১০০ বইয়ের চ্যালেঞ্জ

তোমরা তো চ্যালেঞ্জ নিতে খুব পছন্দ করো। তো হয়ে যাক চ্যালেঞ্জ। ১০০ বইয়ের চ্যালেঞ্জ! এই লেখায় ১০০টা বইয়ের নাম দিচ্ছি আমরা। আমরা মনে করি, কিশোর বয়সেই এই বইগুলো পড়ে ফেলা খুব জরুরি। তোমাদের চ্যালেঞ্জ হলো, বছরজুড়ে এই বইগুলো পড়ে ফেলতে হবে। বইগুলো পড়ে কেমন লাগল সেটা জানাবে আমাদের। চিঠি, ইমেইল কিংবা ফেসবুকে। যাদের ফেসবুক আছে, একেকটি বই পড়েই নিজের প্রোফাইলে বইটির নাম উল্লেখ করে হ্যাশট্যাগ লিখবে #KiA100BooksChallenge। এতে সহজেই আমরা জেনে যাব তুমি কোন বইটি পড়লে। যারা এই তালিকার অনেক বই পড়ে ফেলেছ, তারাও জানাবে তোমাদের মতামত। আশা করি বছরজুড়ে দারুণ কাটবে তোমাদের ‘চ্যালেঞ্জিং টাইম’।   

কাটা আর কুটি দুই ভাইবোন। ওরা পোকা। কুটকুট করে কাগজ কাটাই ওদের নেশা–পেশা। একবেলা কাগজ না কাটলে ওদের পেট ভরে না, মনও ভরে না। ওরা কত কিছু কাটে! পুরোনো পত্রিকা কাটে, মানচিত্র কাটে, হিসাবের খাতা কাটে, বিদ্যুতের বিল কাটে। তবে ওদের সবচেয়ে প্রিয় বই। পুরোনো গন্ধওয়ালা একটা বই পেলে ওদের আর আনন্দ ধরে না। দাঁতে শাণ দিয়ে লেগে পড়ে বইয়ের পৃষ্ঠায়। কাটতে কাটতে বইয়ের এক পাশ থেকে শুরু করে আরেক পাশে না যাওয়া পর্যন্ত ওদের শান্তি নেই। কিন্তু এই শান্তিতে ব্যাঘাত ঘটালেন ওদের বড় চাচা। ‘বইয়ের পোকা’ হিসেবে তাঁর খুব দুর্নাম আছে পোকাদের তল্লাটে। না না, বই কাটেন না তিনি; বরং বই পড়েন! সেই বড় চাচা এক সকালে ঘোষণা দিলেন, এখন থেকে আর বই কাটা চলবে না। কাটা আর কুটি আকাশ থেকে পড়ল, ‘বড় চাচা, এটা আপনি কী বলেন! বই না কাটলে কাটব কী?’ বড় চাচা নাকের ওপর চশমাটা ঠেলে ওপরে তুলে দিয়ে বললেন, ‘ওরে বোকার দল, বই কাটার চেয়ে বই পড়ায় যে কী মজা, তা তো তোরা বুঝলি না!’ কাটা বলল, ‘তাহলে বুঝিয়ে বলুন।’ কুটি বলল, ‘হ্যাঁ, বুঝিয়ে বলুন। বই পড়লে কী এমন মজা পাব যে বই কাটাই ছেড়ে দিতে হবে?’ বড় চাচা গলা খাঁকারি দিয়ে বললেন, ‘সত্যিই তোরা শুনতে চাস?’ কাটা–কুটি বলল, ‘হ্যাঁ, শুনতে চাই।’ ‘তবে শুরু করি। সব বইয়ের কথা তো আর বলা যাবে না, বছাই করে এক শ বইয়ের গল্প বলি তোদের। এই এক শ বই না পড়লে জীবনই বৃথা। শোন তাহলে...’ বলেই চাচা শুরু করলেন… (সব কথা আড়ি পেতে শুনে নিয়েছেন
মাহফুজ রহমান)

রূপকথার রাজ্যে
পৃথিবীতে সত্যিকারের রাজ্যে ঢুকতে পাসপোর্ট–ভিসার হ্যাঁপা আছে। কিন্তু রূপকথার রাজ্যে ঢোকা খুব সোজা। আর একবার ঢুকলেই বোঝা যায়, কল্পনাও কত কল্পনাতীত হতে পারে। রূপকথার ডালিম কুমার হাড়ের পাহাড়ের ওপর দিয়ে পঙ্খীরাজ নিয়ে উড়ে যায়। নিচে কলকল শব্দে ভীষণ বেগে ছুটে চলে রক্তনদী। মড়ার মুখ থেকে ভেসে আসে বিকট হাসি। হাড়ে হাড়ে কটাকট খটাখট শব্দ হয়। ডালিম কুমার তার পঙ্খীরাজকে বলে, ‘ভয় নাই, চোখ বুজিয়া চলো।’ রূপকথার গল্প মানুষের কল্পনার দরজা–জানালা খুলে দেয়, সাহস আর প্রেরণা জোগায়, হান্স ক্রিশ্চিয়ান আন্দেরসেনের ‘কুৎসিত হাঁসের ছানা’ গল্পটি যেমন। একসময় কুৎসিত বলে যাকে সবাই দূরদূর করত, শেষমেশ তার প্রশংসায় সবাই পঞ্চমুখ।

রূপকথা
গ্রিম ভাইদের রূপকথা
হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসনের রূপকথা
ঠাকুমার ঝুলি – দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার
তোমাদের জন্য রূপকথা – হুমায়ূন আহমেদ
অপরূপ রূপকথা – বুদ্ধদেব বসু
অস্কারওয়াইল্ডের সেরা রূপকথা
রাশিয়ার রূপকথা
ইংল্যান্ডের রূপকথা
জাপানের রূপকথা
অনেক চাঁদ - সম্পাদনা: জামিল বিন সিদ্দিক

চিরকালের আকাশে
কিছু বই মানুষ যুগের পর যুগ পড়ছে আর মুগ্ধ হচ্ছে। চিরায়ত এই বইগুলোর গল্প কখনো খুব বাস্তব, কখনো পুরোপুরি লাগামছাড়া কাল্পনিক। কিন্তু এগুলোর আবেদন থেকে যায় প্রজন্মের পর প্রজন্ম। অলিভার নামের বাপ–মা হারা এক কিশোর যখন একের পর এক বিপদে পড়ে, তখন কষ্টে বুক ভেঙে যায়। আবার দুষ্টু বিড়ালের মুখে খামচি মেরে যখন একটা টুনটুনি ছানাদের নিয়ে উড়াল দেয়, তখন আনন্দে পেট গুড়গুড় করে। গালিভার নামের এক লোক যখন লিলিপুটদের দেখা পায়, তখন কেউ কেউ নিজেদের গালিভার ভাবে, আবার কেউবা লিলিপুট ভেবে মজা পায়। ‘উপগ্রহ ৩২৫’ নামের ছোট্ট এক গ্রহাণু থেকে পৃথিবীতে আসা ছোট্ট রাজপুত্তুরের দেখা পাওয়ার জন্য কতজন যে বসে থাকে এখনো!

চিরায়ত
আম আঁটির ভেঁপু – বিভূতিভূষণ বন্দ্যেপাধ্যায়
বুড়ো আংলা – অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রামের সুমতি – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
অলিভার টুইস্ট - চার্লস ডিকেন্স
টেল অব টু সিটিজ - চার্লস ডিকেন্স
রবিনসন ক্রুসো - ড্যানিয়েল ডিফো
লা মিজারেবল – ভিক্টর হুগো
ছোট্ট রাজপুত্তুর - অঁতোয়ান দ্য স্যাঁত একজ্যুপেরি
আঙ্কল টমস কেবিন - হ্যারিয়েট বিচার স্টো
হ্যাঞ্চ ব্যাক অব নটরডেম - ভিক্টর হুগো
গালিভারস ট্রাভেলস - জোনাথন সুইফট
সী উল্‌ফ্‌ – জ্যাক লন্ডন
প্রিন্স অ্যান্ড দ্য পপার – মার্ক টোয়েন
মুমু - ইভান তুর্গেনেভ
লিটল হাউস অব দ্য প্রেইরি – লরা ইঙ্গলস ওয়াইল্ডার


বাস্তবের মাটিতে
হাসান আজিজুল হক তাঁর লেখা সক্রেটিস বইয়ের ভূমিকায় লিখেছেন, ‘মানুষের আড়াই হাজার বছরের সভ্যতার বিশাল ওজনের খানিকটার চিরকালের বহনকারী টাইটানিক এই মানুষটি—সক্রেটিস।’ বুঝতেই পারছ, সক্রেটিসকে জানলে পৃথিবীর অনেক কিছুই জানা হয়ে যায়, যেমন বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস জানতে হলে পড়া যেতে পারে হুমায়ুন আজাদের লাল নীল দীপাবলি বা বাঙলা সাহিত্যের জীবনী বইটি। এই বইয়ে মেলে কাহ্নপা, লুইপা, কুক্কুরীপা, বিরুআপা, ভুসুকুপা, শবরপার মতো সুদূর রহস্যময় কবিদের থেকে শুরু করে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের দেখা। গল্প–উপন্যাসের বাইরেও সত্যিকারের গল্প নিয়ে লেখা বইগুলো তাই নিজেদের চিনতে শেখায়; বিজ্ঞানমনস্ক এবং আরও মানবিক করে তোলে। যে গল্পের শেষ নেই বইটি যেমন আমাদের সামনে মেলে ধরে মানুষের ইতিহাস। কোথা থেকে এসেছি, কীভাবে চলছি আর গন্তব্যই বা কোথায়…।

নন–ফিকশন
মশলার যুদ্ধ - সত্যেন সেন
বক্তৃতা সংগ্রহ - আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
একটুখানি বিজ্ঞান - মুহম্মদ জাফর ইকবাল
বরণীয় মানুষ স্মরণীয় বিচার - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় মেয়ের কাছে বাবার চিঠি - জওহরলাল নেহেরু
সোফির জগৎ - ইয়েস্তেন গার্ডার
সক্রেটিস – হাসান আজিজুল হক
লাল নীল দীপাবলী - হুমায়ুন আজাদ
রসায়নের শত গল্প – লেভ ভ্লাসভ, দ্‌মিত্রিই ত্রিফোনভ
আবিষ্কারের নেশায় - আবদুল্লাহ আল মুতী

ভূতের ভুবনে
মানুষ কেবল মানুষের গল্পই পড়তে চায় না। ক্লাসের সবচেয়ে লাড্ডাগাড্ডা এক ছেলে একদিন একটা ভূত পেয়ে গেল। ‘রবীন্দ্রনাথ’ নামের এক বৃদ্ধ তাকে ভূতটা দিল হোমিওপ্যাথির বোতলে করে। সেই বোতল ভূত ছেলেটার সব ইচ্ছা পূরণ করে দেয়। ফলে বোতল ভূত পাঠকেরও প্রিয় হয়ে ওঠে। কিছু ভূত আবার ভয়ংকরের চূড়ান্ত। নিঝুম রাতে লেপের নিচে গুটিশুটি মেরে ওসব ভূতের বই পড়তে শুরু করার পর পাতা ঝরার আওয়াজ শুনলেও অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে, যেমনটা হয় পূর্ব ইউরোপের কার্পেথিয়ান পর্বতমালার এক অতি নির্জন পাহাড়চূড়ার দুর্গবাসী কাউন্ট ড্রাকুলার গল্প পড়লে। কাউন্ট ড্রাকুলা জীবিত নয়, কিন্তু মৃতও নয়, সে মৃত্যুহীন। মানুষের তাজা রক্তই তাকে মৃত্যুহীন করে রাখে! (বাপরে, ওটা কিসের শব্দ!)

ভৌতিক
বোতল ভূত – হুমায়ূন আহমেদ
গোঁসাইবাগানের ভূত – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
ড্রাকুলা – ব্রাম স্ট্রোকার
ভূতের নাম রমাকান্তকামার – ইমদাদুল হক মিলন
প্রেত – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

বিজ্ঞানের কল্পলোকে
বিজ্ঞান কল্পগল্পের এমন অনেক বিষয়–আশয় আছে যা পরবর্তী সময়ে সত্যি হয়েছে। ১৮৯৮ সালে বিখ্যাত মার্কিন লেখক মার্ক টোয়েন ফ্রম দ্য ‘লন্ডন টাইমস’ অব ১৯০৪ গল্পে ইন্টারনেটের কথা বলেছিলেন। ফরাসি লেখক জুল ভার্ন মানুষের চাঁদে পা রাখার গল্প লিখেছিলেন ফ্রম দ্য আর্থ টু দ্য মুন বইয়ে। জুল ভার্ন গল্পটি লিখেছিলেন সত্যি সত্যি চাঁদে যাওয়ার এক শ বছর আগে! বিজ্ঞান কল্পগল্প নিছক গল্প নয়, গল্পের ভেতরেও থাকে ভবিষ্যতের কথা। ভিনগ্রহের ছোট্ট এক প্রাণীর জন্য মায়ার কথাও থাকে। মুনির নামের এক ছেলে টুকুনজিল নামের ভিনগ্রহীকে যখন বিদায় জানায়, তখন আমাদেরও আনন্দ মেশানো কষ্ট হয়। রাতের আকাশে আমরা অ্যান্ড্রোমিডা নক্ষত্রপুঞ্জ খুঁজে বেড়াই, যেখানকার কোনো এক গ্রহে বাস করে টুকুনজিল।

বিজ্ঞান কল্পকাহিনি
টুকুনজিল – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
গ্রহান্তরের আগন্তুক - আলেক্সান্দর কাজানৎসেভ
অদৃশ্য মানব – এইচ জি ওয়েলস
সাগরতলে - জুল ভার্ন
ফিহা সমীকরণ – হুমায়ূন আহমেদ
উভচর মানুষ – আলেক্সান্দর বেলায়েভ
ফ্রাংকেস্টাইন – মেরি শেলি
ফাউন্ডেশন – আইজ্যাক আজিমভ
ড. জেকিল অ্যান্ড মি. হাইড - রবার্ট লুই স্টিভেনসন
শঙ্কু সমগ্র – সত্যজিৎ রায়


হাসির খনিতে
ভীষণ গরমে গাছতলায় চুপচাপ শুয়ে ছিল এক ছেলে। ঘাসের ওপর রুমাল তুলতে গেল সে। অমনি রুমালটা বলল, ‘ম্যাও!’ ছেলেটা চেয়ে দেখল, রুমাল আর রুমাল নেই, দিব্যি মোটাসোটা লাল টকটকে একটা বিড়াল হয়ে গেছে। একেই বলে হ–য–ব–র–ল অবস্থা। এই গল্প পড়তে শুরু করলে মন তোমার যতই খারাপ থাক, হাসি পাবেই। সুকুমার রায় এমনই এক জাদুকর ছিলেন। বাঙালির রসবোধ যে কম নয়, তার সন্ধান দিয়ে গেছেন কবি জসীমউদ্‌দীন। বাঙালির হাসির গল্পগুলো জড়ো করে বই লিখে গেছেন তিনি। যুক্তি–বুদ্ধি–বিজ্ঞান–ইতিহাস যখন আমাদের মাথায় জট পাকিয়ে দেয়, তখন হাসির গল্প টনিক হিসেবে কাজ করে। হাসির গল্পের টেনিদা, ঘনাদা, লেবু মামারা জীবনভর আমাদের বেদম হাসায়।

হাসির গল্প
হোজ্জার গল্প
বীরবলের গল্প
বাঙ্গালীর হাসির গল্প – জসীমউদ্‌দীন
ব্যারন মুনশাউজেনের রোমাঞ্চকর অভিযান
সাজেদুল করিমের শ্রেষ্ঠ গল্প
মামার বিয়ের বরযাত্রী - খান মোহাম্মদ ফারাবি
হযবরল - সুকুমার রায়
ঘনাদা সমগ্র - প্রেমেন্দ্র মিত্র
শিবরাম চক্রবর্তীর শ্রেষ্ঠ গল্প
টেনিদা সমগ্র - নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়


অ্যাডভেঞ্চারের ময়দানে
স্কুল মানেই পরীক্ষার জন্য পড়া, পড়া আর পড়া। কিন্তু হ্যারি পটার নামের এক কিশোরের স্কুলটা ভারি অদ্ভুত; জাদুবিদ্যার চর্চা হয় সেখানে। খেলাধুলার ধরনও একেবারে অন্য রকম। ঝাড়ুতে সওয়ার হয়ে ডানাওয়ালা এক বলের পেছনে ছুটতে হয়। আনন্দে ভরপুর এই পরিবেশে জীবনপণ লড়াইও করতে হয় হ্যারিকে। এমন অ্যাডভেঞ্চারের গল্পে কে না মজে! মানুষের গহিন ভেতরে রোমাঞ্চের প্রতি পুরোনো একটা টান আছে। এ কারণে শঙ্কর নামের এক বাঙালি তরুণের আফ্রিকায় হীরার খনি খুঁজে পাওয়ার গল্প আমাদের শিহরিত করে। নুলিয়াছড়িতে আবির, বাবু, ললি আর টুনির অভিযানের গল্প আমাদের ঘর থেকে বের করে আনে। টম সয়্যার আর তার বন্ধু হাক ফিন তো সুযোগ পেলেই কাঁধে টোকা দিয়ে বলে, ‘যাবে নাকি অভিযানে?’

অ্যাডভেঞ্চার
যকের ধন – হেমেন্দ্রকুমার রায়
চাঁদের পাহাড় – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
ট্রেজার আইল্যান্ড – রবার্ট লুই স্টিভেনসন
রবিনহুড– কাজী আনোয়ার হোসেন
৮০ দিনে বিশ্বভ্রমণ - জুলভার্ন
দি অ্যাডভেঞ্চার অব টম সয়্যার – মার্ক টোয়েন
নুলিয়াছড়ির সোনার পাহাড় – শাহরিয়ার কবির
বাড়ি থেকে পালিয়ে – শিবরাম চক্রবর্তী
সলোমনের গুপ্তধন - হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড
হ্যারি পটার অ্যান্ড দা ফিলোসফারস স্টোন – জে কে রাউলিং


গোয়েন্দার কুঠুরিতে
‘ত্রিনয়ন ও ত্রিনয়ন, একটু জিরো’—মামুলি একটা বাক্য; কিন্তু ভেতরে লুকিয়ে আছে মূল্যবান সম্পদের হদিস, স্রেফ বুদ্ধির জোরে যেটা কেবল উদ্ধার করতে পারে ফেলুদা। বাঙালি এই গোয়েন্দার খুড়তুতো ভাই তপেশরঞ্জন মিত্র ওরফে তোপসেকে ভীষণ হিংসা হয় আমাদের। ওর জায়গায় যদি আমি থাকতে পারতাম! কিংবা শার্লক হোমসের বন্ধু–সহকারী ওয়াটসন হতে পারলেও তো জীবনটা ধন্য হয়ে যেত। শার্লকের চোখের কথা কী আর বলি! চোখ তো নয়, যেন ম্যাগনিফাইং গ্লাস। এক ঝলকে সবকিছু কেমন পড়ে ফেলে আর উন্মোচন করে গোপন রহস্য। তিন গোয়েন্দার কথা তো না বললেই নয়। যে–ই ওদের গল্প পড়ে, সে–ই হয়তো ভাবে, ‘কেন রে ভাই আমাকে সঙ্গে নিয়ে চার গোয়েন্দা হলে না তোমরা!’

রহস্য/থ্রিলার
মিসমিদের কবচ – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
ফেলুদা সমগ্র – সত্যজিৎ রায়
তিন গোয়েন্দা সিরিজ – রকিব হাসান
ব্যোমকেশসমগ্র – শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
এমিলের গোয়েন্দা দল – এরিখ কেস্টনার
দ্য হাউন্ড অব দ্য বাস্কারভিলস – স্যার আর্থার কোনান ডয়েল
মার্ডার ইন দ্য ওরিয়েন্টেল এক্সপ্রেস – আগাথা ক্রিস্টি
কাকাবাবু সমগ্র - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
কিকিরা সমগ্র - বিমল কর
গোয়েন্দা বরদাচরণ সমগ্র ও অন্যান্য - শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়


ছন্দের বারান্দায়
পৃথিবী যে ঘুরছে, তাতেও একটা ছন্দ আছে। ঠিক ঠিক ৩৬৫ দিনে সূর্যের চারপাশে একবার ঘুরে আসে। নদীর ঢেউ ছন্দ মেনে চলে, পাখির ডাকেও কী চমৎকার ছন্দ! পাড়ার গলিতে যে লোকটা মাইকে ভোট চাইছে, সে–ও কী সুন্দর ছন্দে–ছড়ায় বলছে, ‘অমুক ভাইয়ের চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র…’। ছড়া–কবিতা চারপাশের এই ছন্দময়তা আবিষ্কার করতে শেখায়। কবিতার ছন্দে আমরা মানুষের কথা শুনি, ‘গাহি সাম্যের গান—/মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান…’। দেখি প্রকৃতির রূপ, ‘অন্ধকারে জেগে উঠে ডুমুরের গাছে/ চেয়ে দেখি ছাতার মতন বড়ো পাতাটির নিচে বসে আছে/ ভোরের দোয়েলপাখি…।’ সামান্য কথাও যে এত সুন্দর করে বলা যায়, ছড়া–কবিতা না পড়লে বোঝা ভার।

ছড়া
খাপছাড়া – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সঞ্চিতা - কাজী নজরুল ইসলাম
রূপসী বাংলা - জীবনান্দ দাস
পাখির কাছে ফুলের কাছে - আল মাহমুদ
লেজ আবিষ্কার - সুকুমার বড়ুয়া

গুণীজনের ছায়ায়
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে তো সেই ছেলেবেলা থেকেই একই রকম দেখছি; তিনিও কি ছোট ছিলেন? তাঁর লেখা ছেলেবেলা বইটা পড়লে অবশ্য আমরা আবিষ্কার করি ছোট্ট রবিকে। আমাদের মতোই যে পড়ায় ফাঁকি দিত, খাওয়ার সময় হাজারটা বায়নাক্কা করত। তাঁর বেড়ে ওঠার কাহিনি, পৃথিবীকে বুঝতে শেখার গল্প আমাদের পাথেয় হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাতির জনক হয়ে ওঠার গল্পগুলো আমাদের সাহসী করে তোলে। শামসুর রাহমানের স্মৃতির শহর পড়ে আমরা ঢাকা শহরের অলিগলিতে মায়া খুঁজে পাই। সত্যজিৎ রায় যখন ছোট ছিলেন, তখন পৃথিবীটা কেমন ছিল, সেসবের সন্ধান পাই তাঁর আত্মকথা পড়ে। গুণীজনেরা একেকজন ছায়াময় বৃক্ষ। তাঁদের লেখা আত্মজীবনীগুলো আমাদের শেখায়, মানুষ কী করে অমন বৃক্ষ হয়ে ওঠে।

আত্মকথা
অসমাপ্ত আত্মজীবনী – শেখ মুজিবুর রহমান
ছেলেবেলা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
যখন ছোট ছিলাম – সত্যজিৎ রায়
স্মৃতির শহর – শামসুর রাহমান
ইস্কুল টাইম – আহসান হাবীব

ইতিহাসের আয়নায়
যে মাটিতে আমরা দাঁড়িয়ে আছি, যে ভাষায় কথা বলছি, যে দেশের বাতাস আমাদের বুক ভরিয়ে দেয়—তার কিছুই সহজলভ্য ছিল না। লাখো মানুষ জীবন দিয়ে এই ভাষা আর এই দেশ অর্জন করেছিলেন। তাঁদের ছিল মানুষ, দেশ আর মায়ের জন্য ভালোবাসা। তাই তো মুক্তিযুদ্ধে ছেলে আজাদ শহীদ হওয়ার পর তাঁর মা ভাত না খেয়ে কাটিয়ে দিয়েছিলেন সারাটা জীবন। মানুষ আজও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে সব মুক্তিযোদ্ধাকে। প্রিয় পৃথিবী ছেড়ে যাঁরা হাসিমুখে মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছিলেন, তাঁদের কাহিনি পড়লে আমরা মানুষকে আরও ভালোবাসতে শিখি। মানুষকে ভালোবাসলে দেশটাকেও ভালোবাসা যায়। আর দেশকে ভালো না বাসলে যে নিজেকেও ভালোবাসা যায় না! এ কারণে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অবশ্যপাঠ্য।

মুক্তিযুদ্ধ
একাত্তরের দিনগুলি – জাহানারা ইমাম
একাত্তরের ডায়েরি – সুফিয়া কামাল
সূর্যের দিন – হুমায়ূন আহমেদ
গেরিলা থেকে সম্মুখযুদ্ধে– মাহবুব আলম
আমার বন্ধু রাশেদ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
মা – আনিসুল হক
একাত্তরের চিঠি
একাত্তরের কিশোর মুক্তিযোদ্ধা - হামিদুল হোসেন তারেক বীরবিক্রম
একাত্তরের যিশু– শাহরিয়ার কবির
আরও এক বদ্ধভূমি– আবুল মোমেন

অলংকরণ: আরাফাত করিম