বসে পড়ো

সুন্দর টেবিল পড়াশোনার প্রতি মনোযোগী করে তুলবে। কৃতজ্ঞতা: কিডস প্যারাডাইস, ছবি: নকশা
সুন্দর টেবিল পড়াশোনার প্রতি মনোযোগী করে তুলবে। কৃতজ্ঞতা: কিডস প্যারাডাইস, ছবি: নকশা

শিশুদের পড়তে বসানো প্রত্যেক মায়ের জন্যই কঠিনতম এক কাজ। কারণ, শিশুরা খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকতেই বেশি পছন্দ করে। নানা উপায়ে সন্তানকে পড়ার টেবিলে বসানোর চেষ্টা করেন মা। নিয়ম করে প্রতিদিন তাকে পড়তে বসানোর কাজটা বেশ কঠিনই বটে। এ জন্য মা–বাবাকে কিছুটা কৌশল অবলম্বন করতে হয়। এই যেমন ছোটদের পড়াশোনার প্রতি মনোযোগী করতে বাজারে এখন পাওয়া যায় নানান ডিজাইনের শিশুদের উপযোগী পড়ার টেবিল। যেখানে শিশু বেশ মজা নিয়েই পড়তে বসবে।

সন্তান কী পছন্দ করে, সেটি আগে মা–বাবার বুঝতে হবে। সন্তানের পছন্দ অনুযায়ী পড়ার টেবিল সাজাতে হবে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের কার্টুন আঁকা অথবা এ, বি, সি, ডি লেখা টেবিল-চেয়ার পাওয়া যায়। ছোটদের জন্য যেগুলো বিশেষভাবে তৈরি। পান্থপথের মায়ের দোয়া ফার্নিচারের বিক্রয় ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা যেসব কার্টুন চরিত্র পছন্দ করে, তার আদলে আমরা ছোটদের উপযোগী পড়ার চেয়ার ও টেবিল তৈরি করি। এগুলোর চাহিদাই বেশি। এ ছাড়া বিভিন্ন বুদ্ধিদীপ্ত খেলার ছবির আদলেও পড়ার টেবিলে তৈরি করা হয়।’

আজকাল অনেক মা-বাবাই শিশুর পড়ার টেবিলের পাশে বইয়ের যেকোনো ছড়া বা গল্প অনুসারে রাঙিয়ে তোলেন। এ ছাড়া টেবিলের পাশে বই সাজিয়ে রাখার কেবিনেট টেবিলও বেশ চলছে। কেবিনটসহ টেবিলে বইগুলো সাজিয়ে রাখার পাশাপাশি শিশুর পছন্দসই খেলনাও রাখা যায়।

টেবিল-চেয়ার কেমন হবে

ছোট্ট ছেলেমেয়েরা প্রথম দিকে পড়াশোনায় মন দিতে চায় না। আবার একই সঙ্গে একটু ওপরের ক্লাসগুলোতে পড়াশোনার চাপও একটু বেশি। তাই বেশি সময় পড়ার টেবিলে বসিয়ে রাখার জন্য চেয়ার–টেবিল হওয়া চাই একটু বৈচিত্র্যপূর্ণ ও অারামদায়ক। ছোটদের ক্ষেত্রে যারা স্কুলে সবে ভর্তি হয়েছে, তাদের জন্য টেবিল সব সময় আকর্ষণীয় হওয়া উচিত। কাঠের টেবিল না হয়ে প্লাইউডের রঙিন টেবিল হলে সেখানে পড়াশোনা করে মজা পায় ছোটরা। চেয়ারটিও মানানসই হতে হবে টেবিলের সঙ্গে। খেয়াল রাখতে হবে, চেয়ারে বসলে পুরো পিঠ যেন সাপোর্ট পায়। চেয়ার একটু শক্ত হওয়াই ভালো। টেবিলের ক্ষেত্রে আরও একটা জিনিস বিশেষ করে খেয়াল রাখতে হবে। অবশ্যই সেখানে যেন বইপত্র রাখার পর্যাপ্ত জায়গা থাকে। ডোরেমন, অ্যাংরি বার্ড, মিকি মাউস, টম অ্যান্ড জেরি, বারবি ডলসহ বর্ণিল সব কার্টুন ছবির উপস্থিতি থাকতে পারে পড়ার টেবিলে। অনেকে টেবিলের ওপরের অংশে সূর্যমুখী ফুল কিংবা বিড়ালের মুখের কাঠামোও রয়েছে। গুনতে শেখার জন্য টেবিলগুলোতে সারি করা লাল, নীল, গোলাপি, সবুজ, হলুদ, বেগুনি গুটি দেওয়া আছে। বই-খাতা-ব্যাগ রাখার টেবিলে খোপ বা তাক রয়েছে। ফলে বাড়তি জিনিসপত্র রাখা যাবে।



কোথায় রাখবেন

পড়ার ঘরের জানালা পাশেই রাখা উচিত। জানালার সামনাসামনি টেবিল রাখলে ভালো হয়। কারণ, এতে সকালবেলা সরাসরি বাইরের আলো টেবিলের ওপর এসে পড়ে। এতে দমবন্ধ করা পরিবেশের তৈরি হয় না। কারণ, সারা দিন দেয়ালের দিকে না তাকিয়ে কিছু সময় জানালার বাইরে আকাশ বা গাছপালা দেখলে মন ভালো থাকে। পড়াশোনা একঘেয়ে হয়ে যায় না। যাদের বাসায় জায়গা একটু কম, তারা ভাঁজ করা যায় এমন টেবিল ও চেয়ার কিনতে পারেন। এতে জায়গার অপচয় হবে না বা ইচ্ছে করলে ঘরের যেকোনো জায়গাতে নিয়ে বসানো যায়।



কোথায় পাবেন

ব্র্যান্ডের ফার্নিচারের শোরুমগুলোতে ছোটদের পড়ার টেবিল পাওয়া যায়। এ ছাড়া ঢাকার পান্থপথ, মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম মার্কেট, মিরপুর রোডের ফুটপাত (ঢাকা কলেজ ও টিচার্স ট্রেনিং কলেজের পাশে), পুরান ঢাকা, বাসাবো, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় আসবাব বিক্রির দোকানে।

দরদাম

আকার–আকৃতি ও নকশাভেদে শিশুদের পড়ার টেবিলের দাম নির্ভর করে। বাহারি নকশা ও ডিজাইনের টেবিলের দাম দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে। আর ভাঁজ করা যায় এমন টেবিল পাবেন ৭০০ থেকে দুই হাজার টাকা। চেয়ারের দাম টেবিলের দামের মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত।