একটা দিন ফেসবুককে ছুটি দিই

ফেসবুক
ফেসবুক

বাংলাদেশের কোটি মানুষ এখন ফেসবুকের আওতায় অথবা ফেসবুকের ‘খপ্পরে’। শিশুরাও এর বাইরে নেই। বাইরে নেই বৃদ্ধরাও। কম আর বেশি। দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ তরুণেরা এর খপ্পরে পড়ে নিজেদের প্রায় ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছেন। মাদক গ্রহণ আর ফেসবুকিংয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই! যদি ফেসবুকিং নেশার পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে। ফেসবুকের উপকারিতা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে ‘ইহা নেশা হইলে’ প্রতিরোধে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগও ব্যর্থ হতে পারে। সামাজিক আন্দোলন ব্যতীত এর কোনো গতি নেই।

আমরা মাদক, অ্যাসিড–সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মানববন্ধনের আয়োজন করে থাকি। এখন ফেসবুকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন, সভা-সেমিনার, গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন অনিবার্য হয়ে পড়েছে। এটা মনে করার কারণ নেই, আমি ফেসবুকের বিরুদ্ধে একচেটিয়াভাবে কথা বলছি।

আমি নিজেও ফেসবুক লগ আউট করে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চাচ্ছি।

পত্রিকায় পড়লাম, ফেসবুক মাদকের সমপর্যায়ে পড়ে। তাহলে এটা আরও ভয়াবহ। মাদকাসক্ত ঘরে ঘরে নেই। তবে ফেসবুকে আসক্তদের সংখ্যা ঘরে ঘরে বেড়ে যাচ্ছে। মিনিটে মিনিটে বাড়ছে। জব্বর জিনিসই বানিয়েছেন জাকার বার্গ। ‘চাবি মাইরা’ ছেড়ে দিয়েছেন। ঘুরছে সারা পৃথিবী।

বলতে আপত্তি নেই, তরুণ মূর্খরাই এই ফেসবুকের ফাঁদে পা দিয়েছেন। আর যাঁরা মূর্খ নন, তাঁরা ফেসবুককে কাজে লাগাচ্ছেন। তাঁদের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কম। এই কমরাই দেশ-পৃথিবীর নেতৃত্ব দেবেন। মূর্খরা ‘ফেসবুক নিরাময় কেন্দ্রে’ ধুঁকে ধুঁকে মরবেন অথবা চিকিৎসায় ভালো হয়ে ফিরে আসবেন। সমাজের মূল স্রোতে। আমাদের চাওয়া, এমন নিরাময় কেন্দ্র যেন বাংলাদেশে গড়ে না ওঠে।

আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সপ্তাহে এক দিন ফেসবুকিং বন্ধ রাখব। প্রথম আলো বন্ধুসভার হাজারো সদস্য আছেন। তাঁরা যেন ফেসবুকিং কমিয়ে আনেন। একটি লাইকের জন্য রাত যেন না জাগেন।
প্রতি রোববার ফেসবুকিং বন্ধ রাখবেন বন্ধুসভার বন্ধুরা। বন্ধুসভার যাঁরা সদস্য, তাঁরা যেন এ সিদ্ধান্তটি মেনে চলেন। তাঁদের স্বার্থে ও দেশের স্বার্থ তো বটেই। একটি ক্ষুদ্র যন্ত্র যেন মহান জীবনটাকে নষ্ট করতে না পারে। কাজটি শুরুতে সহজ হবে না হয়তো। সহজ নয় বলে কি তা আমরা করব না? কঠিন বলে আত্মসমর্পণ করব একটি যন্ত্রের কাছে? কঠিনেরে যেন ভালোবাসি। সে কখনো করে না বঞ্চনা।

বন্ধরা, আসুন, কাজটি শুরু করি। নতুন পথে পা বাড়াই। হাজার মাইলের দূরত্বেও প্রথম কারও একটি পদক্ষেপ দরকার হয়। চলুন আমরা পা বাড়াই। পথের কাঁটা তুলে ফেলি। মসৃণ পথ তৈরি হোক। আমাদের এ উদ্যোগ শুরু হোক আজ থেকেই। সারা দেশে দেখবেন আমাদের দলে আরও অনেকেই শরিক হয়েছেন। আমরা যেন জীবনের অমূল্য সম্পদ ফেসবুকে না দিই। নিজের বুককে দিই। হৃদয়কে দিই।
রোববার ছুটি। ফেসবুক বন্ধ।