পায়ের যত্ন এই সময়ে

বিভিন্ন প্রয়োজনে বাইরে বের হতেই হয়। এ সময় ধুলাবালু একটু বেশি থাকে। উৎসবটাও বেশি। অনেক অভিভাবকই চান বইমেলার ধুলায় হেঁটেই বইয়ের প্রেমে পড়ুক ছেলেমেয়ে। তবে অযত্নে পা দুটি ঠিকমতো পরিষ্কার করাও হয়ে ওঠে না বাড়ি এসে। তাই বাড়ি ফিরেই মায়ের বকাবকি। কিংবা আড়চোখে মা তাকান বুড়ো ‘খুকি’র ময়লা পায়ের দিকে। এই প্রতিবেদকের মা-ও হয়তো চুপ করে তেমনটাই তাকান!
রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাব এই সময়টাতে পায়ের ত্বকে বেশ লক্ষ করা যায়। কখনো পায়ের ত্বক টানতে থাকে, কখনো আবার স্বাভাবিক মনে হয়। হাঁটাহাঁটি বেশি হলে পায়ের ত্বক খসখসে হয়ে পড়তে পারে, ফেটে যেতে পারে। আবার রাস্তার ধুলা-ময়লা-কাদায় পা একটু স্যাঁতসেঁতে হয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে ধোয়ার সুযোগ থাকে না বলে পায়ের ক্ষতি হতে পারে।

নিয়মিত পা ধুতে হবে, এতে পায়ের ত্বক মসৃণ থাকবে। ছবি: নকশা
নিয়মিত পা ধুতে হবে, এতে পায়ের ত্বক মসৃণ থাকবে। ছবি: নকশা

রোজকার যত্ন
বাড়ি ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই ভালোভাবে পা পরিষ্কার করা জরুরি। সম্ভব হলে কুসুম গরম পানিতে পা ডুবিয়ে রাখুন। পা ডোবানোর আগে লিকুইড সাবান, বডি ওয়াশার কিংবা শ্যাম্পু মিশিয়ে নিন পানিতে। ২০ মিনিট পর স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে পা পরিষ্কার করে ফেলুন। কুসুম গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখলে সহজে ময়লা পরিষ্কার করা যায়, পায়ের শুষ্কতাও কমে আসে।
এভাবে সম্ভব না হলে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে লিকুইড সাবান, বডি ওয়াশার কিংবা শ্যাম্পু মিশিয়ে ভালোভাবে ঘষে পায়ের ময়লা তুলে ফেলুন।
পেডিকিওর সেটের ব্রাশে তরল সাবান নিয়ে এর মাধ্যমে নখ পরিষ্কার করে নিতে পারেন।
নেলপালিশ থাকলে তা দুই দিন পরপর উঠিয়ে ফেলা ভালো।
রাতে ঘুমানোর আগে সব কাজ সেরে বিছানায় বসে পায়ে বেশি করে তেল বা পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে নিন। এরপর ঘুমানোর আগে আর নামবেন না। তেল আর পেট্রোলিয়াম জেলি দুটিই উপকারী। তবে তেল একটু পাতলা প্রকৃতির বলে খুব বেশিক্ষণ থাকে না। পেট্রোলিয়াম জেলিটাই বেশি সময় থাকে। সকালে পায়ের অনুভূতিটাই হবে সতেজ, বিশেষ করে গোড়ালিতে।

বাইরে গেলে
বাইরে যাওয়ার আগে পায়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। অনেকে বাইরে যাওয়ার আগে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করতে চান না, কারণ তাতে সহজেই ময়লা আটকে যায়। এ অভ্যাসটি একেবারেই ঠিক নয়। ধুলা-ময়লা সরাসরি ত্বকে না লেগে পেট্রোলিয়াম জেলির স্তরের ওপর আটকালেই বরং তা পরিষ্কার করা সহজ হয়।
রোদে বেরোনোর আগে ইচ্ছা হলে পায়ের ত্বকে সানস্ক্রিনসামগ্রী ব্যবহার করতে পারেন। আবার তা না করলেও খুব একটা ক্ষতি নেই।
সময়-সুযোগ পেলে বাইরে কোথাও পা ধুয়ে নিন। চাইলে ওয়েট টিস্যুও ব্যবহার করতে পারেন। পা ধোয়ার সুযোগ পাবেন মনে করলে এমন জুতা পরেই বেরোনো ভালো, যা ভিজলেও কোনো সমস্যা না হয়।
পায়ের ত্বক খুব সংবেদনশীল হলে পা-ঢাকা জুতা পরাই ভালো।

সপ্তাহের যত্ন
সপ্তাহে ১-২ বার ঝামা পাথরের সাহায্যে পা ঘষে পরিষ্কার করতে পারেন, এর বেশি নয়। পায়ের যত্নে সপ্তাহে একবার প্রতিষ্ঠানভিত্তিক সেবা নিতে পারেন। পায়ের যত্নের বেশ কিছু কাজ অত্যন্ত সংবেদনশীল; পেশাদার না হলে এগুলো সঠিকভাবে করা সম্ভব হয় না। অপটু হাতে কাজগুলো করতে গেলে পায়ের ত্বকের সংবেদনশীল অংশ কেটে ছেড়ে যেতে পারে। তাই সঠিক নিয়ম না জেনে বাড়িতে সবটাই করতে চাওয়া ঠিক নয়। পরে ব্যথায় কষ্ট পেতে হতে পারেন। তাই প্রয়োজন অনুভব করলে পেশাদারের সহায়তা নিন।