ওভার দ্য হেজ

ওভার দ্য হেজ

ধরন: অ্যানিমেশন/অ্যাডভেঞ্চার/কমেডি

প্রথম প্রকাশ: ২০০৬, যুক্তরাষ্ট্র

নির্মাতা: ড্রিমওয়ার্কস অ্যানিমেশন

ভাষা: ইংরেজি

দৈর্ঘ্য: ৮৩ মিনিট

প্রচণ্ড শীত পড়ারও যে শব্দ আছে, সেটি প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন খেয়ালখুশির রাজা সুকুমার রায়। তার লেখা ' শব্দকল্পদ্রুম'  নামের ছড়া অনুযায়ী, সেই শব্দটি নাকি ‘হুড়মুড় ধুপধাপ’। হয়তো এই মৌসুমে তোমাদের সেই রহস্যময় শব্দটি শোনার সৌভাগ্য হয়েছে। যারা এখনো শোনোনি, তারা হিমরাতে ঘরে বসে একটু কান পেতে চেষ্টা করে দেখতে পারো। কারণ, এ শব্দের মধ্যে বাইরে যেতে বারণ করেছেন সুকুমার রায়।

তার বারণ শুনেই হয়তো একদল জীবজন্তু এই শীত মৌসুমে ঘর ছেড়ে একদমই বের হয় না। গুটিসুটি মেরে কয়েক মাস টানা ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেয়। অনেকেই জানো, প্রচণ্ড ঠান্ডা থেকে বাঁচতে জীবজন্তুদের এ ঘুমকে বলে শীতনিদ্রা বা হাইবারনেশন। বসন্তের শুরুতে ঘুম থেকে জেগে ওঠে তারা। ভিনসেন্ট নামের ভালুকটাও শীত ঘুমের আগে পাহাড়ের এক গুহায় খাবার জমিয়ে রেখেছিল। ইচ্ছে ছিল, দীর্ঘ কয়েক মাসের ঘুম থেকে উঠে আয়েশ করে চারটে দানাপানি খাবে। আহা!

কিন্তু ভালুক (নাকি মানুষ?) ভাবে এক, আর বাস্তবে হয় আরেক। অত সুখ ভিনসেন্টের কপালে ছিল না। তাই আরজে নামের ক্ষুধার্ত এক র‌্যাকুন কোনো খাবার না পেয়ে শেষমেশ ভিনসেন্টের খাবার চুরি করে। সব কাজ প্রায় শেষ করে এনেছিল সে। কিন্তু ওই যে বলে না, লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু। আরজেরও হলো ঠিক সেই অবস্থা। অতিরিক্ত লোভের কারণেই সে বমাল ধরা পড়ে একেবারে হাতেনাতে। হিংস্র আর বদরাগী ভিনসেন্ট পারলে তখনই আস্ত খেয়ে ফেলে তাকে। কিন্তু চতুর আরজে ইনিয়ে-বিনিয়ে কোনোমতে ভালুকটিকে সে যাত্রায় ঠেকায়। সব খাবার ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অবশেষে মুক্তিও পায়। তবে শর্ত থাকে, এক সপ্তাহের মধ্যে সব খাবার ফিরিয়ে দিতে হবে। নইলে বুঝতেই পারছ, কী হবে!

মাথার ওপর মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে খাবার খুঁজতে বের হয় আরজে। কিন্তু কোনো উপায় মেলে না। এ সময় তার সঙ্গে পরিচয় হয় সহজ সরল গ্রাম্য একদল বন্য প্রাণীর। এরা হচ্ছে কচ্ছপ ভার্ন, কাঠবিড়ালি হ্যামিসহ আরও অনেকে। চারদিকে বসন্তের ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে কেবল। মাত্র কদিন হলো ওরা শীতনিদ্রা থেকে জেগে উঠেছে। শীতের বিবর্ণ ধু-ধু জায়গাটি এখন একটা বিশাল সবুজ ঝোপে পরিণত হয়েছে। কিন্তু তাদের একসময়কার আবাসস্থল দখল করে নিয়ে সেখানে উঠেছে এক বিলাসবহুল দালান। কিন্তু প্রাণের ভয়ে সেখানে যেতে সাহস পায় না তারা।

ভিনসেন্টের খাবার সংগ্রহ করতে ধূর্ত আরজে এই বোকাসোকা প্রাণীর দলকে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের ভালো আর সুস্বাদু সব খাবারের লোভ দেখিয়ে ঝোপের ওপাশে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে সে। উদ্দেশ্য, মানুষ নামের দুপেয়ে জন্তুদের বাড়ি থেকে খাবার চুরি করে আনা। তারপর সেগুলো ভালুকটিকে ফিরিয়ে দিয়ে প্রিয় পৈতৃক প্রাণটি বাঁচানো।

কিন্তু এত কিছুর পরও ভার্ন আর হ্যামিরা কিছুতেই রাজি নয় ঝোপের ওপাশে যেতে। ধূর্ত আরজেও ছিনেজোঁকের মতো নাছোড়বান্দা। একসময় সে ঠিকই সবাইকে লোভ দেখিয়ে নিয়ে যায় ওই পাশে। তারপর...তারপর ঘটতে থাকে সব মজার আর রোমাঞ্চকর ঘটনা। ছবিটি একসময় হলিউডের টপ চার্টে ছিল। একটু পুরোনো হলেও দম ফাটানো হাসি আর রোমাঞ্চে ভরপুর এ ছবিটি দেখতে শুরু করলে শেষ না করে উঠতে পারবে না।