রস-কষ সাহেব বুলবুলি মাসকট

মানুষের মধ্যে সুন্দরের ব্যাপারে নারীরা তুলনামূলকভাবে এগিয়ে থাকলেও পাখিদের ক্ষেত্রে কিন্তু একেবারেই উল্টো। যেমন দুধরাজ বা সাহেব বুলবুলি পাখির মধ্যে পুরুষ পাখিটির রয়েছে একেবারে রাজকীয় ভাব।

আমার পুরুষ-মেয়ে দুই ধরনের পাখিকেই খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। এমনকি, তিন বছর ধরে চেষ্টার পর এদের জীবনচক্রের সব ধরনের ধাপেরই ছবি তুলতে পেরেছি। কখনো এমন হয়েছে, টানা ১৫ দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এদের জন্য বাঁশবাগানে বসে থেকেছি। কষ্ট হয়েছিল অনেক, তবে রাজকীয় এই পাখিকে কাছ থেকে দেখার আনন্দের তূলনায় তা খুব সামান্যই।

শুধু রূপ নয়, পর্যাপ্ত বুদ্ধিও আছে দুধরাজের। শত্রুভাবাপন্ন কেউ, যেমন: বাজ, ফিঙে বা বড়সড় কোনো পাখি বাসার ধারেপাশে এলে এরা তাড়িয়ে বেড়ায়। সে কারণে অনেক নিরীহ পাখি এদের বাসার কাছে বাসা তৈরি করে নিরাপত্তার জন্য। দুধরাজের স্বভাব খুব চঞ্চল। এর ইংরেজি নাম এশিয়ান প্যারাডাইস ফ্লাইক্যাচার। অঞ্চলভেদে এদের দুধরাজ, সাহেব বুলবুলি, শাহ বুলবুল, সুলতান বুলবুল ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। এ পাখি দেখতে বুলবুলির মতো হলেও বুলবুলির সমগোত্রীয় নয়।

সুদীর্ঘ লেজ পাখিটির শারীরিক সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। লেজের জন্যই ছোট আকারের ঝুঁটিওয়ালা এই পাখি অন্য পাখি থেকে সহজেই আলাদা করে চেনা যায়।। যখন লম্বা লেজ নিয়ে তারা উড়ে বেড়ায়, তখন মনে হয় যেন স্বর্গ থেকে বেড়াতে এসেছে পৃথিবীতে।

স্ত্রী পাখি ডিম দেয় দুই থেকে চারটি। মা-বাবা উভয়েই ডিমে তা দেয়। তা থেকে দুই-তিনটি ছানা বড় হয়। ডিম ফোটার পর হালকা গোলাপি থাকে এদের রং। যৌবনে সেটা হয় লাল আর মরিচায় আবৃত। তিন থেকে চার বছর বয়সে এদের রং বদলে সাদা-কালোয় স্বর্গীয় হয়ে ওঠে। এরা সাধারণত ৮ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত বাঁচে। 

সারা দেশে পাখিটির আবাস হলেও উত্তরাঞ্চলে এদের বেশি দেখা যায়।

ক্যামেরা: ক্যানন ৬০ডি

লেন্স: ক্যানন ৫৫-২৫০ মিলিমিটার