হ্যালো, কিটি!

বিশ্বের সবচেয়ে চালাক বিড়াল কিটি
বিশ্বের সবচেয়ে চালাক বিড়াল কিটি

বিশ্বের সবচেয়ে চালাক বিড়াল ছিল ও। নাম প্রিন্সেস কিটি। ওকে চালাক বলার কারণ, ও এমন কাজ নেই, যা পারত না। অন্তত ৭৫ রকমের খেলা জানত রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া এই বিড়াল। ও গুনতে জানত, দড়ি লাফাতে পারত, পারত বাস্কেটবলের ঝুড়িতে লাফ দিতে, এমনকি পিয়ানো বাজাতেও জানত।

‘প্রিন্সেস কিটির মতো বিড়াল আর দুটি নেই,’ বলেছিলেন পারভিউ ইউনিভার্সিটির প্রাণী বিশেষজ্ঞ অ্যালন বেক, ‘বিড়ালের শরীরে যেন এক চালাক মানুষ।’

অথচ মজার ব্যাপার, আট বছরের এ বিড়ালটিকে রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছিলেন মায়ামির ক্যারেন পেন। ওকে কে যেন গুলি করেছিল। ক্যারেনই বিড়ালটিকে সেবা-শুশ্রূষা করে সুস্থ করে তোলেন। একসময় আবিষ্কার করেন, বিড়ালটির মাথায় বেজায় বুদ্ধি। তারপর তিনি ওকে কিছু মজাদার ট্রিকস শেখাতে শুরু করেন।

সে বসতে বললে স্থির বসে থাকত, ঘণ্টা বাজিয়ে গুনতে পারত, দড়ির ফাঁসের মধ্যে লাফানো তার জন্য কোনো ব্যাপারই ছিল না। কিটি জানত কীভাবে হ্যান্ডশেক করতে হয়।

‘কিটি চমৎকার পিয়ানো বাজাতে পারত,’ স্মৃতিচারণা করেন ক্যারন। ‘সে “থ্রি ব্লাইন্ড মাইস” সুরটি খুবই ভালো বাজাত। আর চমৎকার সুর তুলতে পারত বিটোফেনের ফিফথ সিম্ফনির, কিটির জন্য এ কারণে আমাকে একটি খেলনা পিয়ানো কিনে দিতে হয়েছিল।’

পিয়ানো বাজাচ্ছে কিটি
পিয়ানো বাজাচ্ছে কিটি

সার্কাসের বিড়ালেরা খেলা দেখায়। কিন্তু কিটির কাছে তারা কিছুই ছিল না। ক্যারেন তাকে যেসব খেলা শিখিয়েছিলেন, অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে কিটি সব খেলা আয়ত্ত করে নিয়েছিল। আর একবার কোনো খেলা কিটি শিখলে জীবনে ভুলত না। তেমনি মানুষের চেহারাও কিটি ভালোভাবে মনে রাখতে পারত। একবার যদি কিটি কাউকে দেখত, পরেরবার তাকে ঠিকই শনাক্ত করতে পারত। এতসব অদ্ভুত গুণের অধিকারী বলে গোটা আমেরিকায় ছিল কিটির সাংঘাতিক কদর। সে কত স্কুল আর হাসপাতালে যে তার আজব খেলাগুলো দেখিয়েছে, তার হিসাব নেই। প্রচুর ক্যাট শোতে অংশ নিয়েছে আজব বিড়াল কিটি।

কিটির জন্য আমেরিকায় ফ্যান ক্লাবও গড়ে উঠেছে। কিটি তার ফ্যান ক্লাবের সদস্যদের কাছে কাগজে নিজের থাবা এঁকে পাঠিয়েছিল শুভেচ্ছাস্বরূপ।

‘শিশুরা তো কিটি বলতে পাগল,’ বলেছেন ক্যারেন। ‘সে প্রতিদিন শত শত কবিতা, গল্প আর চিঠি পায় বাচ্চাদের কাছ থেকে। প্রিন্সেস কিটি যেন বিড়ালকুলের রাষ্ট্রদূত। সে প্রমাণ করেছে, মানুষ বিড়ালদের যতটা চালাক মনে করে, তার চেয়ে তারা অনেক বেশি চালাক ও বুদ্ধিমান।’ শুনলে দুঃখই পাবে, এই অসাধারণ চালাক বিড়ালটি ২০০৩ সালে মারা গেছে। তবে আমেরিকার ছেলে-বুড়োরা এখনো কিটিকে ভোলেনি। কিটির স্মরণে কত রকমের খেলনা, বালিশ, পেনসিল, পেনবক্স, জুতা, ড্রেস ইত্যাদি তৈরি হয়েছে তার হিসাব নেই। প্রিন্সেস কিটিকে নিয়ে ‘হ্যালো কিটি’ নামে গাদা গাদা গেমসও বানানো হয়েছে। কিটিকে যে আজও মানুষ ভোলেনি, এগুলো তারই প্রমাণ!