রোগী যখন শয্যাশায়ী

পক্ষাঘাত বা স্ট্রোক, ফ্র্যাকচার, অস্ত্রোপচারের পর বা অন্য কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে পরিবারের বয়স্ক মানুষটি দীর্ঘদিনের জন্য বিছানায় পড়ে যান। এ সময় বাতি সমস্যা সৃষ্টি করে চাপজনিত ঘা বা বেড সোর। শুধু ব্যথা ও অস্বস্তি নয়, সংক্রমণ হয়ে জটিলতা ও ভোগান্তি বাড়ায় এই বেড সোর। সাধারণত কাঁধের পেছনের দিকে, কনুই, কোমর, পায়ুপথের ওপরের দিকে এবং গোড়ালির পেছনের অংশে চাপজনিত ঘা বেশি হয়। দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী হওয়ার ফলে অঙ্গ–প্রত্যঙ্গের নড়াচড়া কম হয়, রক্ত চলাচলে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়, অবশ বা পড়ে থাকা অঙ্গে পুষ্টি ও অক্সিজেন সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। এ জন্য এ ধরনের ঘা সৃষ্টি হয়।

বাড়িতে শয্যাশায়ী রোগী থাকলে তার নার্সিং কেয়ার বা সেবা দেওয়ার সময় এই ঘা প্রতিরোধের বিষয়টি অন্যতম গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। কী করতে পারেন আপনি? 

১. শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন

দুই ঘণ্টা পরপর রোগীকে ডানে-বাঁয়ে কাত করে দিন। কখনো চিত করে দিন। প্রয়োজনে একাধিক সেবাকারী মিলে বারবার রোগীর অবস্থান পরিবর্তন করে দিন। এতে একই জায়গার ত্বক, মাংসপেশির ওপর চাপ কম পড়ে এবং প্রেশার, আলসার হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। 

২. ত্বক পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখুন

ত্বক যত শুষ্ক ও পরিচ্ছন্ন থাকবে, চাপজনিত ঘা হওয়ার আশঙ্কা তত কম। তাই কুসুম গরম পানিতে সামান্য সাবান নিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে দিন। এরপর তোয়ালে দিয়ে স্থানটি শুকনো করে মুছুন। খুব জোরে ঘষামাজা করা যাবে না, আলতো করে পরিষ্কার করুন। 

৩.বালিশ ব্যবহার করুন

কাত হয়ে শোয়া অবস্থায় দুই পায়ে হাঁটুর মাঝে এবং দুই হাতের মাঝে বালিশ ব্যবহার করুন। 

৪. ব্যায়াম অনুশীলন

বিছানায় থাকা অবস্থায় ব্যায়াম করা যায় এটা অনেকেই ভাবতে পারেন না। কিন্তু রোগীর হাত, পা, কোমরের কিছু ব্যায়াম করলে ঘা হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। যেমন কোমর ওপরে উঠিয়ে ১০ সেকেন্ড ধরে রেখে নামানো। এভাবে বারবার করুন।

ক্লিনিক্যাল অকুপেশনাল থেরাপিস্ট, স্ট্রোক রিহ্যাবিলিটেশন ইউনিট, সিআরপি, মিরপুর, ঢাকা