মুখোরোচক মুচমুচে

বিকেল বা সন্ধ্যায় হালকা খাবার ভালো লাগে। চটপটি বা ফুচকার মতো মুখরোচক খাবার তো বাড়িতেই তৈরি করা যায়। আর তা খুব সহজেই। রেসিপি দিয়েছেন আফরোজা নাজনীন

ছবি: খালেদ সরকার
ছবি: খালেদ সরকার

পাপড়ি চাট

উপকরণ

খামির জন্য: সুজি এক কাপ, ময়দা আধা কাপ, বেকিং সোডা আধা চা-চামচ, লবণ সিকি চা-চামচ, কুসুম গরম পানি আধা কাপ, তেল খামি মাখার জন্য ও ডুবো তেলে ভাজার জন্য।

ডাবলির মিশ্রণ: সেদ্ধ ডাবলি আধা কাপ (লবণ দিয়ে), আলু তিনটি মাঝারি আকারের, চাট মসলা এক চা-চামচ, টালা শুকনা মরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ, টালা জিরার গুঁড়া আধা চা-চামচ, টালা ধনে গুঁড়া আধা চা-চামচ, কাঁচা মরিচকুঁচি পাঁচটি, পেঁয়াজকুচি একটি, ধনেপাতাকুঁচি দুই টেবিল চামচ ও লবণ আধা চা-চামচ।

তেঁতুলের সসের জন্য: তেঁতুল ৫০ গ্রাম, ভাজা জিরার গুঁড়া পৌনে চা-চামচ, ভাজা শুকনা মরিচের গুঁড়া সিকি চা-চামচ, লবণ এক চা-চামচ, বিট লবণ সিকি চা-চামচ, চিনি দুই চা-চামচ।

দইয়ের মিশ্রণ: টক দই এক কাপ, টালা শুকনা মরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ, টালা ভাজা জিরার গুঁড়া আধা চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো।

সাজানোর জন্য: বেদানা বা আনার দানা পরিমাণমতো, ধনেপাতাকুঁচি পরিমাণমতো, ঝুরি ভাজা পরিমাণমতো, চানাচুর পরিমাণমতো, শসা-টমেটোকুঁচি পরিমাণমতো (ইচ্ছা)।

প্রণালি

একটি বাটিতে সুজি, ময়দা, লবণ, বেকিং সোডা ও তেল নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মাখিয়ে শক্ত ডো তৈরি করুন। মাখানো হলে আধা ঘণ্টা ঢেকে রেখে দিন। আলু ভালো করে সেদ্ধ করে ছিলে আধা ভাঙা করে নিন। তাতে লবণ দিয়ে সেদ্ধ ডাবলি, চাট মসলা, কাঁচা মরিচ, লবণ, পেঁয়াজ, টালা শুকনা মরিচের গুঁড়া, টালা ধনে-জিরার গুঁড়া, ধনেপাতাকুঁচি দিয়ে মিশিয়ে রাখুন। তেঁতুল এক কাপ পানিতে আধা ঘণ্টামতো ভিজিয়ে রেখে তেঁতুলের ক্বাথ বের করে নিন। তারপর তাতে সসের সব উপকরণ দিয়ে ভালোভাবে বিট করুন। এবার মেখে রাখা ডো থেকে ছয়টি বল বানিয়ে নিন। একেকটি বল থেকে রুটি বেলে নিয়ে এর থেকে নিমকির আকারে কেটে নিন। গরম তেলে নিমকিগুলো বাদামি করে ভেজে তুলুন। সব ভাজা হয়ে গেলে ঠান্ডা করে এর সঙ্গে ডাবলি-আলুর মেখে রাখা পুর দিয়ে তেঁতুলের সস, দইয়ের মিশ্রণ, ধনেপাতাকুঁচি, শসা-টমেটোকুঁচি, ঝুরি-চানাচুর ভাজা ও আনার দানা ছড়িয়ে দিয়ে পরিবেশন করুন দারুণ মজার পাপড়ি চাট।

ঢাকাইয়া ভেলপুরি

উপকরণ

ভেলপুরির জন্য: সুজি এক কাপ, ময়দা আধা কাপ, বেকিং সোডা আধা চা-চামচ, লবণ সিকি চা-চামচ, কুসুম গরম পানি আধা কাপ এবং তেল খামির তৈরি ও ডুবো তেলে ভাজার জন্য।

পুরের জন্য: সেদ্ধ ডাবলি আধা কাপ (লবণ দিয়ে), আলু মাঝারি আকারের তিনটি, চাট মসলা এক চা-চামচ, শুকনা মরিচ টেলে গুঁড়া করা আধা চা-চামচ, কাঁচা মরিচকুঁচি পাঁচটি, পেঁয়াজকুঁচি একটি, ধনেপাতাকুঁচি দুই টেবিল চামচ ও লবণ আধা চা-চামচ।

তেঁতুলের সসের জন্য: তেঁতুল ৫০ গ্রাম, ভাজা জিরার গুঁড়া পৌনে এক চা-চামচ, ভাজা শুকনা মরিচের গুঁড়া সিকি চা-চামচ, লবণ এক চা-চামচ, বিট লবণ সিকি চা-চামচ ও চিনি দুই চা-চামচ।

সাজানোর জন্য: বেদানা বা আনার দানা, ধনেপাতাকুঁচি, ঝুরি ভাজা ও শসা-টমেটোকুঁচি পরিমাণমতো।

প্রণালি

একটি বাটিতে সুজি, ময়দা, লবণ, বেকিং সোডা ও তেল নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মাখিয়ে শক্ত ডো তৈরি করুন। মাখানো হলে আধা ঘণ্টা ঢেকে রেখে দিন। আলু ভালো করে সেদ্ধ করে ছিলে আধা ভাঙা করে নিন। তাতে সেদ্ধ ডাবলি, চাট মসলা, কাঁচা মরিচ, লবণ, পেঁয়াজ, টালা শুকনা মরিচের গুঁড়া, ধনেপাতাকুঁচি দিয়ে মিশিয়ে রাখুন। তেঁতুল এক কাপ পানিতে আধা ঘণ্টার মতো ভিজিয়ে রেখে ক্বাথ বের করে নিন। তারপর তাতে সসের সব উপকরণ দিয়ে ভালোভাবে বিট করুন।

এবার মেখে রাখা ডো থেকে ছয়টি বল বানিয়ে নিন। একেকটি বল থেকে রুটি বেলে নিন। গোল কিছু নিয়ে মাঝারি আকারে কেটে নিন। এভাবে সব রুটি থেকে মাঝারি আকারের রুটি কেটে নিন। গরম তেলে ভেলপুরিগুলো একটা একটা করে দিয়ে বাদামি করে ভেজে তুলুন। সব ভাজা হয়ে গেলে ঠান্ডা করে এর ওপর ডাবলি-আলুর মেখে রাখা পুর দিয়ে তেঁতুলের সস, ধনেপাতাকুঁচি, শসা-টমেটোকুঁচি, ঝুরি ভাজা ও আনারের দানা ছড়িয়ে দিয়ে পরিবেশন করুন।

দই ফুচকা

উপকরণ

ফুচকার জন্য: সুজি এক কাপ, ময়দা আধা কাপ, বেকিং সোডা আধা চা-চামচ, তালমাখনা এক ও আধা চা-চামচ, লবণ সিকি চা-চামচ, কুসুম গরম পানি আধা কাপ, তেল ডুবো তেলে ভাজার জন্য।

পুরের জন্য: আলু তিনটি মাঝারি আকারের, কাঁচা মরিচকুঁচি পাঁচটি, পেঁয়াজকুঁচি একটি, ধনেপাতাকুঁচি দুই টেবিল চামচ, লবণ আধা চা-চামচ।

তেঁতুলের সসের জন্য: তেঁতুল ৫০ গ্রাম, ভাজা জিরার গুঁড়া পৌনে চা-চামচ, ভাজা শুকনা মরিচের গুঁড়া সিকি চা-চামচ, লবণ এক চা-চামচ, বিট লবণ সিকি চা-চামচ এবং চিনি দুই চা-চামচ।

দইয়ের মিশ্রণ: টক দই এক কাপ, টালা শুকনা মরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ, টালা ভাজা জিরার গুঁড়া আধা চা-চামচ এবং লবণ স্বাদমতো।

সাজানোর জন্য: বেদানা বা আনার দানা পরিমাণমতো এবং ধনেপাতাকুঁচি পরিমাণমতো।

প্রণালি

বাটিতে সুজি, ময়দা, লবণ, বেকিং সোডা ও তালমাখনা নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মাখিয়ে শক্ত ডো তৈরি করুন। মাখানো হলে আধা ঘণ্টা ঢেকে রেখে দিন। আলু ভালো করে সেদ্ধ করে ছিলে আধা ভাঙা করে নিন। তাতে কাঁচা মরিচ, লবণ, পেঁয়াজ ও ধনেপাতাকুঁচি দিয়ে মিশিয়ে রাখুন। তেঁতুল এক কাপ পানিতে আধা ঘণ্টার মতো ভিজিয়ে রেখে ক্বাথ বের করে নিন। তারপর তাতে সসের সব উপকরণ দিয়ে ভালোভাবে বিট করুন। এবার মেখে রাখা ডো থেকে ছয়টি বল বানিয়ে নিতে হবে। একেকটি বল থেকে রুটি বেলে গোল কিছুর সাহায্যে ছোট ছোট আকারে কেটে নিন। এভাবে সব রুটি থেকে ছোট রুটি কেটে নিন। গরম তেলে ফুচকাগুলো একটা একটা করে দিয়ে বাদামি করে ভেজে তুলুন। সব ভাজা হয়ে গেলে ঠান্ডা করে ফুচকার মাঝখানে ছিদ্র করে তাতে আলুর মেখে রাখা পুর দিয়ে টক দইয়ের মিশ্রণ, তেঁতুলের সস ও আনার দানা ছড়িয়ে দিয়ে পরিবেশন করুন।

চটপটি

উপকরণ

ডাবলি বুট এক ও আধা কাপ (পাঁচ বা ছয় ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখা), আলু দুটি মাঝারি আকারের (সেদ্ধ করে গ্রেট করা), টমেটোকুঁচি একটি, সেদ্ধ ডিমকুঁচি দুটি, শসাকুঁচি দুটি, পেঁয়াজকুঁচি দুটি মাঝারি আকারের, আস্ত জিরা তিন চা-চামচ, আস্ত শুকনা মরিচ দু-তিনটা, কাঁচা মরিচকুঁচি এক টেবিল চামচ, ধনেপাতাকুঁচি আধা কাপ, তেঁতুল ১০০ গ্রাম, হলুদ গুঁড়া আধা চা-চামচ, মরিচের গুঁড়া এক চা-চামচ, ধনে গুঁড়া আধা চা-চামচ, জিরাবাটা আধা চা-চামচ, আদা ও রসুনবাটা এক চা-চামচ, চিনি এক চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, বিট লবণ স্বাদমতো এবং তেল পরিমাণমতো।

প্রণালি

আস্ত জিরা ও আস্ত শুকনা মরিচ টেলে নিয়ে গুঁড়া করে রাখুন। এক কাপ পানিতে তেঁতুল দিয়ে হালকা সেদ্ধ করুন। তারপর তাতে চিনি, এক চিমটি লবণ ও সিকি চা-চামচ ভেজে গুঁড়া করে রাখা মসলা দিয়ে আরও পাঁচ মিনিট সেদ্ধ করুন। ঠান্ডা করে ছেঁকে নিয়ে এই সসটা আলাদা করে রাখুন। বাকি টেলে রাখা গুঁড়া মসলাটা আলাদা রেখে দিতে হবে। ভিজিয়ে রাখা বুট লবণ, তেল, মরিচের গুঁড়া, ধনে, জিরাবাটা, আদা, রসুনবাটা ও হলুদ গুঁড়া দিয়ে নরম হওয়া পর্যন্ত সেদ্ধ করুন। বেশি নরম যেন না হয় সেটা খেয়াল রাখতে হবে। বুটে আধা কাপ মতো পানি থাকতে এতে গ্রেট করে রাখা সেদ্ধ আলু, পেঁয়াজকুঁচি, কাঁচা মরিচকুঁচি, পরিমাণমতো বাকি টেলে রাখা ভাজা গুঁড়া মসলা, বিট লবণ, দুই টেবিল চামচ তেঁতুলের সস ও সেদ্ধ ডিমকুঁচির তিন ভাগের এক ভাগ দিয়ে মিশিয়ে নিন। আরও দু-তিন মিনিট রান্না করে নামিয়ে নিন। ওপরে শসাকুঁচি, ডিমকুঁচি, ধনেপাতাকুঁচি সাজিয়ে গরম-গরম পরিবেশন করুন।

ফুচকা

উপকরণ

ফুচকার জন্য সুজি এক কাপ, ময়দা আধা কাপ, বেকিং সোডা আধা চা-চামচ, তালমাখনা দেড় চা-চামচ, লবণ সিকি চা-চামচ, কুসুম গরম পানি আধা কাপ, তেল ভাজার জন্য।

পুরের জন্য: আলু তিনটি, কাঁচা মরিচকুঁচি পাঁচটি, পেঁয়াজকুঁচি একটি, ধনেপাতাকুঁচি দুই টেবিল চামচ, লবণ আধা চা-চামচ।

তেঁতুলের সসের জন্য: তেঁতুল ৫০ গ্রাম, ভাজা জিরার গুঁড়া পৌনে এক চা-চামচ, ভাজা শুকনা মরিচের গুঁড়া সিকি চা-চামচ, লবণ এক চা-চামচ, বিট লবণ সিকি চা-চামচ, চিনি দুই চা-চামচ।

প্রণালি

একটি বাটিতে সুজি, ময়দা, লবণ, বেকিং সোডা ও তালমাখনা ভালো করে মিশিয়ে কুসুম গরম পানি দিয়ে মাখিয়ে শক্ত ডো তৈরি করুন। ৩০ মিনিট ঢেকে রাখুন। আলু সেদ্ধ করে ছিলে আধা ভাঙা করে নিন। তাতে কাঁচা মরিচ, লবণ, পেঁয়াজ, ধনেপাতাকুঁচি দিয়ে মিশিয়ে রাখুন। তেঁতুল এক কাপ পানিতে আধা ঘণ্টা মতো ভিজিয়ে রেখে ক্বাথ বের করে নিন। এবার তাতে সসের সব উপকরণ মিশিয়ে নিন। এবার মেখে রাখা ডো থেকে বল বানিয়ে রুটি বেলে গোলাকার কিছুর সাহায্যে ছোট ছোট করে কেটে নিন। এভাবে সব রুটি থেকে ছোট রুটি কেটে নিন। গরম তেলে ফুচকাগুলো একটা একটা করে দিয়ে বাদামি করে ভেজে তুলুন।

সব ভাজা হয়ে গেলে ঠান্ডা করে ফুচকার মাঝখানে ছিদ্র করে তাতে মেখে রাখা আলুর পুর দিয়ে তেঁতুলের সস দিয়ে পরিবেশন করুন।