইনস্টনও খেলাধুলায় দক্ষ। পিঠে চড়া কিংবা কোলে শুয়ে থাকাই বেশি পছন্দ তার। এমনিতে খুব আরামপ্রিয় উইনস্টন। কিন্তু ক্রোকে অসুস্থ দেখলেই ছটফট করে প্রাণী। চেষ্টা করে তাকে সঙ্গ দেওয়ার। সারাহ ক্রোর আদর পাওয়া ছাড়া আর কোনো কিছুই যেন মূল্যবান নয় আর্জেন্টাইন এই তেগুর (tegu) কাছে। সারা দিন ক্রোর সঙ্গেই কাটে তার। আর সারাহও যেন প্রাণীটির মায়া থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারেন না। তাঁর চোখে উইনস্টনই সেরা।

রিয়াহিনাল ফারুক