খাবার টেবিলের সাজ

পরিপাটি খাবার টেবিল খাবারের আনন্দ বাড়িয়ে দেয়। ছবি: নকশা
পরিপাটি খাবার টেবিল খাবারের আনন্দ বাড়িয়ে দেয়। ছবি: নকশা

পরিবেশন আর পরিবেশ। খাবার সময়ের একটি অনিবার্য বিষয়। খাবার ঘরের একটি বিরাট জায়গাজুড়ে থাকে খাবার টেবিল। পরিপাটি করে সাজানো খাবার টেবিলে খেতে ভালো লাগে সবারই। তাই খাবার ঘর যেমন সুন্দর হতে হবে, তেমনি খাবার টেবিলও সুন্দর করে সাজাতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, খাবার ঘরের আকার-আকৃতি কেমন এবং সেখানকার আসবাব কেমন, সেদিকে খেয়াল রেখে খাবার ঘরের জন্য টেবিল বেছে নেওয়া উচিত। টেবিলের ধরন অনুযায়ী রানার, ম্যাট, চামচহোল্ডার, ন্যাপকিন বা টিস্যুহোল্ডার, লবণদানি, ফুলদানি রাখা যেতে পারে।

যেমন ঘরে যেমন টেবিল

ছোট বা মাঝারি আকারের খাবার ঘরে গোল বা ডিম্বাকৃতির টেবিল মানানসই। এতে জায়গা একটু বাঁচে। বর্গাকার ঘরে গোলটেবিল আর আয়তাকার ঘরে ডিম্বাকৃতি টেবিল রাখলে ভালো দেখাবে। আবার ঘর বড় হলে বর্গাকার ঘরে বর্গাকার টেবিল এবং আয়তাকার ঘরে আয়তাকার টেবিল মানিয়ে যায়।

টেবিলের ওপরের অংশ কাচ, কাঠ নাকি মার্বেল পাথরের হবে তা নির্ভর করবে অন্য আসবাবের ওপর। ডিনার ওয়াগনের (থালা-বাটি রাখার তাক) ওপরটা যদি মার্বেলের হয়, সে ক্ষেত্রে খাবার টেবিলের ওপরের অংশটা মার্বেল পাথরের হলে ভালো। গুলসান নাসরীন চৌধুরী বলেন, ‘ডিনার ওয়াগন, শেলফ, চেয়ার, এমনকি দেয়ালে লাগিয়ে রাখা ছবিটার ফ্রেমের সঙ্গেও খাবার টেবিলের মিল রাখলে ঘরটা সুন্দর দেখাবে।’

ওপরটা যখন কাঠের

টেবিলের ওপরের অংশটা কাঠের তৈরি হলে চাঁপা সাদা কিংবা সাদা রঙের রানার বা ম্যাট রাখুন। রানারের ওপর চামচহোল্ডার, ন্যাপকিন বা টিস্যুহোল্ডার, লবণদানি বা ফুলদানি রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে রানারের ওপর রাখা এসব সামগ্রী কাঠের তৈরি হলে ভালো দেখাবে। এ ছাড়া এ জিনিসগুলো কাঠের রঙের কাছাকাছি রঙের হলেও মানিয়ে যায়। কাঠের মতো দেখতে তন্তু দিয়ে তৈরি ফুলদানিও রাখতে পারেন। সাধারণত সেগুন কাঠেই তৈরি হয় এসব টেবিল। এতে ম্যাট ছাড়া গ্লাস রাখা বা পানি ফেলা ঠিক না। যত্ন করে ব্যবহার না করলে এর রং নষ্ট হয়ে যায়।

কাচ দেওয়া টেবিলে

কাঠ, কালো রট আয়রন কিংবা ইস্পাতের তৈরি টেবিলে কাচ লাগানো হয়ে থাকে। এ ধরনের টেবিলে যেকোনো রঙের ম্যাট বা রানার মানানসই। তবে তা খাবার ঘরের জানালার পর্দার সঙ্গে মিল রেখে বেছে নেওয়াই ভালো। একই ধরনের রঙের কভার ব্যবহার করতে পারেন চেয়ারে। কাচের টেবিলের রানারের ওপর রাখার জন্য চামচহোল্ডারসহ অন্যান্য সামগ্রী ক্রিস্টালের হলে ভালো দেখাবে।

ঘরের অাকার বুঝে খাবার টেবিল
ঘরের অাকার বুঝে খাবার টেবিল



মার্বেল পাথরে

এ ধরনের টেবিলের ওপরটা সাধারণত ধূসর (অ্যাশ), সাদা, দুধসাদা বা কালো রঙের হয়ে থাকে। এতে কুর্শিকাঁটা বা লেসের ম্যাট বিছিয়ে দিতে পারেন। তবে মার্বেল পাথরের ওপর সব সময় রানার বিছিয়ে রাখবেন না। কারণ, মার্বেল পাথরটাই দেখার মতো একটি জিনিস। এমনটাই জানালেন গুলসান নাসরীন চৌধুরী। এমন টেবিলে মার্বেল পাথরের তৈরি ন্যাপকিন বা টিস্যুহোল্ডার, ফুলদানি রাখলে সুন্দর দেখায়।

বাঁশ-বেতের টেবিল

বাঁশ কিংবা বেতের তৈরি টেবিলের ওপরটায় সাধারণত কাচ বসিয়ে নেওয়া হয়। কাচ না দেওয়া থাকলে টেবিলে কখনো খাবার পড়ে গেলে তা বাঁশ বা বেতের ফাঁকা অংশে আটকে থাকতে পারে। টেবিলের আকার এবং এর ওপরের কাচের আকার একই হতে হবে। এ ধরনের টেবিলে গ্রামীণ চেক, মণিপুরী তাঁত, শতরঞ্জি অথবা গামছার কাপড়ে তৈরি রানার বা ম্যাট ব্যবহার করুন। রানারের ওপর বাঁশ বা বেতের তৈরি সামগ্রী রাখুন।

কৃতজ্ঞতা: গুলসান নাসরীন চৌধুরী