আমড়া নাকি গাব

বর্ষা ঋতুর ফল আমড়া ও গাব। এ দুটি ফল অনেকের কাছে প্রিয়। আমড়া খেতে টক। আর গাব খেতে মিষ্টি স্বাদের। প্রতিদিনের শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে এ দুটি ফল। আমড়া আর গাবের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন ঢাকার বারডেম জেনারেল হাসপাতালের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ।

আমড়া

আমড়া খেতে টক-মিষ্টি স্বাদের। এটি কাঁচা খাওয়ার পাশাপাশি সুস্বাদু আচার, চাটনি ও জেলি তৈরি করা যায়। অনেকে তরকারি হিসেবে রান্না করে খান। আমড়া খেলে মুখে রুচি বাড়ে। আমড়ায় জলীয় অংশ ৮৩.২, খনিজ ০.৬, লৌহ ০.৩৯, আঁশ ০.১, চর্বি ০.১, আমিষ ১.১, শর্করা ১৫, ক্যালসিয়াম ০.৫৫ শতাংশ রয়েছে। আমড়ায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, লোহা, ক্যালসিয়াম আর আঁশ রয়েছে। হজমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় কারণে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এর মধ্যে ভিটামিন সি রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। অসুস্থ ব্যক্তিরা আমড়া খেলে মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আসে। এতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে। শিশুদের দৈহিক গঠনে এটি খুব দরকারি। রক্তস্বল্পতাও দূর করে।

গাব
গাব দেশের একটি পরিচিত ফল।

গাবের পুষ্টি ও ঔষধি গুণ রয়েছে। পাকা ফল খুব সুস্বাদু। গাবে ৬৯.৯ মিলিলিটার পানি, ০.৮ গ্রাম খনিজ, ১.৫ গ্রাম আঁশ, ১.৪ গ্রাম আমিষ, ০.১ গ্রাম চর্বি, ৫৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। গাবের পাতার সেদ্ধ করা কাথ চর্মরোগ সারাতে সাহায্য করে। এই ফলের পাতা সেদ্ধ করা গরম পানি দিয়ে গার্গল করলে ঠান্ডা কাশি কমে যায়। দেশি গাবে ভেষজ চিকিৎসায় জন্য ছাল ও কাঁচা ফল ব্যবহার করে।

এর থেকে পাওয়া ট্যানিন জাতীয় আঠা প্রস্তুত করা হয়। যা জালে, পশুর চামড়ায় ও নৌকায় মাখানো হয়। গাবগাছের কাঠ কালচে, ঘন ও শক্ত;
যা ঘরবাড়ি তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়। গাছের পাতা ও বাকল কৃমিনাশক। কাঁচা ফল পানিতে ভিজিয়ে এর রস দিয়ে মাছ ধরার জাল পাকা করার কাজে লাগানো যায়।