ত্বকের সুস্থতায় গোলাপজল

রানি ক্লিওপেট্রা থেকে শুরু করে ব্রিটিশ রাজবধূ মেগান মার্কেল, হলিউড অভিনেত্রী মিলা কুনিস, ক্যামেরন ডিয়াজ—সবার সৌন্দর্যচর্চার অন্যতম উপাদান গোলাপজল। ত্বকের সুস্থতা ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে তাঁরা তো বটেই, অনেকেই নিয়মিত প্রাকৃতিক এই উপাদান ব্যবহার করেন।
গোলাপজলের ব্যবহার ছিল মোগল আমলেও। তখন সুগন্ধি হিসেবে, আবার খাবারেও বাড়তি স্বাদ আনতে ব্যবহার করা হতো এটি। সে ধারা এখনো চলছে। ইরানে প্রথম বড় বড় গোলাপের পাপড়ি পানিতে বাষ্পীভূত করে বিশুদ্ধ করে নেওয়া হয়। এরপর নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেই বাষ্পকে পানিতে রূপান্তর করে বোতলজাত করা হয়। মধ্যপ্রাচ্যসহ আমাদের দেশে যুগে যুগে কেন গোলাপজলের এত কদর, তা একবার দেখে নেওয়া যাক।

ত্বকের সুস্থতায়: ত্বকের জন্য সবচেয়ে ভালো টোনার হলো গোলাপজল। প্রাকৃতিক এ উপাদান ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য ঠিক রাখে। এর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট উপাদানের কারণে ত্বকে সহজে বয়সের ছাপ পড়ে না। তৈলাক্ত ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণ করে। ব্রণ, একজিমা, ত্বকের র‌্যাশসহ বিভিন্ন সমস্যাকে কমিয়ে আনে।
একই সঙ্গে ত্বক পরিষ্কার রাখে এবং লোমকূপ খুলে দেয়। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে লেবুর রসের সঙ্গে ১ চা–চামচ গোলাপজল মিশিয়ে দিলে ভালো হয়।

চোখের আরামে: একরাশ ক্লান্তি নিয়ে ঘরে ফিরলেন। একটু তুলায় গোলাপজল ভিজিয়ে চোখের ওপর আলতো করে রাখুন। একনিমেষে ক্লান্তি চলে যাবে। চোখের নিচের কালো দাগ দূর হবে।

গোলাপের মতো ঠোঁট: অনেকের ঠোঁট ফাটার সমস্যা থাকে। একটুতেই শুষ্ক হয়ে যায়। গোলাপজলে তুলা বা নরম কাপড় ভিজিয়ে আলতো করে ঠোঁটে চেপে নিন। মরা ত্বক দূর হয়ে যাবে। নিয়মিত গোলাপজল ব্যবহারে গোলাপি আভা তৈরি হয়।
দীর্ঘক্ষণ মেকআপ ধরে রাখে: মেকআপ করার আগে চোখ ও ঠোঁট বন্ধ করে স্প্রে করে গোলাপজল দিতে পারেন। সেটা সম্ভব না হলে তুলায় ভিজিয়ে নিয়ে মুখে একবার ব্যবহার করে শুকিয়ে নিন। এরপর পছন্দমতো মেকআপ ব্যবহার করবেন। মসৃণভাবে দীর্ঘক্ষণ মেকআপ ঠিক থাকবে।

মন ভালো রাখতে: মন খারাপ হলে গোলাপজলের তৈরি হালকা সুগন্ধি ব্যবহার করলে মন ফুরফুরে হয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অ্যান্টি–ডিপ্রেসেন্ট হিসেবে এটি কার্যকর।
কাটাছেঁড়ায়: ত্বকে অল্প কাটা, পোড়া বা ক্ষত হলে গোলাপজল ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে তার উপসম হয়। কারণ, এটি অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

কখন ব্যবহার করবেন
সকালে মুখ পরিষ্কার করে গোলাপজল দিয়ে আরেকবার ত্বক মুছে নিয়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন। রাতে ঘুমানোর সময় একই নিয়মে করতে পারেন।

কয়েকজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে ও কয়েকটি ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নিয়ে লিখেছেন তৌহিদা শিরোপা