পুরুষের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা

সুস্থ থাকতে নিয়মিত কিছু পরীক্ষা করতে হবে। মডেল: বাপ্পা। ছবি: অধুনা
সুস্থ থাকতে নিয়মিত কিছু পরীক্ষা করতে হবে। মডেল: বাপ্পা। ছবি: অধুনা

সুস্থ্ থাকতে নারী-পুরুষ সবার শরীরের যত্ন নিতে হয়। পুরুষ বলে অসুস্থতা এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নিয়মিত কিছু পরীক্ষা–নিরীক্ষা আগাম করে রাখলে সুস্থ থাকা আরও সহজ হয়ে যায়।

হৃৎস্বাস্থ্য
পুরুষের হৃদ্রোগের ঝুঁকি নারীর তুলনায় বেশি। পুরুষের হৃৎস্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রথম থেকেই সচেতন হতে হবে। হৃদ্রোগ হওয়ার পেছনে অনেকগুলো রিস্ক ফ্যাক্টর থাকে। সবগুলো রিস্ক ফ্যাক্টরের মধ্যে রক্তে উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রাকে হৃদ্রোগের অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হয়। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আ ফ ম হেলাল উদ্দীন বলেন, নিয়মিত ব্যায়াম করার পাশাপাশি হৃদ্রোগ এড়াতে কিছু পরীক্ষা করে নিতে পারেন। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা দেখতে লিপিড প্রোফাইল এবং ইসিজির মতো প্রাথমিক পরীক্ষাগুলো করা যেতে পারে।

রক্তচাপ
শরীরের হৃৎপিণ্ড একধরনের পাম্প, যা অবিরাম সংকুচিত ও প্রসারিত হওয়ার মাধ্যমে ধমনি দিয়ে সারা শরীরে প্রবাহিত হয়। শরীরের স্বাভাবিক রক্ত সঞ্চালনের জন্য একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় রক্তচাপ থাকা অত্যন্ত জরুরি। এই রক্তচাপের অস্বাভাবিক তারতম্যকে বলে উচ্চ রক্তচাপ বা নিম্ন রক্তচাপ। পুরুষদের উচ্চ রক্তচাপে ভোগার প্রবণতা বেশি। এ জন্য চিকিৎসকের কাছ থেকে নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ করে নিতে হবে।

ডায়াবেটিস
পরিবারে ডায়াবেটিস রোগের ইতিহাস থাকলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ডায়াবেটিস যেকোনো সময়ে, যেকোনো বয়সে হতে পারে। ডায়াবেটিস নির্ণয়ে র‌্যানডম ব্লাড সুগার, ওজিটিটি, এইচবিএ১সি করে নিন।

কিডনি ও মূত্রতন্ত্র
শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতো কিডনি ও মূত্রতন্ত্র বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। ইউরোলজিস্ট অধ্যাপক কাজী রফিকুল আবেদীন বলেন, ‘কিডনির সুস্থতা দেখার জন্য প্রাথমিকভাবে ইউরিন রুটিন পরীক্ষা, রক্তের ক্রিয়েটিনিন টেস্ট করা যেতে পারে। এ ছাড়া কিডনি কিংবা মূত্রতন্ত্রে পাথর আছে ধারণা করলে সাধারণত আলট্রাসনোগ্রাফি অব কেইউবি এবং প্লেইন এক্স-রে অব কেইউবি করা হয়। এই পরীক্ষাগুলো ৪০ বছর পার হওয়া সব পুরুষের প্রতিবছরই করা উচিত।

যৌনস্বাস্থ্য
বিয়ের আগে অবশ্যই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন। পুরুষের সন্তান উৎপাদনের সক্ষমতা আছে কি না, দেখার জন্য সিমেন অ্যানালাইসিস একটি বিশেষ পরীক্ষা। বিয়ের পাত্র কিংবা পাত্রী থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হলে তাঁদের সন্তানও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে রক্ত পরীক্ষা করে নিতে হবে। পুরুষের প্রোস্টেট পরীক্ষাও জরুরি। প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি এড়াতে প্রোস্টেট স্পেসিফিক এন্টিজেন (পিএসএ) প্রতিবছরই করতে হয়।

লেখক: চিকিৎসক