রোদচশমা কখন জরুরি

বাইরে প্রখর রোদ। রোদের দিকে তাকানো যায় না এমন তেজ। এই রোদ কি চোখের কোনো ক্ষতি করতে পারে? রোদচশমা বা সানগ্লাস কি কেবল রোদের প্রখর তেজ থেকে একটু আরাম পাওয়ার জন্য? আসলে রোদে যে অতিবেগুনি রশ্মি থাকে, তা সত্যিই চোখের জন্য ক্ষতিকর।

■ গবেষণা বলছে, টেরিজিয়াম বা চোখের মধ্যে খানিকটা পিণ্ড গজিয়ে ওঠার সমস্যা তাদেরই বেশি হয়, যারা মধ্যদিনে প্রখর রোদে বাইরে কাজ করে। জেলে, কৃষক, সার্ফার, স্কি খেলোয়াড়েরা এতে আক্রান্ত হন বেশি। বিশেষ করে নদী, সমুদ্র, বিস্তীর্ণ মাঠ বা পাহাড়ের বরফে যে সূর্যালোক প্রতিফলিত হয়, তা এদের চোখে সমস্যা সৃষ্টি করে।

■ স্নো ব্লাইন্ডনেস বলে একটা শব্দ আছে চিকিৎসাবিজ্ঞানে। বরফে প্রতিসরিত হয়ে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি চোখ ধাঁধিয়ে দেয় ও স্থায়ী ক্ষতি করে বলে রোগটির এমন নাম।

■ চোখের ছানি, গ্লকোমা, ম্যাকুলা ডিজেনারেশন ও অন্যান্য কিছু সমস্যার জন্যও অতিবেগুনি রশ্মি কিছুটা দায়ী বলে ধারণা করা হয়।

ছোটরা সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিতে বেশি আক্রান্ত হয়। কেননা, তারা রোদের মধ্যে খেলা করে এবং প্রায়ই সূর্যের দিকে তাকাতে চেষ্টা করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, জীবনের ৮০ শতাংশ অতিবেগুনি রশ্মি আমরা মোকাবিলা করি প্রথম ২০ বছরেই, বাকি জীবনটা এত রোদে কাটাতে হয় না। তাই নিজের ও বিশেষ করে শিশুদের জন্য রোদচশমা ব্যবহার করা একটা দরকারি বিষয়।

১. বালুময় উপত্যকা, সমুদ্র বা নদী, বরফে ঢাকা প্রান্তরে বেড়াতে গেলে চোখের ক্ষতি বেশি হওয়ার আশঙ্কা। তাই ঘুরতে গেলে রোদচশমা ব্যাগে অবশ্যই ভরবেন।

২. প্রখর রোদে বিশেষ করে মধ্যদুপুরে বাইরে গেলে কালো রোদচশমা ও চোখ ঢাকা হ্যাট বা ছাতা ব্যবহার করা ভালো।

৩. শিশুদের সরাসরি সূর্যের দিকে তাকাতে নিষেধ করবেন। মুরব্বিরা বলতেন, সূর্যগ্রহণের সময় সূর্যের দিকে তাকানো নিষেধ। কথাটা সত্যি। এ সময় সূর্য আরও বেশি অতিবেগুনি রশ্মি ছড়াতে থাকে। ফলে চোখের স্থায়ী ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এর নাম সোলার রেটিনোপ্যাথি।

৪. বাজারে আলট্রাভায়োলেট রে ব্লকিং সানগ্লাস পাওয়া যায়। চোখের পাশ দিয়ে ঢাকা থাকে এমন সানগ্লাস। পাহাড় ও সমুদ্রে বেড়াতে গেলে এ ধরনের রোদচশমা ভালো।

পূরবী রানী দেবনাথ, চক্ষু বিশেষজ্ঞ, বারডেম হাসপাতাল