দূরে থেকেও বন্ধুত্ব

প্রযুক্তির কারণে বন্ধুত্বে দূরত্ব এখন কোনো ব্যাপারই না। মডেল: তাসফিয়া। ছবি: অধুনা
প্রযুক্তির কারণে বন্ধুত্বে দূরত্ব এখন কোনো ব্যাপারই না। মডেল: তাসফিয়া। ছবি: অধুনা

তরুণ উদ্যোক্তা আফসান আহদ থাকেন ঢাকায়। আর তাঁর প্রিয় বন্ধুদের একজন ফারজানা ইকবাল থাকেন সেই আট হাজার মাইল দূরে, মার্কিন মুলুকে। ঘড়ির কাঁটার হিসাবে দুজনের দূরত্ব ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা। গত বছর যখন প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখেন ফারজানা, তখন দেশ থেকে আফসান ও বাকি বন্ধুরা নিয়মিত খোঁজখবর নিতেন ফারজানা। সময় যত সামনে এগিয়েছে, ততই বেড়েছে সবার ব্যস্ততা। ফারজানার সব খোঁজ এখন আর রাখা সম্ভব হয় না দেশের কারও। আবার ফারজানাও পারে না বন্ধুদের হুট করে খোঁজ নিতে। সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেসবুকের নীল দেয়াল থেকে যতটা জানা যায় আর কি। মাঝেমধ্যে ফারজানা ভাবেন, সবাই কি দূরে সরে গেল? বন্ধুত্ব কি এতই হালকা যে দূরত্বে বন্ধুত্বের জোর ম্লান হয়ে যায়? বন্ধুত্বের যখন দূরত্ব একটি ব্যাপার, তখন তো মাথায় কিছু বিষয় খেয়াল রাখতেই হবে আপনাকে। আজ জেনে নিন দূরের বন্ধুত্বের রং কীভাবে সতেজ রাখবেন।

সময়জ্ঞান খেয়াল রাখুন

আপনার বন্ধু কোন দেশে আছেন, সময় কতটা সামনে-পেছনে, তা খেয়াল রেখে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। মেসেঞ্জার বা ই-মেইলের মাধ্যমে নিয়মিত বিরতিতে কুশলাদি জিজ্ঞেস করুন। পুরোনো স্মৃতির ঝাঁপি থেকে কোনো ছবিও মাঝেমধ্যে শেয়ার করে অতীতের রঙিন দিনগুলোর কথা নিয়ে গল্প জুড়ে দিতে পারেন।

সরাসরি ভিডিওতে কথা বলুন

এখন ইন্টারনেটে নানা ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্স বা মেসেঞ্জারের মাধ্যমে কথা বলা যায়। আপনার সময় ও বন্ধুর সময় মিলিয়ে কথা বলুন। এমন সময় কথা বলবেন না, যখন হয়তো বন্ধু কাজে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছেন। আবার ঘুমের সময় হলে কথা সংক্ষিপ্ত করুন।

উপহার দিন

আট হাজার মাইল দূরে বন্ধু থাকলেও এখন তো সহজেই উপহার বিশ্বের যেকোনো জায়গায় পাঠানো যায়। বন্ধুর ঠিকানা তাঁর পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে তাঁকে তাঁর প্রিয় বই বা পোশাক উপহার হিসেবে পাঠাতে পারেন নিয়মিত বিরতিতে।

নাক গলানো নয়

আপনার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে অতি উৎসাহে নাক গলানোর চেষ্টা করি অনেক ক্ষেত্রে। বন্ধু যখন দূরে, তখন তাঁর ব্যক্তিগত জীবন বা কোনো সিদ্ধান্তে নাক গলানো বা অভিভাবকত্বগিরি এড়িয়ে চলুন। বন্ধুদের নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে দিন।

প্রত্যাশা কম করুন

আমরা বন্ধুত্বে অনেক সময় অনেক বেশিই প্রত্যাশা করি। প্রত্যাশা করি এমন যে দূরের বন্ধু আমার খোঁজ নেবে, আমাকে উপহার পাঠাবে। দূরের বন্ধুত্বে প্রত্যাশার পাল্লাকে যত হালকা রাখবেন, ততই মঙ্গল। ভেবে দেখুন, দুই দেশের দুটি ভৌগোলিক সময় ব্যবধানের মধ্যে অনেক কিছুই হয়তো প্রত্যাশামাফিক মানিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই কিছু পেলেন না—এমন প্রত্যাশা করে রাগ-অভিমান করবেন না। ব্যস্ততা অনেক ক্ষেত্রেই বন্ধুত্বের সব প্রত্যাশাকে ম্লান করে দেয়।

সূত্র: কোরা