ঘরের নাশতা

সকালে নাকি খেতে হয় রাজার মতো। তাই ওই সময়টায় টেবিলে ভারী নাশতা না থাকলে কি চলে? সকালের জন্য ঘরেই তৈরি করা যায় মুখরোচক নাশতা। রেসিপি  দিয়েছেন শুভাগতা দেবাশীষ

ছবি: খালেদ সরকার
ছবি: খালেদ সরকার

লুচি

উপকরণ: ময়দা ২ কাপ, তেল বা ঘি ২ কাপ, পানি আধা কাপ ও লবণ স্বাদমতো।

প্রণালি: ময়দায় ৪ টেবিল চামচ তেল দিয়ে ময়ান দিতে হবে। এরপর পানি দিয়ে ময়দা মথে ১০ মিনিট ঢেকে রাখুন। ময়দা ১০ ভাগ করে নিন। পিঁড়িতে খুব সামান্য তেল মাখিয়ে লুচি বেলে নিন। লুচি ডুবো তেলে ভাজতে হবে। লুচি তেলে ছাড়ার পর ফুলে উঠলে ওলটাতে হবে এবং কয়েক সেকেন্ড পর নামাতে হবে। লুচি ফুলে রং সাদা থাকতেই তেল থেকে তুলে নিতে হবে। এরপর গরম গরম পরিবেশন করতে হবে। 

আলুর দম

উপকরণ: ছোট আলু ২৫০ গ্রাম, সরষের তেল ৫০ মিলিলিটার, পেঁয়াজ সেদ্ধ ২০০ গ্রাম, টমেটো পিউরি ২৫ মিলিলিটার, কাশ্মীরি মরিচগুঁড়া আধা চা-চামচ, জিরাগুঁড়া ২ চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, আদা, রসুনবাটা ৫০ গ্রাম ও গরমমসলা ১ চা-চামচ।

প্রণালি: সরষের তেল গরম করুন। ধোঁয়া উঠতে থাকলে তেজপাতা ফোড়ন দিয়ে সেদ্ধ পেঁয়াজবাটা দিয়ে সাঁতলে নিন, যতক্ষণ না সোনালি রং ধরে। এর মধ্যে আদা ও রসুনবাটা দিতে হবে। জিরাগুঁড়া এবং শুকনা মরিচগুঁড়া ও হলুদ পানিতে গুলে ওর মধ্যে দিন। টমেটো পিউরি মেশান। যতক্ষণ না তেল ছাড়ে ততক্ষণ জ্বাল দিতে থাকুন। খোসা ছাড়ানো ছোট আলু দিয়ে পানি ঢেলে দিন। হালকা আঁচে কিছুক্ষণ রান্না করতে হবে যতক্ষণ না আলু সেদ্ধ হচ্ছে। পানি কমে গা মাখা মাখা হলে গরমমসলা ছড়িয়ে পরিবেশন করতে হবে।

আনারসের রস

উপকরণ: আনারস (মাঝারি) ১টি, চিনি ২ চা-চামচ ও বরফকুচি প্রয়োজনমতো।

প্রণালি: আনারস ছোট টুকরা করে কেটে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। পরে ব্লেন্ডারে দিয়ে রস করে ছেঁকে নিন। ছেঁকা হয়ে গেলে রসের মধ্যে চিনি দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে বরফকুচি দিয়ে গ্লাসে পরিবেশন করতে হবে।

ছবি: খালেদ সরকার
ছবি: খালেদ সরকার

পরোটা

উপকরণ: ময়দা ২৫০ গ্রাম, তেল (সয়াবিন) ২ টেবিল চামচ, পানি পরিমাণমতো, লবণ সামান্য ও ডিম ১টি।

প্রণালি: প্রথমেই ময়দাসহ সামান্য লবণ, ডিম দিয়ে পানিতে মেখে খামি করে কিছুটা সময় রেখে দিতে হবে। পরে ময়দার গুলি পাকিয়ে নিয়ে বেলনায় বেলে নিন। এরপর চাটু বা তাওয়ায় তেল দিয়ে পরোটার দুই পাশ ভেজে নামাতে হবে।

কষা মাংস

উপকরণ: মুরগি ৫০০ গ্রাম, সরিষার তেল ৪ টেবিল চামচ, পেঁয়াজকুচি ২ কাপ, মরিচগুঁড়া ২ চা-চামচ, ধনেগুঁড়া ২ চা-চামচ, হলুদ ১ চা-চামচ, আদা ও রসুনবাটা ২ চা-চামচ, গরমমসলা ১ চা-চামচ, তেজপাতা ২টি ও লবণ স্বাদমতো।

প্রণালি: কড়াইতে সরিষার তেল গরম করে গরমমসলা ও তেজপাতা ফোড়ন দিন। এর মধ্যে পেঁয়াজকুচি দিয়ে ভাজুন। পেঁয়াজগুলো বাদামি হলে আদা ও রসুনবাটা দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়বেন। এবার এর মধ্যে মরিচের গুঁড়া, হলুদের গুঁড়া, ধনেগুঁড়া ও পানি মেশাতে হবে। মসলা কষাতে কষাতে যখন তেল ছাড়বে, তখন মাংসগুলো দিয়ে কষাতে হবে। অল্প পরিমাণে পানি দিয়ে হালকা আঁচে রান্না করতে হবে। মাংস সেদ্ধ হয়ে ঝোল কমে এলে নামাতে হবে। ওপরে পেঁয়াজ বেরেস্তা দিয়ে পরিবেশন করতে হবে।

কফি

উপকরণ: কফি ১ টেবিল চামচ, ফুটানো পানি ১ কাপ, কফি ম্যাট ২ টেবিল চামচ, গুঁড়া দুধ ২ টেবিল চামচ ও চিনি পরিমাণমতো।

প্রণালি: সব উপকরণ গরম পানিতে গুলে ব্লেন্ডার করে নিয়ে কাপে ঢেলে খেতে হবে।

পানি পোচ

উপকরণ: ডিম ২টা, পানি আধা লিটার, ভিনেগার ১ কাপ ও লবণ আধা চা-চামচ।

প্রণালি: পানি ফুটিয়ে ভিনেগার মিশিয়ে তার মধ্যে লবণ দিন। এবার ডিম ভেঙে পানির মধ্যে ছেড়ে দিতে হবে। ৩ থেকে ৪ মিনিট পরে পানি থেকে তুলে নিয়ে পরিবেশন করুন।

ছবি: খালেদ সরকার
ছবি: খালেদ সরকার

পাউরুটি

উপকরণ: পানি ৩১০০ মিলিলিটার, শুকনা ইস্ট ৫০ গ্রাম, ময়দা ৫০০০ গ্রাম, লবণ ১০০ গ্রাম, চিনি ১১০ গ্রাম, গুঁড়া দুধ ১২৫ গ্রাম, সটেনিং ১৫০ গ্রাম ও তেল ১ টেবিল চামচ।

প্রণালি: ইস্ট পানিতে ভেজাতে হবে। সব উপকরণ একত্রে মিশিয়ে ইস্ট মেশাতে হবে। পরে খামিরা তৈরি করে ভালো করে মিশিয়ে ফারমেন্ট করতে হবে। ১-২ ঘণ্টা ঢেকে রাখলে ফারমেন্ট পরিপূর্ণ হবে। খামি ফুলে দ্বিগুণ হলে আবার খুলে ভালো করে মাখাতে হবে। দুই হাতে আলতোভাবে বেলে খামির ১ পাউন্ড পাউরুটির আয়তাকার পাত্রের সমান লম্বা করে ১ ঘণ্টা ঢেকে রাখতে হবে। ওভেনে ২০০ ডিগ্রি সে. তাপ দিতে হবে। খামির ফেঁপে পাত্রের সমান উঁচু হলে ওভেনে ২৫-৩০ মিনিট বেক করতে হবে। ওভেন থেকে নামিয়ে পাউরুটি পাত্র থেকে বের করে ওপরে তেল মাখিয়ে পরিবেশন করতে হবে।

পনির কাটলেট

উপকরণ: পনির ৬০ গ্রাম, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচের কুচি ৩টা, ধনেপাতা স্বাদমতো, লবণ আধা চা-চামচ, গরমমসলার গুঁড়া আধা চা-চামচ, জিরাগুঁড়া আধা চা-চামচ, ডিম ১টা, ময়দা ১ কাপ, তেল পরিমাণমতো ও ব্রেডক্র্যাম্ব পরিমাণমতো।

প্রণালি: পনির গ্রেট করে নিতে হবে। এবার সব উপকরণ মিশিয়ে নিয়ে গোল করে দলা পাকাতে হবে। চুলায় কড়াই চাপিয়ে তেল গরম করে গুলিগুলো ব্রেডক্র্যাম্বে মাখিয়ে ডুবো তেলে ভাজতে হবে। ভাজা লাল রং ধারণ করলে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

ছবি: খালেদ সরকার
ছবি: খালেদ সরকার

রুটি

উপকরণ: আটা ২৫০ গ্রাম, লবণ পরিমাণমতো, পানি পরিমাণমতো।

প্রণালি: পরিমাণমতো পানি দিয়ে আটা মিশিয়ে নিতে হবে। সামান্য পরিমাণ লবণ পানিতে মিশিয়ে নিতে হবে। আটা ভালো করে মাখিয়ে খামি তৈরি করে একটা একটা করে চাকি বেলনায় ভালো করে বেলে নিয়ে তাওয়ায় ভাজতে হবে।

লাবড়া

উপকরণ: মিষ্টিকুমড়া ১ কাপ, কাঁচা কলা ১ কাপ, বেগুন ১ কাপ, মিষ্টিআলু আধা কাপ, আলু আধা কাপ, মুলা ১ কাপ ও বরবটি আধা কাপ (এই সবজিগুলো ছোট ছোট করে কাটা হতে হবে) কাঁচা মরিচ ৪/৫টি, হলুদ ১ চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, তেল আধা কাপ, পাঁচফোড়ন ২ চা-চামচ, চিনি ১ চা-চামচ, শুকনা মরিচ ২টা, ঘি ১ টেবিল চামচ এবং আদা ছেঁচা ১ চা-চামচ।

প্রণালি: কড়াইতে তেল গরম করে তেজপাতা, শুকনা মরিচ ও পাঁচফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন ভাজা ভাজা হয়ে এলে সবজিগুলো দিয়ে হালকা নাড়াচাড়া দিয়ে লবণ ও হলুদ দিয়ে হালকা আঁচে ঢেকে রাখতে হবে। তরকারি সেদ্ধ হয়ে গেলে কাঁচা মরিচ, আদা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ ঢেকে রেখে চিনি ও ঘি দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে নামিয়ে ফেলতে হবে। একটু ঠান্ডা হলে পরিবেশন করা যাবে।

শাহি হালুয়া

উপকরণ: সুজি ৩০০ গ্রাম, ঘি ১৫০ গ্রাম, কাজু ৫০ গ্রাম, কিশমিশ ৫০ গ্রাম, পেস্তা ২৫ গ্রাম, খেজুর (বীজ ছাড়িয়ে কাট) ৫টি, চিনি ৩০০ গ্রাম, দুধ ২-৩ কাপ, গোলাপজল ৪ ফোঁটা ও রুপার তবক।

প্রণালি: প্যান গরম করে সেটিতে ঘি দিন। ঘি গরম হলে আঁচ কমিয়ে দিয়ে সুজি দিয়ে দিতে হবে। সুজি কিছুক্ষণ ভাজতে হবে। বাদামি হয়ে গেলে এতে খেজুর, কিশমিশ, কাজু, পেস্তা ও চিনি দিতে হবে। দুধ গরম করে সুজির মধ্য দিয়ে ভালো করে নাড়তে হবে। ফুটলে গোলাপজল ছড়িয়ে ঘন হয়ে এলে নামিয়ে কাচের পাত্রে ঢালতে হবে। তৈরি হালুয়া ঠান্ডা হলে রুপার তবক লাগিয়ে পরিবেশন করতে হবে।

এলাচি চা

উপকরণ: পানি ৪ কাপ, এলাচি ১৪টি, ১ কাপ ঘন দুধ, চা পাতা ৪ চা-চামচ ও চিনি সিকি কাপ।

প্রণালি: চুলায় ৪ কাপ পানি দিয়ে ফুটিয়ে নিন। পানি ফুটে উঠলে এলাচির খোসা, বিচিসহ পানিতে দিয়ে ২ থেকে ৩ মিনিট কড়া জ্বাল দিতে হবে। এবার চা পাতা দিয়ে আরও ১ মিনিট মাঝারি আঁচে রাখতে হবে। ঢাকনা দিয়ে নামিয়ে ৩০ সেকেন্ড পর চায়ের রং ছেঁকে নিতে হবে। গরম ঘন দুধ ও চিনি মিশিয়ে গরম-গরম পরিবেশন করতে হবে।