শার্টে স্বস্তি

খাটো হাতার শার্ট ভ্যাপসা গরমে আরাম দেবে। মডেল: অর্ণব, শার্ট: সেইলর, ছবি: সুমন ইউসুফ
খাটো হাতার শার্ট ভ্যাপসা গরমে আরাম দেবে। মডেল: অর্ণব, শার্ট: সেইলর, ছবি: সুমন ইউসুফ

শুধু মেকওভার দিয়েই চেহারা বদল হয়, এটা ঠিক নয়। অনেক সময় পোশাক পরিবর্তন করেও নিজেকে বদলে ফেলা যায়। এই যেমন ফুল হাতার বদলে খাটো হাতার শার্ট পরুন। তারপর আয়নায় দাঁড়িয়ে দেখবেন নিজেকে ‘নতুন’ দেখাচ্ছে!

রোদ-বৃষ্টির এই মৌসুমে ভ্যাপসা গরম এখনো রয়েছে। খাটো হাতার (হাফ স্লিভ) শার্ট হতে পারে চলতি ধারার পোশাক। কারণ, পোশাকে তো আরাম আর স্বস্তিই আসল। সেসব কথা ভেবেই দোকানের সামনের স্ট্যান্ডে এখন ঝুলছে খাটো হাতার শার্ট। শুধু মাঝবয়সী ব্যক্তিদের জন্য নয়, তরুণদের কথা ভেবে খাটো হাতার শার্টে যোগ হয়েছে নতুন নতুন ধারণা। ফ্যাশন হাউস সেইলরের ডিজাইনার রাজিক কুমার ভাওয়াল মনে করেন, ‘শরতে হাফ হাতার শার্ট তরুণদের জন্য সবচেয়ে আরামদায়ক।’

এখন হাফ হাতা শার্টের পক্ষে রাজিক আরও যুক্তি যোগ করলেন, হাফ হাতার শার্টে সহজেই শরীরে বাতাস চলাচল করতে পারে। হাত খোলা থাকে বলে সেখানেও বাতাস লাগে। চাইলে শার্টের সামনের দিকটাও খোলা রাখা যায়। নকশাতেও মাথায় রাখা হচ্ছে তরুণদের পছন্দ। খাটো হাতার শার্টের মধ্যে সুতিই বেশি চোখে পড়ছে। এ ছাড়া লিনেন ও মিলাঞ্জ (টি-শার্টের সুতা) সুতায় তৈরি হচ্ছে কিছু শার্ট, যা নরম ও আরামদায়ক।

আন্তর্জাতিক ধারা মেনে পোশাকে দেখা যাচ্ছে পশুপাখির নকশা। শার্ট: সেইলর
আন্তর্জাতিক ধারা মেনে পোশাকে দেখা যাচ্ছে পশুপাখির নকশা। শার্ট: সেইলর

যেমন নকশা

আন্তর্জাতিক ফ্যাশনে ছেলেদের পোশাকে এখন বেশি চলছে পশুপাখি, ফুল আর গাছপালার নকশা। সেই ধারা দেখা যাচ্ছে দেশি ফ্যাশন হাউসের পোশাকেও। হাতি, ঘোড়া, ব্যাঙ, খরগোশ, পাখি, শেয়াল, ডাইনোসর—কী নেই সেখানে!

শার্টের জমিনে যোগ হচ্ছে নানা রকম মাছ। নদীর ছোট ছোট মাছ থেকে, নানা ধরনের সামুদ্রিক মাছ। তিমি বা ডলফিনের নকশাও আছে। ফুল বা গাছপালার বাইরে নানা ধরনের জ্যামিতিক নকশাও মিলবে।

আশির দশকের নানা ধরনের প্রিন্টও চোখে পড়ছে ছেলেদের এই সময়ের শার্টে। জেন্টেল পার্কের চেয়ারম্যান ও ডিজাইনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘বছরের অন্য সময়ের চেয়ে এখন বেশি বিক্রি হচ্ছে খাটো হাতার শার্ট। এর প্রধান কারণ আবহাওয়া। ক্যাজুয়াল ও স্লিম ফিট—এই দুই ধরনে খাটো হাতার শার্ট মিলবে।’

হালকা রং আর ফুলেল নকশা দুটোই শার্টে চলতি ধারা। শার্ট: জেন্টেল পার্ক
হালকা রং আর ফুলেল নকশা দুটোই শার্টে চলতি ধারা। শার্ট: জেন্টেল পার্ক

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাজারে কিছু বিশেষ শার্ট পাওয়া যায়। চলতি কথায় যেগুলো ‘এক্সপোর্ট কোয়ালিটি’ নামে পরিচিত। বিদেশে রপ্তানির জন্য তৈরি এসব শার্টে ছোটখাটো সমস্যা থাকায় বাছাই করে বাদ দেওয়া হয়। সেসব আবার দেশের বাজারে বিক্রি হয়। এগুলোই ‘এক্সপোর্ট কোয়ালিটি’। এমন শার্ট পাওয়া যায় বঙ্গবাজার, এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেটের কিছু দোকানে। অন্যান্য এলাকাতেও খাটো হাতার এসব শার্ট পাওয়া যায়।

দরদাম

খাটো হাতার শার্টে দোকানভেদে দামের পার্থক্য চোখে পড়বে। সাধারণ দোকানে কিনতে চাইলে দাম শুরু হবে ৩০০ টাকা থেকে। এরপর নকশাভেদে ৮০০ টাকা পর্যন্ত কেনা যাবে। তবে দেশি ব্র্যান্ডের শার্ট কিনতে চাইলে বাজেট কিছুটা বাড়াতে হবে। ব্র্যান্ডভেদে ৮০০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাবে। আবার রপ্তানিযোগ্য শার্ট কেনা যাবে ১ হাজার টাকার মধ্যে।

শার্ট: জেন্টেল পার্ক
শার্ট: জেন্টেল পার্ক

যেখানে পাবেন

ব্র্যান্ডের শার্ট কিনতে যেতে পারেন ক্যাটস আই, রিচম্যান, সেইলর, জেন্টেল পার্ক, ওটু, ইনফিনিটি, ব্যাঙ, প্লাস পয়েন্ট, দেশি দশ, তানজিম, এক্সট্যাসি, ফ্রিল্যান্ড, র নেশন, দর্জি বাড়ি, তাগা ম্যান, মেনজ ক্লাব, ক্লাব হাউস, সারা, বিশ্বরঙ প্রভৃতি দোকানে।

ঢাকার নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, নূর জাহার মার্কেট, বদরুদ্দোজা মার্কেট, চন্দ্রিমা, বঙ্গবাজার, রাপা প্লাজা, প্লাজা এ আর, সীমান্ত স্কয়ার, বেইলি রোড, গুলিস্তান, মিরপুরের মুক্ত বাংলা শপিং কমপ্লেক্স প্রভৃতি মার্কেটে নানা ধরনের হাফ হাতার শার্ট পাবেন।