ফ্ল্যাট কেনার আগে

ফ্ল্যাট বা প্লটের চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে মুগ্ধ আপনি। এবার বুঝি নিজের ফ্ল্যাট-প্লট হয়েই গেল। টাকা দিয়ে কবে ফ্ল্যাট-প্লট বুঝে পাবেন, চিন্তা করছেন। আবাসন প্রতিষ্ঠানটি কি ভুয়া—এমন প্রশ্ন মনে আসতেই পারে। একটু সচেতন হলেই আপনার এসব দুশ্চিন্তা কমতে পারে। যে প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্লট-ফ্ল্যাট কিনবেন, তাদের সম্পর্কে খোঁজ নিতে হবে। এতে প্রতারণার ঝুঁকিও কমবে।
ফ্ল্যাট-প্লট কিনতে হলে আপনি কত টাকা বিনিয়োগ করবেন, প্রথমে তার একটি হিসাব করে ফেলুন। তারপর পছন্দমতো ফ্ল্যাট-প্লট খুঁজুন। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ নিয়েও ফ্ল্যাট কিনতে পারেন। এসব প্রতিষ্ঠান দীর্ঘমেয়াদি কিস্তিতে ব্যাংকঋণ দিচ্ছে। এমনকি কোনো কারণে আপনি আয়কর নথিতে কোনো বছরের কিছু আয় দেখাতে ভুলে গেছেন, এখন সেই টাকায় ফ্ল্যাট কিনতে পারবেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কোনো প্রশ্ন করবে না।
টাকা সংস্থানের কথা হলো। এবার আবাসন প্রতিষ্ঠানটি বৈধ কি না, তা যাচাই করতে হবে। আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণা এড়াতে কেনা বা বুকিং দেওয়ার আগে ক্রেতাদের দেখতে হবে, কোম্পানিগুলোর বৈধ অনুমোদনপত্রের নকশা আছে কি না। সতর্ক থাকতে হবে, প্লট প্রকল্পটি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানের (ড্যাপ) বন্যাপ্রবণ অঞ্চলে পড়েছে কি না। আবার যে এলাকায় প্রকল্পটি, সেখানে আদৌ তাদের জমি আছে কি না। প্রয়োজনে ক্রেতারা প্রকল্প এলাকায় গিয়েও খোঁজ নিতে পারেন।
ফ্ল্যাট কেনার সময় দেখতে হবে, ভবনের নকশা রাজউক অনুমোদিত কি না। অনুমোদন নেওয়া থাকলে নকশা অনুযায়ী ভবন তৈরি হচ্ছে কি না। কেননা, নকশা অনুযায়ী ভবন তৈরি না হলে রাজউক সেই ভবনের অবৈধ অংশ ভেঙে দিতে পারে।
মনে রাখতে হবে, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও নিজ নিজ প্লট প্রকল্পের অনুমোদন দিয়ে থাকে।
ফ্ল্যাট-প্লট কিনতে ক্রেতার অবশ্যই কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) থাকতে হবে। টিআইএন ছাড়া ফ্ল্যাট-জমি নিবন্ধন করা যাবে না। আর সেই টিআইএনের বিপরীতে নিয়মিত বার্ষিক কর বিবরণী জমা দিতে হবে।
এ ছাড়া ফ্ল্যাট ও প্লট কেনার সময় নিবন্ধন মাশুল ও কর দিতে হয়। বিভিন্ন ধরনের মাশুল বা কর হার হলো গেইন ট্যাক্স ৪ শতাংশ, স্ট্যাম্প মাশুল ৩ শতাংশ, নিবন্ধন মাশুল ২ শতাংশ, স্থানীয় সরকার কর ২ শতাংশ ও মূসক ৩ শতাংশ।