আলতারাঙা পায়ে

উৎসবে এখন অনেকেই পায়ে আলতা পরেন। মডেল: সায়মা, ছবি: সুমন ইউসুফ
উৎসবে এখন অনেকেই পায়ে আলতা পরেন। মডেল: সায়মা, ছবি: সুমন ইউসুফ

বৈশাখ এলেই সাজের বেশ কিছু অনুষঙ্গের ব্যবহার হয়ে ওঠে অপরিহার্য। এই যেমন আলতা, হাতভর্তি রেশমি চুড়ি, কপালে টিপ আর আলতারাঙা পায়ে বাঙালিয়ানার সাজে চলে দিনভর ছুটে চলা। সাজের এই অনুষঙ্গগুলো বাঙালির সংস্কৃতির একেবারেই নিজস্ব জিনিস। বৈশাখজুড়েই নববর্ষের নানা আয়োজন থাকে। তাই বাঙালির উৎসবে এসব অনুষঙ্গ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

দেশালের ডিজাইনার ইসরাত জাহান বললেন, যখন এত প্রসাধনীর প্রচলন ছিল না, তখন আলতা দিয়ে শুধু পা সাজানোই নয়, চলত ঠোঁট রাঙানোর কাজও। বিভিন্ন উৎসবে নিজেকে রঙিন করে তুলতে মেয়েরা তখন হাতও রাঙাত আলতা দিয়ে। এখন শুধু বিশেষ কিছু দিনেই মেয়েদের আলতা পরে সাজতে দেখা যায়।

বৈশাখের পাশাপাশি বিয়ের অনুষ্ঠানেও মেয়েদের আলতা দিয়ে সাজতে দেখা যায়। বিশেষ করে হলুদের কনে সাজে আলতা পরার প্রচলন এখনো বেশ জনপ্রিয়। গায়েহলুদের অনুষ্ঠানের পুরোটাই থাকে বাঙালি সংস্কৃতির ছোঁয়া। হলুদের কনে থেকে শুরু করে সবার সাজ পোশাকটাও সেই রকম হয়ে থাকে। হলুদের অনুষ্ঠানে হাত ও পা সাজাতে অনেকেই তাই আলতার ব্যবহার করে থাকেন, বলছিলেন রেড বিউটি স্যালনের রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভিন। তাহলে কি শুধু বাঙালিয়ানার সাজেই আলতা মানায়? এই বিষয়ে অবশ্য একমত নন ইসরাত জাহান। টপ, ঢোলা সালোয়ার সঙ্গে পায়ে আলতা আর নূপুর পরলেই একটু অন্য রকম দেখাবে। তেমনি লোকজ মোটিফের নকশা করা সালোয়ার-কামিজের সঙ্গেও আলতাটা ভালো যাবে। আলতা পরার সময় পোশাকের চেয়ে বেশি জুতার প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। যেমন আলতা দেওয়া পায়ে কখনোই পুরো পা ঢাকা বা ব্যালেরিনা শুয়ের মতো জুতা ভালো দেখাবে না। এর চেয়ে ভালো লাগবে কোলাপুরি চপ্পল। এখন বাজারে ভিন্ন ভিন্ন নকশার দুই স্ট্রাইপ বা ফিতার জুতা পাওয়া যায়। এসব জুতাও ভালো মানাবে আলতা দেওয়া পায়ে।

আলতা টানার নকশাও বিশেষ কিছু কায়দা আছে, যা মেনে আলতা পরলে সুন্দর দেখাবে পা। যাদের পায়ের গড়ন ছোট তাদের পায়ে আলতা দিয়ে চিকন রেখা টানলে ভালো দেখাবে। একটু বড় গড়নের পায়ে আলতার রেখাটা মোটা টানতে হবে। সাধারণত পানি লাগলেই ধুয়ে যায় আলতার রং। এ জন্য পায়ে আলতা দেওয়ার পরপরই পানির ব্যবহার এড়িয়ে যেতে হবে।