প্রেক্ষাগৃহে মানুন কিছু নিয়ম

সিনেমা হলে আমাদের অনেকের বেখেয়ালি আচরণে অন্যরা বিব্রত বোধ করে। বিনোদনের জায়গা হলেও ব্যক্তিগত আচরণে পরিশীলিত হওয়া উচিত। সিনেমা হল বা প্রেক্ষাগৃহে আমরা অনেকেই বাড়ির বসার ঘরে বসে সিনেমা দেখার মতো আচরণ করি, যা আসলে ঠিক না। আজ জেনে নিন সিনেমা হলে কী করবেন, কী করবেন না।

দেরি করে প্রবেশ নয়
প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা শুরুর মিনিট ১৫ আগে হাজির প্রবেশ করুন। এক কিংবা দুই মিনিট হলেও কখনোই দেরি করা উচিত না। দেরি করে প্রবেশ করলে অনেক দর্শকের সামনে দিয়ে হাঁটতে হবে আপনাকে, যা অন্যদের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটাবে। আপনার সামনে কেউ দেরি করে প্রবেশ করলে ইতস্ততবোধ করবেন যেভাবে সেভাবেই বিষয়টি ভাবুন।

সারিবদ্ধভাবে প্রবেশ করুন
প্রেক্ষাগৃহে প্রবেশের ক্ষেত্রে সারিবদ্ধভাবে ঢুকুন। হুড়োহুড়ি করে ঢুকে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে অন্যের বিনোদনকে নীরস করবেন না। পপকর্ন বা অন্য কিছু কেনার সময়ও লাইনে দাঁড়িয়ে কিনুন। সিনেমা শেষে প্রেক্ষাগৃহ থেকে সারিবদ্ধভাবে বের হোন।

সতর্কভাবে হেঁটে চলুন
প্রেক্ষাগৃহে বেখেয়ালি হাঁটবেন না। আপনার হাতের পপকর্ন কিংবা ঠান্ডা পানীয় অসচেতনতার কারণে অন্যের ওপর পড়তে পারে। যেহেতু প্রেক্ষাগৃহে অল্প আলো থাকে, তাই হেঁটে চলার সময় সতর্ক থাকুন।

মুঠোফোন বন্ধ রাখুন
বিনোদনের জন্য যেহেতু সিনেমা, সেহেতু মুঠোফোন বন্ধই রাখুন। প্রয়োজনে কথা বলতে চাইলে বিরতিতে টয়লেট বা ফ্রেশ রুমে গিয়ে নিচ স্বরে কথা বলুন। সিনেমা হলে মুঠোফোন ব্যবহার করলে ডিসপ্লের আলো অন্যদের অস্বস্তির কারণ হতে পারে। আপনার মুঠোফোনের আলো আপনার পেছনে বসা দর্শকদের চোখের জন্য সব সময়ই অস্বস্তিকর হবে। সতর্ক থাকুন।

কথাবার্তায় সতর্ক থাকুন
পাশের জনের সঙ্গে কথা বলার সময় সতর্ক থাকুন। অপ্রয়োজনে সব ধরনের কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। ফিসফিস করে কথা বললে অন্যরা অস্বস্তি বোধ করতে পারে।

পা দিয়ে সামনের আসনে ধাক্কা দেবেন না
অনেকেরই একটি বদভ্যাস দেখা যায় প্রেক্ষাগৃহে। নিজের আসনে বসে আমরা সামনের আসনের পেছন দিকে অনেকটা অসচেতনভাবে পা দিয়ে ধাক্কা দিই। সামনে যিনি বসেছেন তিনি হয়তো ভদ্রতার খাতিরে আপনাকে কিছু বলবেন না, তারপরও নিজের জন্য সচেতন হোন।

অসুস্থতা নিয়ে প্রেক্ষাগৃহে যাবেন না
হাঁচি-কাশি কিংবা ছোঁয়াচে রোগ নিয়ে সিনেমা হলমুখী কখনো হবেন না। ভাবুন তো, সিনেমা দেখছেন আর কেউ পাশ থেকে অনবরত কেশে যাচ্ছেন, বিষয়টি পীড়াদায়ক বলেই সতর্ক থাকুন।

শিশুদের নিয়ে সতর্ক থাকুন
প্রেক্ষাগৃহে শিশুদের পারতপক্ষে না নেওয়াই ভালো, বিশেষ করে নবজাতক কিংবা দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের। শিশু হুট করে কেঁদে উঠলে কেউ আপনাকে কিছু বলবে না, কিন্তু সিনেমা হলের পরিবেশ নষ্ট হবেই।

শব্দ করে খাবেন না
আমরা পপকর্ন কিংবা ঠান্ডা পানীয় এমনভাবে খাই অনেক সময় যা পাশের মানুষটিকে বিব্রত করে। শব্দ করে কখনোই খাবেন না।

হাতল ভাগাভাগি করুন
প্রেক্ষাগৃহে আসনগুলোর অবস্থান এমনভাবে থাকে যে পাশাপাশি বসা দুজন মানুষকে একটি হাতল ভাগাভাগি করতে হয়। সিনেমা দেখার আগেই পাশের মানুষটি যদি অপরিচিত হয় তাহলে তার সঙ্গে হাতল ভাগাভাগির বিষয়টি জানিয়ে রাখুন। একা পুরো তিন ঘণ্টার সিনেমা হাতলে হাত দিয়ে দেখবেন না, পাশে বসা দর্শকের দিকে একটু খেয়াল রাখুন।

বসুন সচেতনভাবে
প্রেক্ষাগৃহে নিজে সচেতনভাবে বসুন, পরিবারের সদস্যদেরও সচেতনভাবে বসতে অনুরোধ করুন। এমনভাবে বসুন যেন সামনে দিয়ে কেউ হেঁটে যেতে পারে। আবার আপনি হেঁটে যেতে চাইলে ‘এক্সকিউজ মি’ বা ‘একটু সাইড দিন, প্লিজ’ বলে ধীরে হেঁটে যান। এমনভাবে বসবেন না যেন অন্যদের সিনেমা দেখায় বিঘ্ন ঘটে। আপনার ইতিবাচক আচরণ পরিবারের ছোটরা অনুকরণ ও অনুসরণ করবে বলে আপনি সচেতন থাকুন।

দলগত হইহুল্লোড় নয়
বন্ধুবান্ধব আর পরিবার নিয়ে যেহেতু প্রেক্ষাগৃহে যাই আমরা সেহেতু হইহুল্লোড় করাই স্বাভাবিক। তবে সিনেমা চলাকালে সব ধরনের হইহুল্লোড় কিংবা সিটি বাজানো থেকে বিরত থাকুন। সিটি বাজানো কিংবা উচ্চহাসি এড়িয়ে চলুন। নাম ধরে ডাকাডাকি কিংবা চিৎকার করবেন না।

ময়লা ফেলুন নির্দিষ্ট স্থানে
আপনার পপকর্নের প্যাকেট কিংবা কোমলপানীয় গ্লাসটি সতর্কতার সঙ্গে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলুন। চেয়ারের নিচে কিংবা যেখানে-সেখানে ফেলবেন না।

সূত্র: মডার্ন এটিকেট ফর বেটার লাইফ