এক শহরে ১৬ হাজার খুদে কবি!

একটা উপজেলায় ১৬ হাজার খুদে কবি থাকতে পারে? এই আশ্চর্য কাণ্ডটি ঘটেছে নীলফামারী জেলার সদর উপজেলায়। ওই উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন আর একটি পৌরসভার ৪৩৬টি স্কুল-মাদ্রাসা-কিন্ডারগার্টেনের ছেলেমেয়েদের বলা হলো তোমরা কবিতা লেখো। ‘শিশুদের কবিতা লিখন প্রতিযোগিতা’ হবে। মোট কতটা কবিতা জমা পড়েছে জানো? ১৬ হাজার। সেখান থেকে ধাপে ধাপে বাছাই করে ১৯৮ জনের কবিতা নিয়ে বেরিয়েছে বই  আমারদেশআমারমাটি। প্রকাশক কথাপ্রকাশ। সেই বিজয়ী ১৯৮ জনকে পুরস্কার দিতে আমরা গিয়েছিলাম নীলফামারীতে, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, কবি ও শিশুসাহিত্যিক আখতার হুসেন, আলম তালুকদার, সুজন বড়ুয়া ও আসলাম সানী—সবাই মিলে। ডিসেম্বরের ২৪ তারিখ, ২০১৫। শীতকাল। উত্তরবঙ্গের শীত মানে কিন্তু হাড়কাঁপানি শীত। সেই শীতের বিকেলে শহরের শহীদ মিনার চত্বর কানায় কানায় পূর্ণ। হাজার হাজার ছেলেমেয়ে বসে আছে চেয়ারে। তারা সবাই কবিতা লিখে অংশ নিয়েছে এই প্রতিযোগিতায়। তাদের অভিভাবকেরাও এসেছেন। তিল ধারণের আর জায়গা নেই। অনুষ্ঠানে প্রথমে হলো বক্তৃতা। তারপর পুরস্কার বিতরণী। সবশেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নীলফামারীর শিশুশিল্পীরা যে এত সুন্দর গান গাইতে পারে, এত সুন্দর নাচতে পারে, নিজের চোখে না দেখলে আমি বিশ্বাসই করতাম না। মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের বাড়িও দেখা হয়ে গেল এই সুযোগে। গাছগাছালিতে ঢাকা তার টিনে ছাওয়া একতলা বাড়ি। পেছনের বাঁশঝাড়ে ঘুঘুপাখির বাসা। সারাক্ষণ ঘুঘু ডাকছে ঘুঘু।

নীলফামারীর বন্ধুরা কেমন কবিতা লেখে। একটা এখানে তুলে ধরছি:

গ্রাম

মো. আল-আমিন ইসলাম

 নীলফামারীর পশ্চিম পাশে ছোট্ট একটি গ্রাম,

সবুজ-শ্যামল ছায়ায় ঘেরা ঢাকাইয়াপাড়া নাম।

সেই গ্রামের পাশে বয়ে গেছে ছোট্ট একটি খাল,

সেই খালেতে পাওয়া যায় রুই কাতলা আর বোয়াল।

সেই গ্রামেতে বাস করে অনেক পেশার মানুষ,

প্রধান পেশা কৃষি তাদের, ফলায় আমন-আউশ।

সেই গ্রামের মাঝে দিয়ে বয়ে গেছে কাঁচা মাটির রাস্তা,

বর্ষা এলে সেই রাস্তার হয় অচল অবস্থা।

সেই গ্রামের মানুষ যত সহজ আর সরল,

একসাথে থাকে ওরা করে না গন্ডগোল।

সেই গ্রামের মানুষের আছে সৎ চরিত্র ও সম্মান,

সমস্যা এলে তারা একসাথে করে সমাধান।

৬ষ্ঠ শ্রেণি, উত্তর পাটকামুরী উচ্চবিদ্যালয়, নীলফামারী।