ঘরের দেয়ালে রং

দেয়াল রাঙানোর জন্য আছে নানা রকমের রং। ছবি: নকশা
দেয়াল রাঙানোর জন্য আছে নানা রকমের রং। ছবি: নকশা

প্রকৃতির রং বদলায়, মানুষের বদলায় মন। শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর লেখার কথা মনে পড়ল ‘কারণে অকারণে’ বদলানো প্রসঙ্গে। মানুষ পারে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে, মনের রং ধরে রাখতে কিংবা রং বদলাতে। আর পারে পছন্দের রঙে বাড়িঘর রাঙাতে।

কোথাও কোনো বয়োজ্যেষ্ঠ তাঁর পরম আদরণীয় পুত্রবধূর জন্য ঘরকে রাঙিয়ে তোলার প্রহর গোনেন, কোথাও হয়তো সদ্য ‘নিজের পায়ে দাঁড়ানো’ সন্তান বাবার একমাত্র ‘সঞ্চয়’ বাড়িটাকে রাঙিয়ে তোলার স্বপ্ন বোনেন।

আবিদা সুলতানা বলেন, ‘চার ধরনের রং আছে। প্লাস্টিক পেইন্ট, লাক্সারি সিল্ক, ইজি ক্লিন ও ব্রিথ ইজি। ইজি ক্লিন পেইন্ট একটু ম্যাট ধরনের। তাতে যেকোনো ধরনের ময়লা পড়লেও সহজেই সাবান-পানিতে পরিষ্কার করে নেওয়া যায়। ব্রিথ ইজি পেইন্ট আবার একটু চকচকে হয়। পাশাপাশি এটি সিসা ও গন্ধমুক্ত। পরিষ্কার করতে হলে অল্প ভেজা কাপড় দিয়ে হালকা করে মুছে নিলেই হবে। খুব বেশি মোছামুছি করতে গেলে এটিও খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। প্লাস্টিক পেইন্ট একটু সাধারণ ধরনের। লাক্সারি সিল্ক বেশ চকচকে ধরনের। তবে তা ধুতে গেলে সহজেই চাকচিক্য চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।’ ইজি ক্লিন ও ব্রিথ ইজি—এই দুই ধরনের নতুন পণ্যই আজকাল বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে বলে জানালেন তিনি।

চাপা সাদা বা সাদার বিভিন্ন শেড আজকাল বেশি চলছে। সাদার মধ্যে গোলাপি বা বেগুনি আভা রয়েছে, এমন হালকা রং জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। গাঢ় রংগুলোর প্রচলন একেবারেই কমে এসেছে বলে জানালেন আবিদা সুলতানা।

স্বপ্নে কালো হাত?

সাধের ঘরটা রাঙিয়ে তোলার সঠিক সময়ও জেনে রাখা ভালো, নইলে সাধের কাজটা মাটি হওয়ার ভয় থাকে। বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের রং-বিষয়ক পরামর্শক (কালার কনসালট্যান্ট) আবিদা সুলতানা বলেন, বৃষ্টির মৌসুমে আবহাওয়ায় একটা ভেজা ভাব থাকে। এ সময় বাড়িঘর রং করানো হলে রংটা সঠিক সময়ের মধ্যে শুকায় না। রঙের স্থায়িত্ব কমে যায়। দেয়াল ‘ড্যাম্প’ বা স্যাঁতসেঁতে হয়ে পড়তে পারে। দেয়ালের লবণাক্ততার ওপরেও প্রভাব পড়তে পারে, যার ফলে দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

কখন তবে স্বপ্ন বুনি?

স্বপ্ন বুনুন সারা বছর। তবে ঘরের ভেতরের কিংবা বাইরের দেয়াল স্বপ্নের রঙে রাঙাতে চাইলে নভেম্বর, ডিসেম্বর, জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিকেই বেছে নিন। এই চারটি মাস বৃষ্টি থাকে না বললেই চলে। শুষ্ক আবহাওয়া রঙের কাজের জন্য ভালো। বিশেষজ্ঞ মতে, এই চারটি মাসই রঙের কাজ করার জন্য এ দেশে সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।

বদলে ফেলা যখন

আবিদা সুলতানা বলেন, নিজের ঘর সবচেয়ে শান্তির জায়গা। সারা দিনের কাজ শেষে বাড়ি ফিরে ক্লান্তি ভুলে যাই আমরা। চাইলে নিজের ইচ্ছা ও পছন্দ অনুযায়ী দু-তিন বছর পরপর বাড়িঘরের রং বদলে ফেলা যায়। তবে বদলানোর ইচ্ছা না থাকলেও ঘরের ভেতর কিংবা বাইরে যেকোনো দিকের রং তিন-চার বছর অন্তর নতুনভাবে করে নেওয়া ভালো।