অসহ্য খুশকি

এমন খুশকিমুক্ত ঝরঝরে চুল সবাই চায়। মডেল: শ্রাবণ্য। ছবি: অধুনা
এমন খুশকিমুক্ত ঝরঝরে চুল সবাই চায়। মডেল: শ্রাবণ্য। ছবি: অধুনা

সাদা সাদা খুশকি যখন মাথা থেকে ঝরে ঘাড়ের কাপড়ে জমে, তখন প্রত্যেকেই একধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হন। দৈনন্দিন মেলামেশা, অফিস-আদালতে কাজকর্ম, সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগদান, এমনকি প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা করা—সব ক্ষেত্রেই এই বিব্রতকর খুশকি দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। খুশকি কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়।

খুশকির কারণ

মাথার খুলির ত্বকে জীবাণুর সংক্রমণ বেশি হলে, বিশেষ করে ম্যালাসেজিয়া বা পিটাইরেসিস গ্রুপের ছত্রাকের পরিমাণ বেড়ে গেলে।

তেলগ্রন্থি (সেবাসিয়াস গ্রন্থি) থেকে ত্বকের তৈলাক্ত উপাদান বেশি পরিমাণে নিঃসৃত হলে।

অনেকে বংশগত কারণে খুশকির ঝুঁকিতে থাকেন।

খুশকি হলে এর প্রভাবে মাথায় প্রচণ্ড চুলকানি ছাড়াও চুল নিয়মিত পড়তে পারে। বিভিন্ন ধরনের সাধারণ শ্যাম্পু কিংবা তেল ব্যবহার করতে বলা হয় কিংবা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কোনো ব্যবস্থা দেওয়া হয় না। এর ফলে বিভিন্ন প্রকার সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল কিংবা ফাঙ্গাল ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

কোথায় হয়

খুশকি সাধারণত মাথার ত্বকে, মুখে, বুকে, চোখের পাপড়ি, নাকের দুই পাশে হয়ে থাকে।

চুলের খুশকি প্রতিরোধ

শ্যাম্পু ব্যবহার: যাঁদের খুশকি বেশি হয়, তাঁরা প্রতিদিন চুলে পরিমিত শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।

মাথায় স্কার্ফ ব্যবহার: বাইরে বের হলে ধুলোবালি রোধে মাথায় স্কার্ফ বা ওড়না ব্যবহার করতে পারেন।

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন: চুলের খুশকি নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন আনতে হবে। মাথার ত্বক ভালো রাখতে প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খেতে হবে। চর্বিজাতীয় খাবার খুশকি রোধে সহায়তা করে।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা: চুল খুশকিমুক্ত রাখার অন্যতম উপায় হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। চুল অপরিষ্কার থাকলেই খুশকি বেশি হয়। অনেকেই ভেজা অবস্থায় চুল বেঁধে রাখেন। এটা ঠিক নয়। চুল ভালো করে মুছে নিতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ে নিতে হবে।

চিকিৎসা

চুল পরিষ্কার রাখতে এবং চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে শ্যাম্পু ব্যবহারে এখন সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে মনে রাখতে হবে, খুশকি একটি রোগ, যা নির্দিষ্ট কিছু কারণে হয়ে থাকে। তাই রোগের চিকিৎসা করতে যেমন ওষুধের প্রয়োজন হয়, তেমনি খুশকি দূর করতেও যথাযথ ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে। এটাও মনে রাখা দরকার যে যদি খুশকির যথাযথ চিকিৎসা করানো না হয়, তবে ভবিষ্যতে জটিলতা সৃষ্টি হবে এবং এই জটিলতারও আবার অন্য ধরনের ওষুধের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।

কীভাবে কিটোকোনাজল শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন?

খুশকি দূরীকরণে চুল ধুয়ে তাতে কিটোকোনাজল শ্যাম্পু লাগিয়ে দুই-পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এরপর চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে সপ্তাহে দুবার করে দু-চারবার ব্যবহারে খুশকি কমে যাবে। যাঁদের নিয়মিত খুশকি হয়, তাঁরা এক বা দুই সপ্তাহ পরপর খুশকি প্রতিরোধক হিসেবে এই শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন, এতে তাঁরা দীর্ঘদিন খুশকিমুক্ত থাকতে পারবেন।

ডা. মাসুদা খাতুন : 
সহযোগী অধ্যাপক, চর্ম ও যৌন বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।