বসন্তের এই মাতাল সমীরণে

পয়লা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস উদ্‌যাপনে পোশাকে এসেছে হলুদ, বাসন্তী, লালের মতো রং।  মডেল: আজাদ ও শ্রাবণ্য, পোশাক: অঞ্জন’স ও বিবিয়ানা, সাজ: রেড বিউটি স্যালন, ছবি: সুমন ইউসুফ
পয়লা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস উদ্‌যাপনে পোশাকে এসেছে হলুদ, বাসন্তী, লালের মতো রং।  মডেল: আজাদ ও শ্রাবণ্য, পোশাক: অঞ্জন’স ও বিবিয়ানা, সাজ: রেড বিউটি স্যালন, ছবি: সুমন ইউসুফ

আসছে বসন্তকাল। পয়লা ফাল্গুনের পরদিনই ভালোবাসা দিবস। উৎসবের এই দেশে বসন্ত আর ভালোবাসা উদ্যাপনের জন্য তৈরি হচ্ছে নানা পোশাক। বাগানের ফুল ও প্রকৃতি উঠে আসছে পোশাকের নকশায়। হলুদ, বাসন্তী, লাল রঙা পোশাকে মেতে উঠছে তারুণ্য।
ফাগুনের প্রথম দিনে বসন্ত উৎসবে মেতে উঠতে তাঁতের শাড়ি, সুতার কাজ করা সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি তৈরি হয়েছে ফ্যাশন হাউসগুলোতে। মেয়ে ও ছেলেদের চলতি ধারার ফতুয়াও থাকছে ভালোবাসা দিবসের পোশাক হিসেবে। ফ্যাশন ডিজাইনার লিপি খন্দকার বলেন, ‘সাধারণত ফাগুনকে ঘিরেই সব পোশাকের নকশা করা হচ্ছে এই সময়ে। তবে ভালোবাসা দিবসেও এগুলো পরা যায় অনায়াসে। নকশার পরিবর্তন তো হরহামেশাই হচ্ছে। এবার প্রিন্টের ওপরেই অধিকাংশ পোশাক তৈরি হচ্ছে।’
বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস ঘুরে দেখা গেছে, একটি পোশাকেই দুই উৎসবের সম্মিলন ঘটিয়েছেন ডিজাইনাররা। ভালোবাসা ও ফাগুন—একসঙ্গে দুটোকেই পাওয়া যাবে। ভালোবাসা দিবসের পোশাক নিয়ে ডিজাইনাররা বলেন, যুগলবন্দী পোশাকের ডিজাইন করেছেন অনেকে। আবার আছে পরিবারের সবার উপযোগী পোশাকও। সালোয়ার-কামিজ আর কুর্তার কাটে এবার থাকছে লম্বা ঢং। চলবে গাউন স্টাইলের কামিজও।
এসব পোশাকের কাপড় হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে বেশির ভাগ সুতি। কাজের মাধ্যম হিসেবে এসেছে টাই-ডাই, ব্লকপ্রিন্ট, অ্যাপ্লিক, কাটওয়ার্ক, স্ক্রিনপ্রিন্ট, হ্যান্ডপেইন্ট, বাটিকসহ কারচুপি, হ্যান্ড ও মেশিন এমব্রয়ডারির কাজ রয়েছে।
সাধারণত ভালোবাসার রং হিসেবে লালের প্রচলন বেশি, তবে ফাগুন সঙ্গে থাকায় সেখানেও নতুনত্ব আছে। কমলা, হলুদ, বাসন্তী, সবুজ, নীল, মেরুন, কচি কলাপাতার মতো রংও আছে। তবে অনেক পোশাকেই লাল রঙের একটা কম্বিনেশন দেখা গেছে।

রং মিলিয়ে পোশাক বেছে নিতে পারেন প্রিয়জনের সঙ্গে
রং মিলিয়ে পোশাক বেছে নিতে পারেন প্রিয়জনের সঙ্গে

অঞ্জন’স-এর শীর্ষ নির্বাহী শাহীন আহম্মেদ বলেন, ‘বিশেষ দিন কিংবা উৎসবে মূলত প্রিয়জনের সঙ্গে মিলিয়ে অনেকেই একই রকম পোশাক পরতে চায়। অনেকে আবার সেসব পোশাক এই সময়ের অন্য অনুষ্ঠানেও পরতে পারবে। তাই হালকা নকশার পাশাপাশি কিছুটা কারুকাজের পোশাকও তৈরি করা হয়েছে। এসব পোশাকে এমব্রয়ডারি, ব্লক, স্ক্রিনপ্রিন্ট, অ্যাপ্লিকসহ মিশেল কাজও থাকে।’
সব ধরনের পোশাকের সংগ্রহ আছে দোকানগুলোতে। দরদামেও আছে ভিন্নতা। রঙ বাংলাদেশের স্বত্বাধিকারী সৌমিক দাস বলেন, ‘যেকোনো বিশেষ দিন বা উৎসবে রঙিন পোশাক পরতে চান অনেকে। শাড়ি বা কামিজ, পাঞ্জাবি বা ফতুয়া ইচ্ছেমতো বেছে নিতে পারবেন ক্রেতারা। ফাগুনের শাড়িতে বাসন্তী ও হলুদ রঙের আধিপত্য। নতুন পাতার রং হিসেবে সবুজও এসেছে শাড়ির রঙে।’

যেখানে পাওয়া যাবে
রঙ বাংলাদেশ, বিশ্বরঙ, বিবিয়ানা, আড়ং, অঞ্জন’স, কে ক্রাফট, বাংলার মেলা, প্রবর্তনা, নগরদোলা, নিপুণ, নিত্য উপহার, অন্যমেলা, লা রিভ, এড্রয়েট, ফড়িং, ইন্ডিগো, এমপ্রেসসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে। এ ছাড়া নিউমার্কেট, রাপা প্লাজা, লালমাটিয়া, হকার্স মার্কেটসহ বিভিন্ন শপিং মলে মিলবে ফাগুনের পোশাক।

দরদাম
শাড়ি ১ থেকে ৪ হাজার টাকার মধ্যে পাবেন। পাঞ্জাবির দাম শুরু ৮০০ টাকা থেকে। ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে পছন্দমতো সালোয়ার-কামিজ বেছে নিতে পারবেন। ‘কাপল’ পোশাক নিতে চাইলে সেটাও পাবেন। এর দাম নির্ভর করবে পোশাকের কাজের ওপর। তবে সাধারণত ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার মধ্যে কাপল পোশাক কেনা যাবে। কুর্তা বা সিঙ্গেল কামিজ পাবেন ৬০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়।