পুলিশ ১০ হাজার কনস্টেবল নেবে

.
.

বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে লোক নেবে বলে বিভিন্ন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। পদটিতে ৮ হাজার ৫০০ জন পুরুষ ও ১ হাজার ৫০০ জন নারী কনস্টেবলসহ সব মিলিয়ে ১০ হাজার লোক নিয়োগ করা হবে। নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিটি পাওয়া যাবে https://goo.gl/FzYKlq এই লিংকে।
আগ্রহী প্রার্থীদের নিজ জেলার সংশ্লিষ্ট পুলিশলাইনস ময়দানে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত নির্ধারিত তারিখ সকাল ৯টায় শারীরিক মাপ ও পরীক্ষার জন্য উপস্থিত থাকতে হবে। তাই যাঁরা বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল পদে কাজ করে জননিরাপত্তা ও দেশসেবা করতে চান, তাঁরা নিতে পারেন এই সুযোগ।

আবেদনের যোগ্যতা
কনস্টেবল পদে আবেদন করতে হলে প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম জিপিএ ২.৫-সহ এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি শারীরিক যোগ্যতাও থাকতে হবে। শারীরিক যোগ্যতার ক্ষেত্রে সাধারণ ও অন্যান্য কোটার পুরুষ প্রার্থীদের জন্য উচ্চতা কমপক্ষে ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং নারী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৫ ফুট ২ ইঞ্চি হতে হবে। আর বুকের মাপ পুরুষ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি ও সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩৩ ইঞ্চি হতে হবে। বয়স হতে হবে ০১-০৪-২০১৭ তারিখে ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। মুক্তিযোদ্ধা ও উপজাতীয় কোটার ক্ষেত্রে শারীরিক যোগ্যতা ও বয়সের ভিন্নতা রয়েছে। প্রার্থীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক ও অবিবাহিত হতে হবে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও বাছাই পদ্ধতি
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত নির্ধারিত সময় ও স্থানে উপস্থিত থেকে প্রার্থীদের প্রথমে শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষা দিতে হবে। প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃত প্রার্থীদের জেলার পুলিশ সুপার কর্তৃক সরবরাহকৃত আবেদন ফরম পূরণ করে ৩ কপি সত্যায়িত ছবিসহ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র ও পরীক্ষা ফি বাবদ ১০০ টাকা ১-২২১১-০০০০-২০৩১ এই কোড নম্বরে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে চালানের কপি আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে। এরপর শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নির্ধারিত তারিখে ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট সময়ের ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে।
বিগত বছরে নিয়োগ পাওয়া কয়েকজন কনস্টেবলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লিখিত পরীক্ষায় সাধারণত বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত ও সাধারণ জ্ঞান থেকে প্রশ্ন থাকে। লিখিত পরীক্ষায় ভালো করতে হলে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির পাঠ্যবইগুলো ভালোভাবে পড়তে হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রার্থীদের ২০ নম্বরের মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। উত্তীর্ণ হতে হলে উভয় পরীক্ষায় আলাদাভাবে ৪৫ শতাংশ নম্বর পেতে হবে।
পুলিশ ভেরিফিকেশন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যোগ্য প্রার্থীদের প্রাথমিকভাবে প্রশিক্ষণের জন্য মনোনীত করা হবে। পরে এসব প্রার্থীর প্রশিক্ষণকেন্দ্রে যোগদানের পর পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত পুনঃ বাছাই কমিটি কর্তৃক অন্যান্য তথ্য যাচাইয়ের পর তাঁদের চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

প্রশিক্ষণ
মনোনীত প্রার্থীদের প্রথমে নির্ধারিত প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) হিসেবে ৬ মাস মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে হবে। এই প্রশিক্ষণকালীন প্রার্থীরা বিনা মূল্যে পোশাকসামগ্রী, থাকা-খাওয়া, চিকিৎসা সুবিধাসহ প্রতি মাসে ৭৫০ টাকা হারে প্রশিক্ষণ ভাতা পাবেন। এই পেশার দায়দায়িত্বের একজন পুলিশ কনস্টেবলকে মাঠপর্যায়ে অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হয়। অন্যান্য পেশার চেয়ে এই পেশার দায়দায়িত্ব ও ঝুঁকি একটু বেশি। একজন পুলিশ কনস্টেবলকে চুরি-ডাকাতি রোধ, ছিনতাই প্রতিরোধ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধসহ বিভিন্ন জনসভা, নির্বাচনী দায়িত্বে অংশগ্রহণ করতে হয়। এ ছাড়া পুলিশ বাহিনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন, ইমিগ্রেশন এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতেও কাজ করে থাকে।

বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা
চূড়ান্তভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত একজন কনস্টেবল জাতীয় বেতন ২০১৫ অনুযায়ী ৯ হাজার টাকা স্কেলে বেতন পাবেন। এ ছাড়া শিক্ষানবিশকাল সফলভাবে শেষ করার পর চাকরি স্থায়ী হলে বিনা মূল্যে পোশাকসামগ্রী, ঝুঁকি ভাতা, চিকিৎসা-সুবিধা, রেশনসামগ্রীসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন। অন্যান্য চাকরির মতো এখানেও পদোন্নতির ব্যবস্থা আছে। একজন পুলিশ কনস্টেবল বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে পুলিশের উচ্চপদস্থ পদে পদোন্নতি পেতে পারেন। এ ছাড়া জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে যাওয়ারও সুযোগ পাওয়া যাবে।