ডেথ নোটের মৃত্যু মিছিলে

অন্য সব নোটবুকের মতো খুব সাধারণ দেখতে এক নোটবুক। সাদামাটা হলেও এর কাজ বেশ ভয়ংকর! এই নোটবুকের পাতায় কোনো মানুষের চেহারা কল্পনা করে তার নাম লেখা হলে মিনিট খানেকের মধ্যে সে মারা যাবে। মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করে দিলে ঠিক সেভাবেই মারা যাবে, আর কারণ উল্লেখ না করে দিলে মানুষটি মারা যাবে হার্ট অ্যাটাকে। ভয়ংকর এই নোটবুকটির নামই হচ্ছে ‘ডেথ নোট’।

হাইস্কুলের সবচেয়ে মেধাবী আর সেরা শিক্ষার্থী ইয়াগামি লাইট। পৃথিবীর মানুষদের প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য 'ডেথ গড' রিউক একদিন তার ডেথ নোটটি ফেলে দেয়, যা এসে পড়ে লাইটের স্কুলের মাঠে। ডেথ নোটটি চোখ এড়ায় না লাইটের। এটি ব্যবহারের নিয়মকানুন পড়ে প্রথমে লাইট পুরা ব্যাপারটা ভুয়া হিসেবে ধরে নিলেও পরে কৌতূহলবশত, সে তা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেয়। একজন ক্রিমিনালের নাম লিখে সে ডেথ নোটে। লাইটকে অবাক করে দিয়ে মিনিটের মধ্যে মারা যায় সে। লাইট প্রবেশ করে তার নতুন অন্ধকার রাজ্যে। একটি শান্তিপূর্ণ ও অপরাধমুক্ত পৃথিবী তৈরির নেশায় সে এক এক করে সব ক্রিমিনালকে মেরে ফেলছিল। কয়েক দিনের মধ্যে তার নোটবুক ভরে ওঠে ক্রিমিনালদের লিস্টে। কিন্তু সবার এমন অস্বাভাবিক মৃত্যু মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় পুলিশের। বিখ্যাত ডিটেকটিভ ‘এল’ এর সাহাযে্য তাই শুরু হয় তদন্ত। এ কথা সত্য যে কিরার (ডেথ নোটের অধিকারী) কারণেই শহরে ক্রাইমের সংখ্যা কমে যায় অনেক। তবে যে উপায়ে তা ঘটেছিল তা কখনোই মেনে নিতে পারছিল না এল। তাই শুরু হয় লাইট এবং এলের মধ্যে একধরনের ঠান্ডা যুদ্ধ। এল কি পেরেছিল আসল কিরা কে বের করতে? ডেথ নোটের রহস্য কি জেনে যায় সবাই? নাকি লাইট তৈরি করে নেয় নিজের মতো রাজ্য? এমনই টানটান উত্তেজনার অ্যানিমে ডেথ নোট। অ্যানিমের আরও কিছু উল্লেখযোগ্য চরিত্র হলো মেলো, মিসা, তেরু মিকামি।

২০০৬ সালে প্রথম প্রকাশের পর থেকেই অ্যানিমে ভক্তদের আলোচনার শীর্ষে উঠে আসে ডেথ নোট। দেশ-বিদেশের কসপ্লেয়ারদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কত কত কিরা আর এলের দেখা যে পাওয়া গেছে তার হিসাব নেই। মাইন্ড গেমস থেকে শুরু করে প্রতিশোধ, আত্মত্যাগ, বিশ্বাসঘাতকতা, ট্র্যাজেডি আর সাসপেন্স—সবকিছুর সংমিশ্রণে প্রাণ পেয়েছে এই অ্যানিমেটি। তাই যারা এখনো ডেথ নোট দেখোনি, তারা দেখা শুরু করে দিতে পারো। তবে অবশ্যই সঙ্গে কিছু সময় নিয়ে, কারণ একবার দেখা শুরু করলে উত্তেজনায় তুমি দেখা বন্ধ করতে পারবে কি না, সে বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে!