দুশ্চিন্তা-চাপ ওজন বাড়ায়!

চাপে থাকলে ক্ষুধা বাড়ে?
চাপে থাকলে ক্ষুধা বাড়ে?

ওজন কেন বাড়ে? এই প্রশ্নের জবাব একদম সহজ। শরীরে ক্যালরি বেশি করে জমলেই ওজন বাড়ে। প্রশ্নটা এসেই যায়, তাহলে আমরা বেশি ক্যালরি কেন গ্রহণ করি? অর্থাৎ, আমরা কেন বেশি খাই? জানা যাক উত্তরটা।

মাঝেমধ্যে দেখা যায়, এক টুকরো চকলেট বা কেকের টুকরোতে একটু কামড় দিতে ইচ্ছা করছে খুব, অথচ খাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই অনুশোচনায় ভুগি—কেন খেলাম। এটা কি শুধুই লোভ? নাকি অন্য কিছু?

এসব ক্ষেত্রে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা গুরুত্বপূর্ণ। তবে সব সময় দায়টা মানুষের না–ও হতে পারে। কারণ মানসিক চাপ মানুষের শরীরের ওজন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বড় একটা ভূমিকা রাখে। দীর্ঘস্থায়ী চাপ আমাদের ঘুম ও আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক থাকতে দেয় না, যা আমাদের ক্ষুধা বাড়ায়। দেখা যায়, খেলেই খুব আরাম লাগছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি কেবল শরীরের মেদই নয়, বরং টাইপ-২ ডায়াবেটিসেরও কারণও হয়ে দাঁড়ায়।

বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের লিডস ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে চিকিৎসক গাইলস ইয়েও এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন। গবেষণার কার্যক্রম হিসেবে লিডসের গবেষকেরা গাইলসকে ‘স্ট্রেস ফুল’ কিছু করতে বললেন।

একটি কম্পিউটারের সামনে গাইলসকে বসানো হয়। তাঁকে ক্রমাগত ২০৪৩ থেকে ১৭ বিয়োগ করতে বলা হয়। বারবার করতে করতে একসময় তাঁর ভুল হচ্ছিল, যা তাঁকে চাপে ফেলছিল। তারপর তাঁর হাত বরফশীতল পানিতে ডুবিয়ে রাখা হয়। এই পরীক্ষার আগে ও পরে গাইলসের রক্তে চিনির মাত্রা পরীক্ষা করেন গবেষকেরা। এ রকম কয়েক দিন পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় দেখা যায়, গাইলস যখন অসম্ভব চাপে থাকেন, তখন তাঁর রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে তিন ঘণ্টার মতো সময় নেয়, যা চাপমুক্ত থাকা অবস্থার তুলনায় ছয় গুণ বেশি। এটার কারণ যখন মানুষ চাপে থাকে, তখন শরীর ‘ফাইট’ মুডে থাকে। অর্থাৎ, শরীর চাপ মোকাবিলায় ফাইট করতে থাকে। সে বেশি গ্লুকোজ নিঃসরণ করে পেশিতে শক্তি বা ‘এনার্জি’ তৈরি করে। আবার চাপ নেওয়ার প্রয়োজন না হলে অগ্ন্যাশয় রক্তে শর্করার মাত্রা আবারও নিচে নেওয়ার জন্য ইনসুলিনকে পাম্প করে। আর রক্তে চিনির মাত্রা কমে আসা এবং ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে ক্ষুধা লাগে।

এ জন্যই চাপে থাকলে বারবার ফ্রিজ খুলে খাবার খুঁজতে থাকেন আপনি। এ রকম ঘটে যখন রাতে ভালো খুব হয় না। তখনো শরীর খাবারের প্রয়োজন অনুভব করে।