করলার তেতো চায়ে বাঁধুন তারুণ্য

করলা
করলা

তেতো করলার যে কত গুণ, সে তো সবাই জানে। তাই ভাজি, ভর্তা আর ব্যঞ্জনে তার বেজায় কদর। কিন্তু করলা যে গুণী তরলা হতে পারে, এর খোঁজ কজনে রাখে? তা হলো করলার তেতো চা। তার মধ্যে আছে তারুণ্যের তাজা আরক। পুষ্টিবিদেরা তা-ই বলছেন।

চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা হাসিনা আকতারের তথ্য অনুযায়ী, নিয়মিত করলা খেলে রোগবালাই থাকে ১০০ হাত দূরে। প্রতি ১০০ গ্রাম করলায় আছে ২৮ কিলোক্যালরি, ৯২ দশমিক ২ গ্রাম জলীয় অংশ, ৪ দশমিক ৩ গ্রাম শর্করা, ২ দশমিক ৫ গ্রাম আমিষ, ১৪ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১ দশমিক ৮ মিলিগ্রাম লৌহ ও ৬৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।

করলার চায়ের অনেক গুণ। সম্প্রতি এনডিটিভি অনলাইনে করলার চায়ের গুণ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে জানানো হয়, তেতো করলার চা তৈরিতে করলার পাতা, বীজ বা ফল ব্যবহার করা যেতে পারে। করলার চা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এ ছাড়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ চা ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে।

চা তৈরির পদ্ধতি: শুকনো বা তাজা করলার টুকরো, পানি ও মিষ্টির জন্য স্বাদমতো মধু নিন। পানি ফুটিয়ে তাতে শুকনো করলার টুকরো দিয়ে ১০ মিনিট মাঝারি আঁচে ফোটাতে হবে। আঁচ থেকে নামিয়ে আরও কিছুক্ষণ ঢেকে রাখতে হবে। এরপর কাপে চা ছেঁকে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। তবে রক্তে চিনির নিয়ন্ত্রণে এই চা খেলে মিষ্টি যত কম ব্যবহার করবেন, ততই বেশি উপকার পাবেন। চিনি না মিশিয়ে তেতো চা খেলে আরও উপকার।

সতর্কতা: হাইপোগ্লাইসেমিয়া রোগীর ক্ষেত্রে করলার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই করলার চা আপনার নিয়মিত ব্যবহার করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

জেনে নিন করলা চায়ের পুষ্টিগুণ

১. রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ: প্রাচীনকাল থেকেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে করলার ব্যবহৃত হয়ে আসছে। করলার চা-ও এতে উপযোগী। করলায় রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও রক্তের চিনি কমানোর উপাদান। ডায়াবেটিসের রোগীরা রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত করলা খেতে পারেন।

২. রক্তে কোলেস্টেরল কমাতে: এই চা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। করলা উচ্চ রক্তচাপ ও চর্বি কমায়। এর তেতো রস কৃমিনাশক। এটি দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। এ ছাড়া এটি ভাইরাসনাশকও। করলা হিমোগ্লোবিন তৈরি করে শরীরে রক্তের উপাদান বাড়ায়।

৩. লিভার পরিষ্কার রাখে: লিভারকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। ফলে বদহজম রোধ করে। করলার বড় গুণ হচ্ছে এটি হজমের জন্য উপকারী। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এর ভূমিকা আছে। পরিপাকতন্ত্রের জটিলতা দূর করতে নিয়মিত করলা খেতে পারেন।

৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে: এই চায়ে উপস্থিত ভিটামিন সি যেকোনো সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। করলার ভিটামিন সি ত্বক ও চুল ভালো রাখে এবং ম্যালেরিয়া জ্বরে স্বস্তি দেয়। মাথাব্যথারও উপশম করে করলা।

৫. দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে: করলা চায়ে উপস্থিত ভিটামিন এ চোখ ভালো রাখে। করলার সবচেয়ে বড় গুণ এটি বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখতে সাহায্য করে। তাই করলা খেয়ে ধরে রাখুন তারুণ্য।