খুলনা কিআ বুক ক্লাবের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি

‘পুবের হওয়া ঢুকছে যে আজ দক্ষিণ দুয়ার দিয়ে, সূর্যি মামা মুখ লুকোলো উত্তর অংশে গিয়ে/ সাগর ধারে নোনা হাওয়া মুখটি করে ভারী, হুড়মুড়িয়ে পড়ল ভেঙে পুবের বাড়ি আসি/ পথের ধারে চ্যাংড়া ছেলে ভুলটি করে আজ, যক্ষের ধন হারিয়ে ফেলে মাথায় দিল হাত।’  

বলছিলাম খুলনা কিশোর আলো বুক ক্লাবের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উৎসবের ‘যক্ষের ধন’-এর সন্ধানে নামা সদস্যদের দিকনির্দেশিকার কথা। ২৩ আগস্ট সকালে খুলনা জিলা স্কুলে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উৎসবের সকালের পর্ব। উৎসব প্রাঙ্গণে সকাল ৭টা থেকেই আসতে শুরু করে প্রতিযোগীরা। সকাল ৯টায় আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে খুলনা জিলা স্কুলের মিলনায়তন কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। কিআ অলিম্পিয়াড দিয়েই শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর মঞ্চে বিতর্ক কর্মশালা পরিচালনা করেন দেশসেরা তার্কিক মারজান হোসেন। বারোয়ারি, রম্য, আঞ্চলিক বিতর্ক সম্পর্কে ধারণা দেন তিনি। এরপর ‘মূকাভিনয়’ প্রদর্শন করেন মূকাভিনেতা ফয়সাল হোসেন। মূকাভিনয়ের মাধ্যমে সমাজের ধনী-গরিবের বৈষম্য তুলে ধরা হয়।

সকালের পর্বে সর্বশেষ আয়োজন ছিল ‘আ্যম্বিগ্রাম’ কর্মশালা। পরিচালনা করেন আ্যম্বিগ্রামশিল্পী রাশেদ শেখ ও পান্থ সরকার। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবা অফিসার আবিদা আফরিন, প্রথম আলো খুলনা জেলা প্রতিনিধি শেখ আল এহসান ও খুলনা জিলা স্কুলের সহকারী শিক্ষক সরদার বদির হোসেন। কিআ অলিম্পিয়াডে ‘প্রাথমিক বিভাগ’-এ চ্যাম্পিয়ন হয় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আরিফ ইশতিয়াক এবং ‘মাধ্যমিক বিভাগ’-এ চ্যাম্পিয়ন হয় দশম শ্রেণির ছাত্রী ফারহানা আক্তার। বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। 

মূকাভিনয় প্রদর্শন করেন ফয়সাল হোসেন
মূকাভিনয় প্রদর্শন করেন ফয়সাল হোসেন

সকালের পর্ব শেষ হওয়ার পরপরই যক্ষের ধনের ক্লু দেওয়া হয়। যক্ষের ধনের সন্ধান শেষ করে নামাজ এবং দুপুরের খাবারের বিরতি দেওয়া হয়। বিরতির পর ক্লাবের সমন্বয়ক মো. ওয়াছিউল ইসলামের নেতৃত্বে এক দল ‘শান্তি সদন’ এবং সহসমন্বয়ক আহসান হাবিবের নেতৃত্বে আরেক দল শিশু সদনে যায়।

শান্তি সদন একটি বৃদ্ধাশ্রম। পরিচালক রসু আক্তার ক্লাবের সদস্যদের শান্তি সদনের পথচলার পরিক্রমা শোনান। সেখানে থাকা বৃদ্ধ মায়েদের জন্য ক্লাবের পক্ষ থেকে বিছানার চাদর উপহার দেওয়া হয়। এরপর সবাই শিশু সদনে চলে আসে।

শিশু সদনে যাওয়া প্রথম দলটি সেখানে বাচ্চাদের জন্য ড্রয়িংয়ের প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। সেখান থেকে শ্রেষ্ঠ ১০ জনকে বই এবং নানা শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়। এরপর ক্লাবের তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে শিশুদের নিয়ে কেক কাটা হয়। যার মাধ্যমে এবারের উৎসবের পরিসমাপ্তি ঘটে।

ছবি : ফারদিন জানি