শিশুর শীত পোশাক

কোনো অায়োজনে যেতে এমন জ্যাকেট পরা যায়
কোনো অায়োজনে যেতে এমন জ্যাকেট পরা যায়

শীতের এই সময়টায়, বিশেষ করে রাতে ও সকালে শিশুর জন্য চাই গরম পোশাক। সোয়েটার বা জ্যাকেট ছাড়া ঘরের বাইরে গেলে শিশুর ঠান্ডা লেগে যাবে। ২ থেকে ৫ বছরের মেয়েশিশুদের জন্য চমৎকার নকশার শীত পোশাকের দেখা মিলছে বাজারে। যেখানে শিশুর আরামের সঙ্গে চলতি ধারার সমন্বয় ঘটানো হয়েছে।

শিশুদের পোশাকের দোকান শৈশবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাকিব শরীফ বলেন, ‘আমরা শুধু শিশুদের পোশাক নিয়েই কাজ করি। তাই সব সময় শিশুদের আরাম ও ফ্যাশন—দুটি বিষয়েই গুরুত্ব দিয়ে থাকি। এখন তো বিয়ের দাওয়াতসহ নানা রকম অনুষ্ঠান–আয়োজন লেগেই থাকছে। যেখানে বাবা–মায়ের সঙ্গে যাচ্ছে শিশুরাও। তাই শিশুদের শীত পোশাকেও সে আমেজটা রাখার চেষ্টা করেছি। সুন্দর নকশার একটা ফ্রকের সঙ্গে যদি শীত পোশাকটা ঠিকঠাক না মানায়, তাহলে তা ভালো দেখাবে না।’

সোয়েটারের নকশায় প্রাণীর মোটিফ। মডেল: ওয়াজিরা, পোশাক: শৈশব
সোয়েটারের নকশায় প্রাণীর মোটিফ। মডেল: ওয়াজিরা, পোশাক: শৈশব

নিত্যদিনের পোশাক

দাওয়াতের বাইরে সব সময় পরানোর জন্য শিশুর শীত পোশাক আবার আরেক রকম। কিছুটা সাদামাটা নকশা, তবে বৈচিত্র্যে ভরা রং আর কাট। এ ছাড়া যেহেতু শিশুদের ত্বক অনেক কোমল হয়ে থাকে, তাই কোনো ধরনের র্যাশ বা চুলকানি যেন না হয় এমন তন্তু ব্যবহার করার পরামর্শ ডিজাইনারদের। শিশুরা একটু রঙিন সোয়েটারই পছন্দ করে। তাই বাজারেও তাদের পোশাকে নীল, বেগুনি, গোলাপি, লাল রংকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

শিশু পোশাকে মোটিফের বৈচিত্র্য

অনেক দোকানে শীত পোশাকে বিভিন্ন মোটিফনির্ভর কাজ করা হয়েছে। সোয়েটারগুলোতে শুধু ফুল আর লতাপাতাই থাকে না, বিভিন্ন কার্টুনের চরিত্র, অ্যানিমেটেড কাজ, ডিজনি প্রিন্সেসসহ প্রজাপতি আর নক্ষত্রের ব্যবহার চোখে পড়ল।

হাতা কাটা বম্বার জ্যাকেট। মডেল: রথী
হাতা কাটা বম্বার জ্যাকেট। মডেল: রথী

কাটেও বদল

পোশাকের কাটছাঁটেও এসেছে পরিবর্তন। বাচ্চাদের সোয়েটারগুলোর ঝুলে এসেছে ভিন্নতা। আবার কিছু সোয়েটারের সামনে থেকে বুক খোলা, অনেক সোয়েটারের কোমরে রঙিন ফিতা বা বেল্টও ব্যবহার করা হয়েছে। গলার পাশে ফ্রিল পাতা বা কার্টুনের নকশা করা হয়েছে। জ্যাকেটও আছে শিশুদের জন্য। হাতাকাটা বা হাতাসহ বম্বার স্টাইলের জ্যাকেটও মিলছে শিশুদের।

সোয়েটারেও বৈচিত্র্য

শিশুদের জন্য মখমল কাপড়ের সোয়েটার বাজারে এসেছে। কোনোটার সঙ্গে থাকে হুডির মতো কান ও মাথা ঢাকার টুপি। যাতে খরগোশ বা বিড়ালের মতো কান দেওয়া আছে।

উলের সোয়েটারে রঙিন শিশু
উলের সোয়েটারে রঙিন শিশু

এ ছাড়াও উল বা মখমল কাপড়, নরম ফোমজাতীয় কাপড়ে তৈরি জ্যাকেট এসেছে, যা ভারী শীতে কাজে দেবে শিশুদের। ফতুয়া বা ফ্রক আকারের সোয়েটারও চোখে পড়ছে। এই স্টাইলটায় নতুনত্ব দেখা গেল। এ ছাড়া কার্ডিগান আকারের সোয়েটার, যার কাটিংগুলো বেশ আকর্ষণীয় ও ভিন্নধর্মী। পকেটের দিকে ফুল, পাখি বা রঙিন কাপড়ের নকশা করা। আছে উলের তৈরি সোয়েটার। অনেকেই বাচ্চাদের জন্য এই সুতায় বোনা শীত পোশাক পছন্দ করেন। ২ বছর থেকে ৬ বছরের বাচ্চাদের সাইজে সহজেই পেয়ে যাবেন উলের সোয়েটার বা স্যুট। এ ধরনের পোশাকে ফুল, লতাপাতা, বিভিন্ন প্রাণী ও কার্টুন আছে। ফ্যাশন হাউসের মতো খোলাবাজারেও নানা স্টাইলের শীত পোশাক দেখা যাচ্ছে শিশুর জন্য।

রাজধানীর নিউমার্কেট ও আশপাশের বিভিন্ন দোকানে থরে থরে সাজানো শিশুদের গরম

কাপড়। পাতলা থেকে মোটা সব ধরনই মিলবে এখানে। অনেকে পরিবার নিয়ে দেশের বাইরে যাওয়ার আগে শিশুর জন্য ফোলানো মোটা শীতের পোশাক কিনছেন এখানে।

দামদর

উলের সোয়েটার, যার দাম ৬০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, হুডি জ্যাকেটও আছে ৬৫০ থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকা, ফোমের জ্যাকেট ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে। এ ছাড়া যেকোনো উলের বা মকমলের সোয়েটার ৪০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় মধ্যে পাবেন।

যেখানে পাবেন

শিশুর শীত পোশাক পাবেন অধিকাংশ শপিং মল কিংবা ফ্যাশন হাউসেই। শৈশব, ইনফিনিটি, আড়ং, নিপুণ, মি অ্যান্ড মম, স্মার্টেক্স, কিডস ক্লাবে পেয়ে যাবেন শিশুর নানা ধরনের গরম কাপড়। বসুন্ধরা সিটি, সীমান্ত স্কয়ারসহ নিউমার্কেট, নূরজাহান মার্কেট, ঢাকা কলেজের উল্টো দিকে, মিরপুরের বিভিন্ন মার্কেট, গুলশান–২, মতিঝিল ও উত্তরায় মিলবে শিশুর শীতের পোশাক।