ডায়াবেটিসের রোগীর হজ

>
  • ইনসুলিন কলম আকারে ও ছোট ছোট বোতলে একটি বাক্সে বহন করা যায়
  • শর্করা মাপার গ্লুকোমিটারটি সঙ্গে নিন
  • সঙ্গে একটি-দুটি খেজুর রাখবেন

প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ পবিত্র হজ পালন করতে যান। তাঁদের অনেকে ডায়াবেটিসের রোগী। তাঁরা বাড়িতে সাধারণত একটি সুশৃঙ্খল জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত থাকেন। হজের সময়ে এই জীবনাচরণে পরিবর্তন আসে। এরই মধ্যে নিয়মিত ওষুধ বা ইনসুলিন গ্রহণ করতে হয়।

এক. এ সময় ডায়াবেটিসের রোগীদের অনেকে অনুরোধ করেন ইনসুলিন পরিবর্তন করে মুখে খাবার ওষুধ নেওয়া যায় কি না। মনে রাখবেন, যাঁর ইনসুলিন নিতে হয় তাঁর জন্য এটাই সবচেয়ে নিরাপদ ও দরকারি। ইনসুলিন বহন করা আজকাল ঝামেলা নয়। ইনসুলিন কলম আকারে ও ছোট ছোট বোতলে একটি বাক্সে বহন করা যায়। অনেকে ভাবেন, গরমে ইনসুলিন কার্যকারিতা হারাবে, তাই ওষুধ নেওয়াই ভালো। এটি ভুল ধারণা। ইনসুলিন সরাসরি রোদ বা তাপে না রাখলে ভালো থাকে আর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকলে তো কথাই নেই। হজের সময় একটু বেশি করে ইনসুলিন সঙ্গে নেবেন।

দুই. হজ পালন করতে গিয়ে অনেক পরিশ্রম ও হাঁটাহাঁটি করতে হয়। এতে অনেকেরই শর্করা কমে যায়। তাই প্রয়োজনে ইনসুলিনের মাত্রা কমিয়ে নেবেন। আপনার শর্করা মাপার গ্লুকোমিটারটি সঙ্গে নিন। রক্তে শর্করা মেপে ২ বা ৪ ইউনিট কমানো বা বাড়ানো অব্যাহত রাখুন। যেকোনো সময় খারাপ লাগলে শর্করা মাপুন। সঙ্গে একটি-দুটি খেজুর রাখবেন, যাতে হাইপো হলেই সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে নিতে পারেন।

তিন. জটিল শর্করা, যেমন রুটি, ওটস দীর্ঘ সময় রক্তে শর্করার জোগান দেবে। প্রচুর পানি পান করবেন। পিপাসা মেটাতে জমজমের পানি পান করুন। কোমল পানীয়, শরবত, জুস ইত্যাদি খাওয়া চলবে না। তাজা ফলমূল খান। বেশি ভাজাপোড়া, ফাস্টফুড খাবেন না।

তিন. ডায়াবেটিসের রোগীদের পায়ের রক্ত চলাচল ও স্নায়ুজনিত সমস্যা থাকে। আরামদায়ক সঠিক মাপের জুতা বা কেডস পরবেন। খোলা স্যান্ডেল পরে হাঁটবেন না। ফোসকা পড়লে নিজে চিকিৎসা করবেন না। গরম মেঝে বা মাটিতে কখনো খালি পায়ে হাঁটবেন না।

চার. হজযাত্রার আগে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে আলাপ করে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ব্যবস্থাপত্র নিন। সরকারের চিকিৎসা ক্যাম্পের খোঁজ রাখুন।

ডা. মো. ফিরোজ আমিন, সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল