গরম গরম পিঠা

পিঠা খাওয়ার উৎসব শুরু হলো বলে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বানানো হয় নানা রকম পিঠা। হিম হিম আবহাওয়ায় গরম গরম পিঠা খাওয়ার রীতি এ দেশে যুগ যুগ ধরে। পছন্দের এলাকার পিঠাগুলো বাড়িতেই বানিয়ে নিতে পারবেন। রেসিপি দিয়েছেন শাহানা পারভীন
ম্যারা পিঠা
ম্যারা পিঠা

ম্যারা পিঠা

সিলেট
উপকরণ
আতপ চালের গুঁড়া ৩ কাপ, তরল দুধ আধা লিটার, খেজুর গুড় ১ কাপ, নারকেল কোরানো ১ কাপ ও লবণ এক চিমটি।

প্রণালি
প্রথমে একটি সসপ্যানে দুধ, নারকেল, লবণ ও গুড় দিয়ে জ্বাল দিন। ফুটে উঠলে চালের গুঁড়া দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। ঢেকে রাখুন কিছুক্ষণ। কিছুটা ঠান্ডা হলে মসৃণ করে মেখে ছোট ছোট প্যারা আকারে তৈরি করে ঝাঁঝরিতে ভাপে সেদ্ধ করে নিন। পনেরো থেকে বিশ মিনিট অপেক্ষা করুন। তৈরি হয়ে গেল সিলেটের ম্যারা পিঠা।

পাকন পিঠা
পাকন পিঠা

পাকন পিঠা
বরিশাল
উপকরণ
আতপ চালের গুঁড়া অথবা ময়দা ২ কাপ, ঘন দুধ (তরল) ১ কাপ, চিনি ১ কাপ, দারুচিনি ২ টুকরা, ঘি ২ টেবিল চামচ, এলাচি গুঁড়া এক চিমটি ও তেল ভাজার জন্য।

প্রণালি
ময়দা/চালের গুঁড়া দুধ দিয়ে সেদ্ধ করে তাতে ঘি ও এলাচি গুঁড়া দিয়ে মসৃণ করে মেখে খামির তৈরি করে নিন। পছন্দমতো ছাঁচে পাকন পিঠা তৈরি করে বাদামি করে ডুবো তেলে ভেজে নিন। ‘১ কাপ পানিতে ১ কাপ চিনি ও দারুচিনি দিয়ে সিরা তৈরি করুন, পিঠা ১ ঘণ্টা সিরায় ভিজিয়ে প্লেটে তুলে রাখুন। ঠান্ডা হলে বাদাম-কিশমিশ দিয়ে পরিবেশন করুন।

নকশি পিঠা
নকশি পিঠা

নকশি পিঠা
নরসিংদী
উপকরণ
পানি ৩ কাপ, লবণ সামান্য, চালের গুঁড়া ২ কাপ, তেল ভাজার জন্য। সিরা তৈরি করতে লাগবে— ১ কাপ গুড় অথবা ১ কাপ চিনি, পানি ১ কাপ ও তেজপাতা ১টি জ্বাল দিয়ে সিরা তৈরি করে নিতে হবে।

প্রণালি
সসপ্যানে লবণ ও পানি দিয়ে জ্বাল দিন। পানি ভালো করে ফুটিয়ে তাতে চালের গুঁড়া দিন। নেড়েচেড়ে ঢেকে রাখুন কিছুক্ষণ। মসৃণ করে মেখে ছোট ছোট পুরু রুটি বানিয়ে টুথপিক দিয়ে পছন্দমতো নকশা করে ডুবো তেলে ভেজে সিরায় দিয়ে তুলে নিন।

দুধ-চিতই
দুধ-চিতই

দুধ-চিতই
ফরিদপুর
উপকরণ
ক. চালের গুঁড়া ৩ কাপ, লবণ সামান্য, কুসুম গরম পানি প্রয়োজনমতো। খ. গুড়ের সিরা তৈরি করতে লাগবে দুধ ১ লিটার ও খেজুর গুড় দেড় কাপ।

প্রণালি
‘ক’ উপকরণ দিয়ে একটি গোলা তৈরি করে ১ ঘণ্টা ঢেকে রাখুন। গোলা যেন বেশি পাতলা বা বেশি ঘন না হয়। বাজারে পাওয়া যায় মাটির ছাঁচের খোলা অথবা লোহার কড়াই। খোলা চুলায় দিয়ে তাতে সামান্য তেল ও লবণ মাখিয়ে গরম করে মুছে নিতে হবে। বড় চামচে গোলা নিয়ে প্রতিটি ছাঁচে ভরে ঢেকে দিতে হবে। তিন-চার মিনিট পর ঢাকনা খুলে পিঠা তুলে নিতে হবে। গুড় ও দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে সিরা তৈরি করে নিন। এক রাত ভিজিয়ে রেখে পরিবেশন করুন দুধ-চিতই পিঠা।
(চিতই পিঠা হাঁস-মুরগি বা গরুর ভুনা মাংসের সঙ্গে পরিবেশন করা হয়)।

মসলা পিঠা
মসলা পিঠা

মসলা পিঠা
ময়মনসিংহ
উপকরণ
চালের গুঁড়া ২ কাপ, পানি ২ কাপ, মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ, গরমমসলার গুঁড়া আধা চা-চামচ, আদা বাটা ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো ও তেল ভাজার জন্য।

প্রণালি
সসপ্যানে পানি দিয়ে তাতে বাটা ও গুঁড়া মসলা দিয়ে ফোটাতে হবে। এবার চালের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে নেড়েচেড়ে নামিয়ে ঢেকে রাখতে হবে পাঁচ মিনিট। মিশ্রণ কিছুটা ঠান্ডা হলে ভালো করে মেখে মণ্ড তৈরি করে নিন। এবার রুটির মতো বেলে কুকি কাটার দিয়ে গোল করে কেটে ডুবো তেলে ভেজে নিতে হবে। ভুনা মাংস অথবা কলিজা ভুনা দিয়ে মসলা পিঠা পরিবেশন করা যায়।

পানতোয়া বা ডিম পিঠা
পানতোয়া বা ডিম পিঠা

পানতোয়া বা ডিম পিঠা
নোয়াখালী
উপকরণ
ডিম ১টি, লবণ স্বাদমতো, ময়দা দেড় কাপ, কাঁচা মরিচ মিহি কুচি ১টি, পেঁয়াজ মিহি কুচি ১ টেবিল চামচ, ধনেপাতা বাটা ১ চা-চামচ, প্রয়োজনমতো পানি ও ভাজার জন্য তেল।

প্রণালি
ফ্রাইপ্যানে তেল দিয়ে ডিম ভেজে নিতে হবে। ময়দা, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, ধনেপাতা ও পানি দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিতে হবে। এবার ভাজা ডিম মিশ্রণে ডুবিয়ে ডুবো তেলে ভেজে নিতে হবে। একইভাবে তিনবার মিশ্রণে ডুবিয়ে ভেজে তুলে নিতে হবে। ছুরি দিয়ে কেটে পরিবেশন করা হয় পানতোয়া পিঠা।