খাবার হোক স্বাস্থ্যকর

খাবারে তেল-মসলা কম রাখলেই সেটা শরীরের জন্য ভালো। ছবি: নকশা
খাবারে তেল-মসলা কম রাখলেই সেটা শরীরের জন্য ভালো। ছবি: নকশা

ভোজনরসিক বাঙালিমাত্রই তেল-মসলা দেওয়া খাবার ভালোবাসে। কাচ্চি-রোস্টে বিয়েবাড়ির ভোজ কিংবা বাড়ি ফেরার পথে পুরি-শিঙাড়ায় নিত্য উদরপূর্তি—তেল আর মসলা না হলে খাবারের আয়োজনটাই যেন পানসে। ইতালীয় কায়দায় তৈরি পাস্তা খেতে বসেও পাতে চাই বাড়তি মেয়োনেজ কিংবা লবণ।
তবে এত তেল-মসলা শরীরে সইবে তো? বারডেম জেনারেল হাসপাতালের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ বলেন, প্রতিটি মসলা ও তেলের গুণাগুণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রান্নায় এগুলোর ব্যবহার পরিমিত হলে একদিকে যেমন স্বাদে আসে নতুনত্ব, অন্যদিকে পরিপাকতন্ত্রের কাজে সহায়তা করে। তবে এই দুটি জিনিসের ব্যবহার অতিরিক্ত হলে বেড়ে যাবে স্বাস্থ্যঝুঁকি।

অতিরিক্ত তেল ও মসলায় যা হয়
● শর্করা ও আমিষজাতীয় খাবারের তুলনায় তেলজাতীয় খাবার থেকে আড়াই গুণ বেশি ক্যালরি আসে। মানে, ভাতের বদলে সমপরিমাণ পোলাও খেলে কিংবা রুটির বদলে সমপরিমাণ পরোটা খেলে আপনি আড়াই গুণ বেশি ক্যালরি পাবেন। ফলে ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে।
● অতিরিক্ত তেল ও মসলায় তৈরি খাবার খেলে অ্যাসিডিটি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। ডুবোতেলে ভাজা খাবারে অ্যাসিডিটির আশঙ্কা আরও বেশি।
● গুরুপাক বা অতিরিক্ত মসলা দেওয়া খাবার খেলে পেটের অন্যান্য সমস্যাও দেখা যায়। এমনকি আলসারও হতে পারে। অতিরিক্ত তেল-মসলা দিয়ে তৈরি খাবার সহজে হজমও হয় না।
● একই তেলে বারবার ভাজা খাবার খেলে রক্তে চর্বির পরিমাণ বাড়তে পারে। সঙ্গে বেড়ে যায় হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি।

করণীয়
অতিরিক্ত তেল-মসলার অপকারিতা সম্পর্কে তো জানা হলো। এবার জেনে নিন আপনার করণীয়—
● অন্য কোনো অসুখ না থাকলে অতিরিক্ত তেল ও মসলা দেওয়া গুরুপাক খাবার মাঝেমধ্যে খেতে পারেন। তবে অল্প পরিমাণে।
● পেটের বিভিন্ন সমস্যা থাকলে এ ধরনের খাবার একেবারে বাদ দিতে পারলে সবচেয়ে ভালো। ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রম (আইবিএস) আক্রান্ত ব্যক্তি অতিরিক্ত তেল-মসলা খেলে সমস্যায় ভুগতে পারেন। যাঁদের আলসার রয়েছে কিংবা যাঁরা অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভোগেন, তাঁদেরও এ ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। ডায়রিয়া বা ডিসেন্ট্রি আক্রান্ত ব্যক্তি অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার খেলে সমস্যা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই ডায়রিয়া বা ডিসেন্ট্রি হলেও এমন খাবার খাওয়া উচিত নয়।
● কাউকে নিমন্ত্রণ করলে তাঁর স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা মাথায় রাখুন। নিজের খাবারের ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে। স্থূল শরীরে নিজের অশান্তি না বাড়াতে চাইলে খাবার খাওয়ার সময় সচেতনতা জরুরি।