ছোট তবে শান্তির নীড়

ছোট বাসায় জিনিসপত্র রাখার এরকম তাক ঘরের সৌন্দর্য্যও বাড়াবে। ছবি: নকশা
ছোট বাসায় জিনিসপত্র রাখার এরকম তাক ঘরের সৌন্দর্য্যও বাড়াবে। ছবি: নকশা

সাধ ও সাধ্য। এই দুয়ের মিশেলে বাসা খুঁজে পাওয়া অনেকটাই কঠিন। কম বেশি ৬০০ থেকে ৯০০ বর্গফুট ফ্ল্যাট বাড়ি এখন বেশ দেখা যায়। নীড় ছোট হলেও ক্ষতি নেই, যদি তা হয় সাজানো–গোছানো। নতুন দম্পতি কিংবা ছানাসহ টোনাটুনির ছোট পরিবারগুলোর কাছে এমন বাসাই প্রথম পছন্দ। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায় প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় আসবাব, নিত্যব্যবহার্য তৈজসের ভিড়ে ছোট বাসাগুলো ছিমছাম হয়ে ওঠে না।

অন্দরসজ্জা বাসার খোলামেলা ভাব বজায় রাখতে বড় ভূমিকা পালন করে। বাসার দেয়ালের রং নির্বাচন করা থেকে শুরু করে আসবাবের আকার–প্রকার, এগুলোর কৌশলগত অবস্থান ঠিক করা—সবকিছু বাসাকে পরিপাটি করে তোলে। বাঁধাধরা নিয়ম না থাকলেও কিছু কৌশল প্রয়োগে ছোট বাসাও হয়ে ওঠে শান্তির নীড়।

মেঝে থেকে ছাদ অব্দি
হরেক রকম জিনিস তুলে রাখার জন্য ব্যবহৃত শেলফ গতানুগতিকভাবে ৪ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। দেয়ালের ওপরের অংশ কার্যত থাকে অব্যবহৃত। দেয়ালের গায়ে টানা লম্বা তাক বা শেলফ ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা জিনিসগুলোকে যেমন গুছিয়ে দেয়, তেমন অহেতুক আসবাবের ভারিক্কিও কমায়। দেয়ালের ওপরের অংশে ঝুলন্ত বা ওয়াল মাউন্টেড আসবাব বেশ কার্যকর, আর দেখতেও সুন্দর দেখায়।

বাধাহীন অবিরাম
না হলেই নয় এমন দেয়াল ছাড়া দেয়ালের ব্যবহার যতটা সম্ভব কমিয়ে তার বদলে খোলা শেলফ বা প্রয়োজনমতো ভাঁজ হয়ে যাওয়া জালি-কাজের বিভাজক (পার্টিশন) বেশ কাজে দেয়। যেমন খাবার ঘর থেকে বসার জায়গা বা লিভিং স্পেসকে সম্পূর্ণ আলাদা না করেও আলাদা জায়গার আবহ দেওয়া সম্ভব।

এর নিচে ওর নিচে
জিনিসপত্র রাখার জায়গা (স্টোরেজ স্পেস) সঠিক এবং সৃজনশীল ব্যবহার ছোট্ট বাসাগুলো সার্থকতার চাবিকাঠি। জানালার পাশে যেখানে টানা লম্বা শেলফ করা যাচ্ছে না, সেখানে নিচু শেলফ হয়ে উঠতে পারে সমাধান। এটি বসার নিরিবিলি আয়োজন হিসেবেও কাজে দেয়। ছোট টুল হয়ে যেতে পারে বাচ্চার খেলনার বাক্স। একইভাবে খাট, সোফা, এমনকি টেবিলের নিচটাও হয়ে উঠতে পারে এটা–ওটা গুছিয়ে রাখার সহজ সমাধান।

দেখাক আরেকটু বড়

যা আছে তাকে আরেকটু বড় করে দেখানোর কৌশলটা হলো ভিজ্যুয়াল ইল্যুশন। কামরার উচ্চতা বেশি দেখানোর কার্যকরী এমনই এক উপায় হচ্ছে পর্দা টানানোর রড যতটা সম্ভব উঁচুতে লাগানো। এ ক্ষেত্রে মোটামুটিভাবে ছাদ থেকে দুই বা তিন ইঞ্চি নিচে পর্দার রড লাগালে কাজ হয়ে যায়। জানালার দুপাশে দুই থেকে চার ইঞ্চি বাড়তি রাখলে জানালা বড় দেখায় এবং পর্দা সরিয়ে রাখতে পারার জন্য ঘরে আরও বেশি দিনের আলো আসার পথ সুগম হয়।

আয়নার ব্যবহার নিমেষেই জায়গাটুকুকে দ্বিগুণ করে দেখায়। বড় টানা আয়না বা ফ্রেমে বাঁধানো টুকরো আয়না ঘর সাজানোর উপকরণ তো বটেই, সরু করিডোরকেও করে প্রশস্ত।

জাঁকিয়ে বসা গাঢ় রঙের পরিবর্তে হালকা চাপা সাদা, হলদে, মেটে বা ছাই রং আলো প্রতিফলন করে ঘরকে করে বড়।

এসব কৌশল মেনে আর আপনার নিজস্বতার যোগে ছোট্ট নীড়টাই হয়ে উঠবে অনন্য।