ছোট্ট গোল কাচের অ্যাকুয়ারিয়ামে থাকত একটা গোল্ডফিশ। সারা দিন ঘুরপাক খেত সেখানেই। ওটাই ছিল তার পৃথিবী। তাই তার কাছে মনে হতো পৃথিবীটা গোল।
এদিকে কাচের লম্বা একটা অ্যাকুয়ারিয়ামে থাকত একটা গোল্ডফিশ। ওটাই ছিল তার পৃথিবী। তার কাছে মনে হতো পৃথিবীটা চারকোনা।
হরলিকসের বয়ামে থাকত একটা গোল্ডফিশ। তার কাছে মনে হতো পুরো পৃথিবীটা বুঝি হরলিকসের বয়ামের মতো।
প্লাস্টিকের বালতির মধ্যে থাকত একটা গোল্ডফিশ। তার কাছে মনে হতো পৃথিবীটা বুঝি বালতির মতো।
কাচের জগের মধ্যে থাকত একটা গোল্ডফিশ। তার কাছে মনে হতো পৃথিবীটা বুঝি কাচের জগের মতো।
পুকুরে থাকত একটা গোল্ডফিশ। তার কাছে মনে হতো পৃথিবীটা বুঝি পুকুরের মতো।
নদীতে থাকত একটা গোল্ডফিশ। তার কাছে মনে হতো পৃথিবীটা বুঝি নদীর মতো।
একদিন গোল্ডফিশগুলোর বাবা-মা ভাবল বাচ্চাদের অনেক বয়স হয়েছে। এবার তাদের স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেওয়া দরকার। পিচ্চি গোল্ডফিশগুলোকে একদিন স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়ে এল তারা।
দিন গেল সপ্তাহ গেল। স্কুলে যা হয়, কয়েক দিন পরেই আসে পরীক্ষা। সেই পরীক্ষায় এল, পৃথিবী দেখতে কেমন?
একটা গোল্ডফিশ লিখল গোল, একটা লিখল চারকোনা, একটা লিখল হরলিকসের বয়ামের মতো, একটা লিখল বালতির মতো, একটা লিখল কাচের জগের মতো, একটা লিখল পুকুরের মতো, একটা লিখল নদীর মতো।
একজন বাদে পরীক্ষার খাতায় সবাই এত্ত বড় করে গোল্লা পেল। সেটা দেখে সবার অনেক মন খারাপ। একজন তো বাবার বকার ভয়ে কেঁদেই দিল।
সেটা দেখে ক্লাসের টিচার বলল, কী ব্যাপার তুমি কাঁদছ কেন? আর তোমাদের সবার মনই বা খারাপ কেন?
একজন মিনমিন করে বলল, আমরা সবাই খাতায় গোল্লা মার্কা শূন্য পেয়েছি। আমাদের তাই মন খারাপ।
টিচার হেসে বলল, আরে বোকার দল, কে বলেছে তোমরা গোল্লা মার্কা শূন্য পেয়েছ! ওটা শূন্য না, পৃথিবীটা যে গোল সেটাই আমি তোমাদের খাতায় গোল করে এঁকে দিয়েছি।
জেনে খুশি হবে
তোমরা যারা মাঝেমধ্যেই পরীক্ষার খাতায় গোল্লা মার্কা শূন্য পাও তারা মোটেও মন খারাপ কোরো না। ওটা আসলে শূন্য না। পৃথিবীটা যে গোল সেটাই টিচার সুন্দর করে এঁকে দেন আরকি!
অলংকরণ: জুনায়েদ