ডিমের দুর্নাম কতটা সত্য

ডিম খাওয়া বেশি ভালো নয়, ডিমের কুসুম খাওয়া যাবে না বা ডিমে কোলেস্টেরল আছে—এসব মিথ সাম্প্রতিক সময়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে। ডিম সম্পর্কে অনেক ভুল-বোঝাবুঝির অবসান হতে শুরু করেছে বিগত দশকে। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন বলেছে, যদি সম্পৃক্ত চর্বি খাওয়া কমিয়ে দিতে পারেন, তবে সপ্তাহে ছয়টি ডিম খাওয়া খারাপ কিছু নয়।
একটা ডিমে চর্বি বা ফ্যাটের পরিমাণ ৫ গ্রামের মতো। কিন্তু তাতে সম্পৃক্ত চর্বি কম, মোটে দেড় গ্রাম। বর্তমানে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলছেন, চর্বি একেবারে খাওয়া ভালো নয়, কথাটা সঠিক নয়। যা ভালো নয়, তা হলো সম্পৃক্ত চর্বি এবং ট্রান্সফ্যাট। গরু-খাসির মাংসের জমাট চর্বি, ঘি, মাখন, ক্রিম, পেস্ট্রি ও ডিপ ফ্রাই খাবারে আছে এ ধরনের ক্ষতিকর চর্বি। বাদ দিতে হলে এগুলো বাদ দিন। আর স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মানে কেবল অস্বাস্থ্যকর খাবার বাদ দেওয়া নয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বরং স্বাস্থ্যকর খাবার তালিকায় ঢোকানো। ডিম হতে পারে এই তালিকার নতুন সদস্য। কেননা ডিমে আছে উপকারী ওমেগা ৩ চর্বি, যা উল্টো রক্তনালি ও হৃদ্যন্ত্রের জন্য ভালো। তাই পুষ্টি উপাদানহীন খাবার বাদ দিয়ে বরং ডিম খাওয়া ভালো।
এ ছাড়া ডিমে প্রায় ১১ ধরনের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান আছে, যা শরীরের জন্য দরকারি। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো ভিটামিন ডি, যা বেশির ভাগ খাবারে অনুপস্থিত। ডিমে বায়োটিন নামের পদার্থও আছে, যা আজকাল অনেকে চুল পড়া কমাতে ক্যাপসুল হিসেবে কিনে খান।
ডিম আমিষেরও চমৎকার উৎস। ডিমের আমিষ সহজে হজম ও শোষিত হয় অন্যান্য আমিষের তুলনায়। এটি প্রাণিজ আমিষ, তাই উচ্চমানের। বিশেষ করে শিশু-কিশোর ও গর্ভবতী নারীদের আমিষের চাহিদা পূরণে ডিম নিয়মিত খাওয়া উচিত।

হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ, জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল